২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

অবহেলাজনিত মৃত্যু ফৌজদারি অপরাধ সংক্রান্ত হাইকোর্ট নির্দেশনা আপিলে স্থগিত

অবহেলাজনিত মৃত্যু ফৌজদারি অপরাধ সংক্রান্ত হাইকোর্ট নির্দেশনা আপিলে স্থগিত - ছবি : সংগৃহীত

করোনাকালে বেসরকারি হাসপাতাল মনিটরিং, হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা নিয়ে হাইকোর্টের দেয়া ১০টি নির্দেশনার ৭টি স্থগিত করে আজ আদেশ দিয়েছে আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট।

এরমধ্যে অবহেলাজনিত মৃত্যু ‘ফৌজদারি অপরাধ’ হিসেবে দেয়া নির্দেশনাও রয়েছে।

আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান এ আদেশ দেন। হাইকোর্টে সোমবার দেয়া আদেশ স্থগিত চেয়ে মঙ্গলবার আবেদন করেছিল রাষ্ট্রপক্ষ।

রিটের পক্ষে অন্যতম আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বাসস’কে বলেন, করোনায় চিকিৎসা সংক্রান্ত গতকাল হাইকোর্টের দেয়া নির্দেশনাগুলোর মধ্যে সাতটি নির্দেশনা স্থগিত করেছে। বাকিগুলো বহাল রেখেছে আপিল আদালত।

পৃথক রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল এই নির্দেশনা দেন। এ আদালতের নির্দেশনা ও অভিমত সমূহ ছিল :

১। চিকিৎসা বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জারি করা নির্দেশনাগুলো যথাযথভাবে পালিত হচ্ছে কিনা, এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন আগামী ৩০ জুনের আগে আদালতে দাখিল করতে হবে।

২। উপরোক্ত নির্দেশনা পালনে ব্যর্থ ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত কোনো ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কিনা, প্রতিবেদনে তা উল্লেখ করতে হবে।

৩। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ২৪ মে জারি করা নির্দেশনা অনুসারে ঐ তারিখের পর ৫০ শয্যার বেশি বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ১৬ জুন পর্যন্ত কতজন কোভিড-১৯ এবং নন-কোভিড রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে সে সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। সঙ্গে ৫০ শয্যার বেশি বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের একটি তালিকা দিতে হবে।

৪। বর্তমান প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক যথাযথভাবে প্রতিপালন করছে কিনা সে বিষয়ে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের কর্তৃপক্ষকে ১৫ দিন পরপর একটি প্রতিবেদন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ওইসব প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ১৫ দিন পরপর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে অত্র আদালতে প্রতিবেদন পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে

৫। বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে বিশেষত ঢাকা মহানগর ও জেলা, চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলাসহ বিভাগীয় শহরের বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে যাতে কোভিড ও নন-কোভিড সব রোগীকে পরিপূর্ণ চিকিৎসা সেবা দেয়া হয় সে বিষয়ে সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের জন্য একটি মনিটরিং সেল গঠনের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

৬। কোনো সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতালে গুরুতর অসুস্থ কোনো রোগীকে চিকিৎসা সেবা দিতে অনীহা দেখালে এবং এতে করে ওই রোগীর মৃত্যু ঘটলে ‘তা অবহেলাজনিত মৃত্যু’ হিসাবে বিবেচিত অর্থাৎ ‘ফৌজদারি অপরাধ’ হিসাবে বিবেচিত হবে। দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার নির্দেশনা যথাযথভাবে দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশ দেয়া হয়।

