২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

চি ঠি প ত্র

-

যা জানতে চাই

গত ৭ অক্টোবর নয়া দিগন্তের ৪-এর পাতায় (মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাসুম) ‘প্রিয় নবীর আগমনে খুশির জোয়ার’ শিরোনামে নিবন্ধটি পড়ার পর নিম্নোক্ত বিষয় কটি সম্পর্কে আরো বিশদ জানার জন্য সবিনয় নিবেদন- আগামীতে নয়া দিগন্তের পাতায় লিখে দিলে আমার মতো অসংখ্য অজ্ঞ মানুষ জেনে উপকৃত হবে নিঃসন্দেহে। প্রথমত- আপনি ঈদে মিলাদুন্নবী অনুষ্ঠানকে ফরজের মর্যাদা দিয়ে এবং সাহাবা রা:, তাবে. বিশিষ্ট মুসলিম মনীষী এমনকি স্বয়ং নবীজি সা: উপস্থিতি পর্যন্ত- উপস্থাপনার পরও তাকে আবার মুস্তাহাব বলে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু তা সুন্নত এমনকি ওয়াজিব না হয়ে মুুস্তাহাব কেন? যাই হোক, সেই সময়কার অনুষ্ঠানগুলোতে যেহেতু প্রথম সারির সাহাবা রা: এবং স্বয়ং রাসূল সা:-এর উপস্থিতি বিদ্যমান, তাহলে তা অবশ্যই প্রসিদ্ধ ছ-খানা হাদিস গ্রন্থে স্থান পাওয়ার কথা। পত্রিকায় বর্ণিত সে বর্ণনাগুলো সিয়াসিত্তাহর কোন বিলদের কোন অধ্যায়ের কত নম্বর হাদিসে পাওয়া যাবে- জানাবেন। দ্বিতীয়ত- আলেমদের কাছে শুনেছি, রাসূল সা: তাঁর উম্মতকুলের খুশির জন্য বছরে দু-খানা ঈদ বা খুশি উপহার দিয়ে গেছেন। তা হলো, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা, ঈদে মিলাদুন্নবী, সরাসরি সিয়াসিত্তাহর পাতায় দেখতে চাই। এতদসঙ্গে আরো একটি বিষয়- হুজুর সা:-এর জন্ম তারিখ নিয়ে মতভেদ থাকলেও তাঁর ওফাত দিবস নিয়ে মতপার্থক্য নেই। তাহলে বিশ্বশ্রেষ্ঠ মহামানবের ওফাত দিবসেও জন্মদিবসের আনন্দ উদযাপন কোন মানবিকতায়? এ ব্যাপারে জনৈক মহোদয়ের কাছে জানতে পেরেছি, হুজুর সা: ইন্তেকাল করেননি, জীবিতই আছেন। তাই এ ঢালাও উদযাপন; আপনার উক্তিও যদি তাই হয়, অনেক আয়াত এবং হুজুর সা:-এর হাদিস বিদ্যমান থাকলেও মাত্র নি¤েœাক্ত আয়াত দু’টির ব্যাখ্যা জানতে চাই।
আয়াত- আপনাকেও মরিতে হইবে এবং তাহারাও মরিবেই (৩০)। তৎপর কিয়ামত দিবসে তোমরা স্বীয় রবের সমীপে মোকদ্দমা পেশ করিবে (৩১) সূরা জুমার-৩০/৩১ আয়াত নিঃসন্দেহে আমি (একদিন) মৃতদিগকে জীবিত করিব...। সূরা ইয়াসিন আয়াত-১২।
তৃতীয়ত- সর্বজনবিদিত যে, আল্লাহপাক ঘোষিত দরুদ সূরা আহজাব আয়াত ৫৬; শরীর পবিত্র থাকলে যখন খুশি তখন আমল করে সওয়াব পাওয়া যেতে পারলেও উল্লিখিত মিলাদ মাহফিলে অর্থাৎ দু’চারজন হলেও লোক জড়ো করতে হবে, খাবার জোগাড় করতে হবে তবারকের নামে তা কেন? পাবলিকের জন্য ডাল-খিচুড়ি হলেও ‘স্পেশাল’ খাওয়া কোন বিচারে? সওয়াব যদি সবার সমান হয়, তাহলে কাউকে পয়লা দিতে হয় কেন? রবিউল আউয়াল চাঁদে দিনে রাতে ১০-১২ বাড়িতে উদযাপন হলেও, অন্য সময় ছয় মাসেও নয় কেন? কুরআনে আয়াত না বুঝলেও শোনায় সওয়াব নির্ধারিত থাকলেও প্রচলিত মিলাদ মাহফিলে বাধ্যতামূলক উর্দু-ফারসি দুর্বোধ্য বয়ান শোনায় সওয়াব ও উপকারিতা কত মাপের? দেশের ৫০ শতাংশ নারীরাই বা এত মাপের সওয়াব থেকে বঞ্চিত কেন? গ্রামাঞ্চলে দেখা যায়, সারা জিন্দেগিতে সালাত না থাকলেও নতুন ঘর, দোকান উদ্বোধন, সিনেমা হল উদ্বোধন, (আমার এলাকায় একটি হাইস্কুলের উন্নয়নের জন্য মাসব্যাপী আনন্দ মেলা, যাত্রাগান, পুতুল নাচ ইত্যাদি কল্পে প্রথম দিনে প্যান্ডেলের ভেতরে) মিলাদ করে বরকতের শুরু। ইটভাটার ফায়ারিং ডে অর্থাৎ প্রথম আগুন দেয়ার প্রাক্কালে মিলাদ মাহফিল শেষে আগুন প্রজ্বল।
আমার এলাকায় এক বিশিষ্ট ব্যক্তির জন্মদিবস উপলক্ষে প্রতি বছর বিশেষ দিনে বাদ ফজর থেকে হাফেজ-কারি আলেম-ওলামা দিয়ে পবিত্র কুরআন খতম; তারপর মিলাদ খতম। অতঃপর ডিসি, এসপি, ইউএনও, ওসি, অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি মান্যগণ্যের উপস্থিতিতে দোয়া ও তবারক বণ্টনও শেষ। শুরু হয়ে যায় মাইকে প্রচার। মাসব্যাপী সার্কাস, যাত্রাগান ও ডানাকাটা পরীর প্রচারণা। গ্রামাঞ্চলে সমাজসেবার নাম গড়ে ওঠা সুদি কারবারের জন্য ক্লাব। সেই ক্লাব উদ্বোধনের জন্য বরকতের আশায় মিলাদ দিয়েই শুরু। আর তা সম্পাদনের জন্য কোনো মূর্খ পাবলিক নয়, অবশ্যই মসজিদের ইমাম সাহেব আগত হয়ে থাকেন। (জানা মতে, রাসূল সা:-এর ওফাতের দেশ মক্কা-মদিনায় প্রচলিত মিলাদ একেবারেই অচল কেন)
মাসুম সাহেবকে পুনরায় সবিনয় অনুরোধ- বিষয়গুলোর পরিপ্রেক্ষিতে সরাসরি পবিত্র কুরআন, সিয়াসিত্তাহর হাদিস দিয়ে সমাধান দিয়ে বাধিত করবেন।
মো: গুল হাসান মিয়া;
ধর্মদাস, ডাক-ক্যাডেট কলেজ, সিটিসি, রংপুর


