১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

সুন্দরবনের মধুর জিআই সনদ হাতিয়ে নিয়েছে ভারত : ড. দেবপ্রিয়

-

সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের দায়িত্বহীনতা বা উদাসীনতার কারণে ভারত এককভাবে সুন্দরবনের মধুর জিআই সনদ হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেছেন, সুন্দরবনের আয়তন ও মধু উৎপাদন সবই বাংলাদেশ অংশে বেশি থাকা সত্ত্বেও নিজেদের পণ্য হিসেবে মধুর আন্তর্জাতিক ভৌগোলিক নির্দেশক সনদ বা জিআই সনদ পায়নি বাংলাদেশ।
গতকাল বুধবার রাজধানীর সিপিডি কার্যালয়ে ‘সুন্দরবনের মধু এখন ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য’ শীর্ষক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন সংস্থাটির সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
দেবপ্রিয় বলেন, ভারতে যখন এটির ঘোষণা হয়েছে তখন আমাদের সময় ছিল আপত্তি দেয়ার, কিন্তু আমরা তা দিতে ব্যর্থ হয়েছি । জামদানি শাড়ির সময়ও একই ঘটনা ঘটে। এটার দায় দায়িত্ব কার? দেশে অনেক সমস্যা আছে, তাই এই সমস্যা স্থান পায়নি। এর আরো একটা কারণ আছে সেটা হলো, যারা মধু উৎপাদন করেন তারা দুর্বল। তাদের কণ্ঠও দুর্বল তাই, এগুলো স্থান পায় না। আমাদের প্রশাসনেও দক্ষ মানুষ খুবই কম। বিদেশে যারা বৃত্তি নিয়ে পড়ালেখা করছে তারা অধিকাংশই আমলা কর্মচারী, কিন্তু বাস্তবে এই শিক্ষা কতটুকু কাজে লাগছে? প্রশ্ন রাখেন তিনি।
ভারতের এককভাবে মধুর জিআই সনদ নেয়া প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, এটাকে নজরদারি করা হয় না। প্রশাসন বা আইন মন্ত্রণালয় কখনো এটা নিয়ে আলোচনা করেনি। তারা এসব বিষয় নিয়ে কখনো আলোচনা করেছেন কেউ বলতে পারবে না। তারা কখনো টাঙ্গাইল শাড়ি ও সুন্দরবনের মধু নিয়ে আলোচনা করেনি। কারণ এরা পিছিয়ে পড়া মানুষের অংশ। শিল্প মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিও বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করে না। তারা এ বিষয়ে উদাসীন।
তিনি আরো বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ও এটা নিয়ে উদ্যোগ নেয়নি। ব্যবসায়ী সমিতিও এটা নিয়ে আলোচনা করেনি। ব্যবসায়ীরা শুধু দাবি করছে, কালো টাকা সাদা করতে হবে, মধুর জিআই সনদ তাদের কাছে বড় সমস্যা নয়। জিআই সনদ না হলে পণ্যের বাণিজ্যক দাম কিভাবে হবে? এটা অজানা, সবার ভূমিকা নিতে হবে যাতে করে মধুর জিআইটা সামিট লেভেলে নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে।

বাংলাদেশে মধু বেশি আহরণ হলেও হাতছাড়া হয়েছে জিআই সনদ। এ বিষয়ের অবতারণা করে সিপিডির আরেক সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, সিপিডি মনে করে মেধাস্বত্ব বিষয়ের বাণিজ্যক ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব আছে যার মাধ্যমে প্রান্তিক মানুষের উপকারে আসে। জিআই সার্টিফিকেশন পেলাম কিন্তু পরবর্তী ফলোআপ করলাম না তা হলে এটার সুফল মিলবে না। ফলোআপ না করলে বাণিজ্যিক সম্ভাব্য ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া যাবে না। সুন্দরবনের মধু নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। দ্বিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে এটা সমাধান করতে হবে। উইন উইনভাবে এটাকে মার্কেটিং করতে পারি। কারণ এটা উভয় দেশেই আছে। ভারতের সঙ্গে জিআই ইস্যু নিয়ে সমঝোতা দরকার। এ রকম নানা ধরনের সাংঘর্ষিক ইস্যু সামনে আসতে পারে এটা নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে।
ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে নিবন্ধনের বিষয়টি অবিলম্বে বাতিলের পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি দাবিও জানিয়েছেন বিশিষ্টজনরা। ব্রিফিং সঞ্চালনা করেন প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।
ব্রিফিংয়ে বলা হয়, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনের মোট আয়তন ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার। তিন হাজার ৪৮৩ বর্গকিলোমিটার পড়েছে ভারতের ২৪ পরগনায়। অন্য দিকে, বাংলাদেশের সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট অংশে রয়েছে মোট আয়তনের ৬৬ ভাগ। এ বন থেকে প্রতি বছর মধু আহরণ হয় ৩০০ টন। ভারতে গত সাত বছরে গড়ে মধু সংগ্রহের পরিমাণ ১৫৭ টন। মধু আহরণ ও সুন্দরবনের অধিকাংশ জায়গা বাংলাদেশে থাকার পরেও পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশ।

 

 

 


আরো সংবাদ



premium cement
কুষ্টিয়ায় ট্রেন থেকে সাড়ে ৬ কোটি টাকার মাদকদ্রব্য উদ্ধার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতকে কাঠাল গাছে ঝুলিয়ে মেরে ফেলার হুমকি ইউপি চেয়ারম্যানের সাবেক এমপি ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নদভী আটক মহাদেবপুরে রাস্তার পাশে থেকে যুবকের জবাই করা লাশ উদ্ধার মহাদেবপুরে রাস্তার পাশে থেকে যুবকের জবাই করা লাশ উদ্ধার শ্রমিকদের অবহেলিত রেখে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন সম্ভব নয় : সেলিম উদ্দিন মহাদেবপুরে যুবকের লাশ উদ্ধার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম মুখ্য সংগঠকসহ ৩ নেতাকে মারধর সিরিয়ায় ইসরাইলের অবৈধ আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ ১২ বছর পর দামেস্কে আবার কার্যক্রম শুরু করল তুর্কি দূতাবাস দেশের মানুষকে নিরাপত্তা দেয়ার জন্য আমরাই যথেষ্ট : আসাদুজ্জামান রিপন

সকল