৭। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত সরকারি হাসপাতালে আইসিইউ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমকে অধিকতর জবাবদিহিমূলক ও বিস্তৃত করতে হবে। ভুক্তভোগীরা যাতে এ সেবা দ্রুত ও সহজে পেতে পারেন তা নিশ্চিত করতে হবে। কোন হাসপাতালে আইসিইউতে কতজন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে এবং কতটি আইসিইউ শয্যা কী অবস্থায় আছে তার আপডেট প্রতিদিনের প্রচারিত স্বাস্থ্য বুলেটিন এবং অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ ও প্রচারের ব্যবস্থা নিতে হবে। আইসিইউ ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিং সেলে ভুক্তভোগীরা যাতে সহজেই যোগাযোগ করতে পারে সেজন্য পৃথকভাবে ‘আইসিইউ হটলাইন’ নামে পৃথক হটলাইন চালু এবং হটলাইন নম্বরগুলো প্রতিদিন বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিশেষত টেলিভিশন মাধ্যমে প্রচারের ব্যবস্থা নিতে হবে।

৮। আইসিইউ-এ চিকিৎসাধীন কোভিড-১৯ রোগী চিকিৎসার ক্ষেত্রে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে মাত্রাতিরিক্ত বা অযৌক্তিক ফি আদায় না করতে পারে সে বিষয়ে মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।

৯। অক্সিজেন সিলিন্ডারের খুচরা মূল্য এবং রিফিলিংয়ের মূল্য নির্ধারণ করে দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া যাচ্ছে। খুচরা বিক্রেতাদের সিলিন্ডারের নির্ধারিত মূল্য প্রতিষ্ঠান বা দোকানে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে। কৃত্রিম সংকট রোধে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র এবং রোগীর পরিচয়পত্র ছাড়া অক্সিজেন সিলিন্ডারের খুচরা বিক্রয় বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করতে পারে। অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ ও বিক্রয় ব্যবস্থা মনিটরিং জোরদার করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

১০। দেশে বিদ্যমান সামগ্রিক পরিস্থিতি অর্থাৎ বর্তমানে দেশে বিরাজমান করোনা পরিস্থিতি একটি ‘দুর্যোগে’ বিবেচনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নেয়া কার্যক্রমের পাশাপাশি সরকার ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট-২০১২ এর ধারা-১৪ অনুসারে ‘ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স কো-অর্ডিনেশন গ্রুপ’ এর কার্যক্রমকে সক্রিয় করার বিষয়টি বিবেচনায় নিতে পারে। কমিটি কার্যকর হলে তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে উপরোক্ত আইনের ধারা-২৬ অনুযায়ী বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিক রিকুইজিশন করা যেতে পারে বলে অভিমত দেন আদালত।

আইনজীবী মনজিল মোরশেদ জানান, এর মধ্যে চিকিৎসা বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জারি করা নির্দেশনা পালন বিষয়ে ৩০ জুনের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়া, অক্সিজেন সিলিন্ডার বিষয়ে দেয়া নির্দেশনাসহ তিনটি হাইকোর্ট নির্দেশনা বহাল আছে।

আদালতে ভার্চুয়ালি রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ, আইনজীবী ইয়াদিয়া জামান, আইনজীবী এ এম জামিউল হক, মো. নাজমুল হুদা, মোহাম্মাদ মেহেদী হাসান এবং ব্যারিস্টার এ কে এম এহসানুর রহমান।

সূত্র : বাসস


আরো সংবাদ



premium cement
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের সাথে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ দোহারে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু নিখোঁজের ৮ দিন পর পুকুর থেকে বৃদ্ধার ভাসমান লাশ উদ্ধার দেশে প্রথমবার পুরানো ল্যাপটপে ৫০ দিনের রিপ্লেসমেন্ট গ্যারান্টি মুন্সীগঞ্জে বিনামূল্যে চোখের চিকিৎসা ও লেন্স সংযোজন সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা সিরিয়ার পাশে থাকবে তুরস্ক : পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফিদান শেখ পরিবারের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের তদন্ত নিয়ে যা জানা যাচ্ছে নড়াইলে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১ রাহাত ফতেহ আলি খানের সম্মানে নৈশভোজের আয়োজন পাকিস্তানের হাইকমিশনারের চাঁদপুরে থেমে থাকা জাহাজ থেকে ৫ জনের লাশ উদ্ধার

সকল