কিছু কথা

দুর্নীতি : সর্বক্ষেত্রে সর্বগ্রাসী দুর্নীতিতে ভরে গেছে। কিছু কিছু মন্ত্রী এবং এমপিরা দুর্নীতি করেন বলেই সরকারি কর্মচারীরা দুর্নীতি করতে সাহস পায়। প্রত্যেক মন্ত্রী, এমপি এবং সরকারি কর্মকর্তাদের অর্থসম্পদের হিসাব প্রতি বছর জাতীয় পত্রিকার মাধ্যমে জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে। এর বিকল্প নেই। দুর্নীতিবাজদের দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে।
ঋণখেলাপি : ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আর ফেরত দিচ্ছেন না। ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে তারা লোন নিচ্ছেন। এ জন্য ব্যাংক পরিচালনা পরিষদ এবং কর্মচারীরাই দায়ী। তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে বিক্রি করে ঋণের টাকা বুঝে নিতে হবে। এদের ছাড় দেয়া চলবে না। এ দিকে, ব্যাংকগুলো দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে।
বিদেশে অর্থ পাচার : ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে লোন নিয়ে সেই টাকা বিদেশে পাচার করে সেকেন্ড হোম করছে। দেশের অর্থ বিদেশে চলে গেল। দেশ দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে। যেকোনো মূল্যে এই টাকা বিদেশ থেকে উদ্ধার করে আনতে হবে। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
কৃচ্ছ্র অবলম্বন: রাষ্ট্রের সব ক্ষেত্রেই কৃচ্ছ্র অবলম্বন করতে হবে। অপ্রয়োজনীয় ও বিলাস বহুল খাতে অর্থ বরাদ্দ বন্ধ করতে হবে। মেগা প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ধীরগতি অবলম্বন করতে হবে। সর্বদাই আয় বুঝে ব্যয় করতে হবে। তাহলেই ডলার সঙ্কট কেটে যাবে, দেশের অর্থনীতির ভিত মজবুত হবে। সরকার এসব বিষয় ভেবে দেখবে কি?
আব্দুল জলিল মোড়ল, কেশবপুর, যশোর।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল