আন্দোলনের নামে জনদুর্ভোগ সৃষ্টির চেষ্টা চলছে
- ঢাবি প্রতিনিধি
- ১২ জুলাই ২০২৪, ০০:০৫
আদালতের চূড়ান্ত রায় দেয়া পর্যন্ত অপেক্ষা না করে বর্তমানে তথাকথিত ছাত্র আন্দোলনের নামে প্রকৃতপক্ষে সাধারণ জনগণের জীবনযাত্রা ব্যাহত করার চেষ্টা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসাইন। গতকাল দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, রাস্তা ব্লক করে আন্দোলন কোনোমতেই যৌক্তিক পদক্ষেপ নয়। এ আন্দোলনের কারণে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের পড়াশোনায় বিঘœ ঘটছে। হাসপাতালে রোগীদের যাতায়াত সম্ভব হচ্ছে না। জরুরি রাষ্ট্রীয় সম্পদ যেমন তেল, গ্যাস, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য পরিবহন দুরূহ হয়ে উঠছে। কর্মজীবী-শ্রমজীবী মানুষের জীবনযাত্রা অচল হওয়াসহ জনসাধারণকে বিভিন্ন বিপাকে পড়তে হচ্ছে। তিনি বলেন, ২০১৮ সালে কোটা বাতিলে পরিপত্র ঘোষণা করে সরকার। এ পরিপত্র বাতিলে মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের করা রিটে হাইকোর্ট কোটা পুনর্বহালের রায় দেয়। মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ ৫৬ কোটা পুনর্বহালে রায় দেয় উচ্চ আদালত। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছে সরকার পক্ষ। বর্তমানে সেটি বিচারাধীন রয়েছে। এটি যখন আদালতের গণ্ডিতে প্রবেশ করেছে তখন তার সমাধান আইনের কাঠামোতেই হবে। এজন্য শিক্ষার্থীদের আগামী শুনানি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। আগামী শুনানিতে, যুগোপযোগী, অন্তর্ভুক্তিমূলক রায় আসবে বলে আশা করছি।
তিনি আরো বলেন, শিক্ষার্থীরা বলছে আমাদের দাবি নির্বাহী বিভাগের প্রতি। তবে তাদের জানা থাকা দরকার দেশের আইন, বিচার ও নির্বাহী বিভাগের এ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পার্থক্য রয়েছে । রাষ্ট্রব্যবস্থার পৃথক তিনটি কাঠামো আইন, বিচার ও নির্বাহী বিভাগ। প্রতিটি বিভাগ পৃথক ও স্বাধীনভাবে কাজ করে। একটি অন্যটির ওপর হস্তপে করে না। কোটা বাতিলের নির্বাহী আদেশ যেহেতু বিচার বিভাগ থেকে বাতিল করা হয়েছে, সেহেতু আদালতে এটির কার্যক্রম শেষ হবার পরই কেবল আইন ও নির্বাহী বিভাগ নতুন করে নিজেদের সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায় না আসা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সমীচীন নয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।
কোটাপ্রথার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা একদফা দাবি উল্লেখ করে জানিয়েছেন, সরকারি চাকরির সব গ্রেডে শুধু ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী, প্রতিবন্ধীদের জন্য ৫ শতাংশ কোটা বহাল রেখে অন্যসব কোটা বাতিল করতে হবে। সাংবাদিকদের করা ‘ছাত্রলীগ কোটা সংস্কার কতটুকু চায়’ প্রশ্নে সাদ্দাম হোসাইন বলেন, ছাত্রলীগ এখন পর্যন্ত কতটুকু কোটা সংস্কার করা প্রয়োজন সেটি নিয়ে ভাবেনি। তবে শুধু ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও প্রতিবন্ধী নয়, নারীদের জন্য যে ১০ শতাংশ রয়েছে সেটা বহাল রাখতে হবে। কেননা বাংলাদেশে সরকারি চাকরি বা প্রশাসনে এখনো নারীর অংশগ্রহণের হার ৩০ শতাংশেরও নিচে। যেখানে তাদের অংশগ্রহণের হার হওয়া ৫০ শতাংশ উচিত ছিল। ছাত্রলীগ মনে করে, নারী কোটা সম্পূর্ণরূপে বাদ দিলে তাদের অংশগ্রহণের হার আরো কমে যেতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, কোটা আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের আবেগকে কাজে লাগিয়ে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের পাঁয়তারা করছে একদল কুচক্রী গোষ্ঠী। শিক্ষার্থীদের সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে। শিক্ষার্থীরা যেন আন্দোলন করে জনদুর্ভোগ না বাড়ায়। সেই সাথে রায় আসার আগ পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত রাখার আহ্বান জানান তিনি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা