লেভেলক্রসিং দুর্ঘটনার দায় সড়ক নাকি রেল বিভাগের
- ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০০:০০, আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২০:১১
সড়ক পরিবহন আইন যখন আশার আলো দেখাচ্ছে ঠিক তখন সড়কে প্রাণ ঝরছে। দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল লম্বা হচ্ছে। কোনো ক্ষেত্রে অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যু রোধ করা যাচ্ছে না। অরক্ষিত লেভেলক্রসিং, অপরিকল্পিত ও অনুমোদনহীন সংযোগ এবং অসচেতনতার কারণে মানুষ নিহত হচ্ছে। একটি জীবন বিচ্ছিন্ন হলে তখন অন্য জীবনেও যন্ত্রণা নেমে আসে। প্রতিনিয়ত সড়ক ও রেল দুর্ঘটনায় মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। একের পর এক পরিবার নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে। অসংখ্য পরিবার অভিভাবকহারা হচ্ছে। লেভেলক্রসিং হচ্ছে রেললাইনের উপর দিয়ে যাওয়া সড়কের সংযোগস্থল। কিছু সংযোগস্থল রক্ষিত। আর কিছু অরক্ষিত লেভেলক্রসিং, অপরিকল্পিত সংযোগ সড়ক এবং অসচেতনতার অভাবের পাশাপাশি রেলে দুর্ঘটনার পেছনে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর অব্যবস্থাপনাও দায়ী মনে করা হয়। রেলপথে মোট ক্রসিং আছে দুই হাজার ৮৫৬টি। এর মধ্যে প্রায় এক হাজার ৩৬১টির অনুমোদন নেই। আর এক হাজার ৪৯৫টি বৈধ ক্রসিংয়ের মধ্যে ৬৩২টির গেটম্যান নেই। গত দুই বছরে লেভেলক্রসিংয়ে ট্রেনের সাথে অন্য যানবাহনের ৫৬টির মতো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। অবৈধ ক্রসিংয়ের বেশির ভাগ রাস্তাই স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) ও ইউনিয়ন পরিষদের।
বিগত এক যুগে রেলওয়েতে এক লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও লেভেলক্রসিংগুলোকে নিরাপদ করার জন্য কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হয়নি। যে কারণে একটি দুর্ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে আরেকটি দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। রেলকে সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব করার লক্ষ্যে সরকার ২০১১ সালের ৪ ডিসেম্বর রেলপথ বিভাগকে একটি স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয়ে উন্নীত করে। কিন্তু রেলের বিশৃঙ্খলা, অরাজকতা, যাত্রীভোগান্তি কিংবা দুর্ঘটনা কমেনি। উল্টো রেলদুর্ঘটনা বেড়েই চলেছে। এ দিকে রেললাইনগুলো দীর্ঘ ১০০-১৫০ বছরের পুরনো। কিন্তু রেললাইনের মাঝে সড়কগুলো ক্রসিং আকারের কিভাবে মৃত্যুফাঁদ তৈরি করছে তার কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। তাহলে আজকে অব্যবস্থাপনা কোথায়, সড়কে নাকি রেলওয়েতে! প্রশ্ন হচ্ছে- আর কত মানুষের প্রাণ গেলে লেভেলক্রসিংয়ে দুর্ঘটনার মৃত্যুর মিছিল থামবে।
মাজহারুল ইসলাম শামীম,
শিক্ষার্থী, ফেনী সরকারি কলেজ
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা