১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

১১ মাসে সংশোধিত রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রাও অর্জন করতে পারেনি এনবিআর

-

- লক্ষ্যমাত্রা ২৮.৩৩ শতাংশ
- আদায়ে প্রবৃদ্ধি ১৩.৮৪ শতাংশ

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ১১ মাসে মূল লক্ষ্যমাত্রা তো দূরের কথা, সংশোধিত বাজেটের হ্রাসকৃত লক্ষ্যমাত্রাও অর্জন করতে পারেনি। এ সময় ১৩ দশমিক ৮৪ শতাংশ রাজস্ব প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে এনবিআর। পুরো অর্থবছরের মূল বাজেটে সাড়ে ৩৪ শতাংশ রাজস্ব বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে এই আদায় অর্থবছরে বড় ধরনের রাজস্ব ঘাটতি সৃষ্টি করতে পারে। রাজস্ব আদায়ের প্রবণতা দেখে ঘোষিত বাজেটে লক্ষ্যমাত্রা সংশোধন করে সোয়া ২৮ শতাংশে নামিয়ে আনে এনবিআর। এই সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায়ও অর্থবছর শেষে এবার বড় অঙ্কের রাজস্ব ঘাটতি সৃষ্টি হতে পারে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সূত্র থেকে জানা গেছে, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত ১১ মাসে তিন লাখ ২১ হাজার ৫১০ কোটি ৯৫ লাখ টাকা রাজস্ব আহরণ হয়েছে। অর্থবছরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে শেষ মাসে সাড়ে ৮৮ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করতে হবে। সর্বশেষ মে মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩২ হাজার ১৩৩ কোটি টাকা। ফলে শেষ পর্যন্ত এনবিআর রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারবে বলে মনে হয় না। এতে নতুন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে রাজস্ব আদায়ে যে চার লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে তা আদায়ের জন্য বেশি হারে রাজস্ব আদায়ের চাপ সৃষ্টি হবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্র অনুসারে, এনবিআর নিয়ন্ত্রিত কর খাতে সমাপ্তপ্রায় অর্থবছরের মূল বাজেটে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়। চলতি অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে করা হয় চার লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ১১ মাসে রাজস্ব আদায়ের জন্য সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয় তিন লাখ ২৫ হাজার ৭৪০ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। আগের অর্থবছরের (২০২২-২৩) একই সময়ে অর্থাৎ জুলাই থেকে মে পর্যন্ত ১১ মাসে আদায় হয়েছিল দুই লাখ ৮২ হাজার ৪১৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
বিবেচ্য ১১ মাসের রাজস্ব আহরণের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে এগিয়ে আছে আয়কর। তবে আমদানি-রফতানি শুল্ক ও স্থানীয় পর্যায়ে মূসক আহরণ পিছিয়ে আছে। তথ্য অনুযায়ী, আয়কর ও ভ্রমণ কর আদায় হয়েছে এক লাখ পাঁচ হাজার ৫৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা; লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৯২ হাজার ৬২৮ কোটি ৯১ লাখ টাকা। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আদায় হয়েছে ১২ হাজার ৪২৫ কোটি ৪১ লাখ টাকা। আর আগের বছরের চেয়ে বেশি আদায় হয়েছে ১৮ দশমিক ১০ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে অগ্রিম আয়কর আদায়ের একটি বড় ভূমিকা রয়েছে।
বিবেচ্য সময়ে স্থানীয় পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) আদায় হয়েছে এক লাখ ২৫ হাজার ৩৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এ ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক লাখ ৩২ হাজার ৭৫৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা। মূসক লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম আদায় হয়েছে সাত হাজার ৭১৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা। তবে আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ বেশি আদায় হয়েছে।
আমদানি ও রফতানি পর্যায়ে শুল্ক আদায় হয়েছে ৯১ হাজার ৪১৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮ হাজার ৯৩৭ কোটি ১১ লাখ টাকা কম। এ খাতে লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক লাখ ৩৫৫ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। তবে আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৯ দশমিক ২৯ শতাংশ বেশি আদায় হয়েছে।
উল্লেখ্য, এবার চলতি মূল্যে রাজস্ব আদায়ে যে প্রবৃদ্ধি অর্জন হয়েছে তা স্থির মূল্যে রূপান্তর করার পর জিডিপির সাথে অনুপাত করা হলে রাজস্ব আদায় আগের বারের চেয়ে কম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement