১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
চকরিয়ায় র‌্যাবের অভিযান

১০টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র গোলাবারুদসহ ৪ সন্ত্রাসী গ্রেফতার

-

কক্সবাজারের চকরিয়া চিংড়িঘের এলাকায় অভিযান চালিয়ে চিংড়িঘের দখল, অপহরণসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অন্যতম মূল হোতাসহ চার সন্ত্রাসীকে ১০টি দেশীয় তৈরি অস্ত্রসহ গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১৫।
গত সোমবার রাতে চকরিয়া উপজেলার চিংড়িঘের এলাকা কোরালখালীতে এই অভিযান চালানো হয়। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে কক্সবাজার র‌্যাব কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেসব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান র‌্যাব সদর দফতরের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মোহাম্মদ আরাফাত।
তিনি জানান, সাম্প্রতিক সময়ে কক্সবাজারের চকরিয়ার বিলুপ্তপ্রায় সুন্দরবন তথা চিংড়ি জোনে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের তাণ্ডব ও লুটপাটের কয়েকটি ঘটনা ঘটে। গত ১৯ জুন রাতে চিরিঙ্গা ইউনিয়নের চরণদ্বীপ মৌজার গোলদিয়ায় ১০ একরবিশিষ্ট সাতটি চিংড়িঘেরে হানা দেয় একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল। এ সময় তারা অন্তত শতাধিক ফাঁকাগুলি ছুড়ে এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করে। অস্ত্রের মুখে ঘের কর্মচারীদের জিম্মি ও হাত-পা বেঁধে ফেলে করা হয় মারধর ও বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন। এরপর একে একে ঘেরগুলো দখলে নেয় সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে সশস্ত্র সন্ত্রাসী ও ডাকাত দলকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে ওই এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা করে র‌্যাব।

এরই ধারাবাহিকতায় গত সোমবার রাতে র‌্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১৫ এর একটি আভিযানিক দল কক্সবাজারের চকরিয়া থানার কোরালখালী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী দলের প্রধান বেলাল হোসেনসহ (৪৫) কামাল আহম্মেদ (৪২) ও আব্দুল মালেককে (৩২) গ্রেফতার করে। তারা তিনজনেই ওই এলাকার আকবর আহমেদের ছেলে। এছাড়া পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে তাদের সহযোগী মৃত জহির আহমেদের ছেলে নুরুল আমিনকেও (৩৫) গ্রেফতার করে র‌্যাব।
পরে তাদের আস্তানা থেকে উদ্ধার করা হয় ১০টি দেশীয় তৈরি আগ্নেয়াস্ত্র, ১২ বোরের ৪০ রাউন্ড, ৭.৬২ মিলিমিটার ১০ রাউন্ড এবং ৭.৬৫ মিলিমিটার ২ রাউন্ড গুলি।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা ডাকাতি, চিংড়িঘের দখল ও বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য প্রদান করে।
র‌্যাব কর্মকর্তা জানান, গ্রেফতারকৃতরা একটি সঙ্ঘবদ্ধ ডাকাত চক্র। এর মধ্যে বেলাল, কামাল ও মালেক আপন তিন ভাই। তারা অস্ত্রধারী ডাকাতদের নিয়ে ‘বেলাল বাহিনী’ গড়ে তুলে মাছের ঘের দখল, লুটতরাজ, অপহরণসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছিল। এই বাহিনীর সশস্ত্র ডাকাত সংখ্যা ১৮ থেকে ২০ জন। গ্রেফতারকৃতরা দীর্ঘদিন যাবৎ কক্সবাজারের চকরিয়াসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, জমি দখল, চিংড়িঘের দখল, লবণের মাঠ ও আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। গ্রেফতারকৃতরা দেশী ও বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্রসহ অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র দ্বারা সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখাত এবং এলাকায় ত্রাশ সৃষ্টি করতো।

জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, গ্রেফতারকৃতরা আধিপত্য বিস্তার ও এলাকায় ত্রাস সৃষ্টির লক্ষ্যে ভাড়া করে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের নিয়ে তাদের দলের শক্তি বৃদ্ধি করে। গ্রেফতারকৃতরা মৌসুমের পর মৌসুম মাছের ঘের মালিকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করতো। ঘের মালিকরা চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে গ্রেফতারকৃত বেলালের নেতৃত্বে ডাকাতি করে নিয়ে যেতো ঘেরের মাছ ও মাছ চাষের নানা উপকরণ। এছাড়াও মাছের ঘের তাদের দখলে নিয়ে নিতো এবং কর্মচারীদের মারধর করে তাড়িয়ে দিতো। এমনকি ঘের মালিক ও কর্মচারীদের অপহরণ করেও নিয়ে যেত এবং মুক্তিপণ আদায় করতো। গ্রেফতারকৃতরা মহেশখালীসহ কক্সবাজারের অন্যান্য এলাকা এবং পার্শ্ববর্তী জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ভাড়া করে চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও সশস্ত্র সন্ত্রাসীও ডাকাত দলের সদস্যদের সে চকরিয়াতে নিয়ে আসত। বিভিন্ন অপরাধ সংঘটিত করার উদ্দেশ্যে তারা সবসময় সশস্ত্র অবস্থায় প্রস্তুত থাকত। গ্রেফতারকৃত বেলালের নেতৃত্বে মাছের ঘের ও লবণের মাঠ দখলকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ সৃষ্টি, গুলি বর্ষণ, মারামারি, ডাকাতি, লুটপাট ও চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধে সরাসরি অংশগ্রহণ করতো। বিভিন্ন অপরাধ ও মাছের ঘের দখলের উদ্দেশ্যে তারা বিভিন্ন মাধ্যম হতে অবৈধ অস্ত্র-গোলাবারুদ ক্রয় এবং প্রয়োজন অনুযায়ী এসব অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার করতো এবং কার্যশেষে নিজেদের হেফাজতে মজুদ করে রাখত বলে জানা যায়।
গ্রেফতারকৃত বেলালের বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় দু’টি হত্যা ও একটি বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলাসহ বিভিন্ন অপরাধে মোট ৯টি মামলা, কামালের বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় একটি পুলিশ এ্যাসল্ট ও একটি অপহরণসহ মোট ছয়টি মামলা, মালেকের বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় তিনটি মামলা এবং নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় মারামারির একটির মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।


আরো সংবাদ



premium cement
র‍্যাবে আয়নাঘর ছিল, স্বীকার করলেন ডিজি আবারো গাজায় অবিলম্বে নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাশ জাতিসঙ্ঘের ডিএসইতে মূল্যসূচক বাড়ল ১৪.৪৮ পয়েন্ট সিরিয়ায় বাশার সরকারের পতনে ইরানি মুদ্রার মান রেকর্ড তলানিতে নারায়ণগঞ্জে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে কলেজেছাত্র আহত তারেক রহমান কবে ফিরবেন, জানালেন মির্জা ফখরুল কালিয়াকৈরে ছুরিকাঘাতে যুবককে হত্যা ৫ আগস্টের পর চাঁদাবাজি-ছিনতাইয়ে র‍্যাবের ১৬ সদস্য আটক : ডিজি মিয়ানমারে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী শহর থেকে শত শত সৈন্যসহ জেনারেল আটক শনিবার থেকে শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা হবে’

সকল