খুলনায় বিদ্যুতের ২৫টি উপকেন্দ্র স্থাপনসহ ক্রয় কমিটিতে ১৮ প্রস্তাব অনুমোদন
- বিশেষ সংবাদদাতা
- ১৬ মে ২০২৪, ০০:০০
বৈদ্যুতিক বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন এবং ক্ষমতা বাড়াতে ৬০৮ কোটি টাকা ব্যয়ে খুলনা বিভাগের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের ২৫টি নতুন উপকেন্দ্র স্থাপনসহ ১৯টি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। অন্য দিকে ১১০ বিলিয়ন রফতানি আয়ের লক্ষ্য ঠিক করে ২০২৪-২৭ বছরের জন্য রফতানি নীতিমালা অনুমোদন করা হয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে।
গতকাল বুধবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এই দুই কমিটি বৈঠকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মো: মাহমুদুল হোসাইন খান সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বাপবিবো)-এর বৈদ্যুতিক বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন এবং ক্ষমতাবর্ধন (খুলনা বিভাগ) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় পাঁচটি পৃথক প্রস্তাবে পাঁচটি লটে ২৫টি নতুন উপকেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সব ক’টি উপকেন্দ্রই যৌথভাবে নির্মাণ করবে টিএসটিএল ও ইইএল।
তিনি জানান, প্রকল্পের প্যাকেজ নং কেডি-ডব্লিউ-১-এর আওতায় মেহেরপুরে নতুন পাঁচটি উপকেন্দ্র নির্মাণের পূর্ত কাজে ব্যয় হবে ১৩৩ কোটি ৩৮ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। প্যাকেজ নং কেডি-ডব্লিউ-২-এর আওতায় কুষ্টিয়ায় নতুন পাঁচটি উপকেন্দ্র নির্মাণের পূর্ত কাজে ব্যয় হবে ১৩৩ কোটি ৩৮ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। প্যাকেজ নং কেডি-ডব্লিউ-৩-এর আওতায় যশোরে নতুন ৫টি উপকেন্দ্র নির্মাণের পূর্তকাজে ব্যয় হবে ১১৩ কোটি ৯৯ লাখ ৬১ হাজার টাকা। প্যাকেজ নং কেডি-ডব্লিউ-৪-এর আওতায় ঝিনাইদহে নতুন পাঁচটি উপকেন্দ্র নির্মাণের পূর্তকাজে ব্যয় হবে ১১৩ কোটি ৯৯ লাখ ৬১ হাজার টাকা এবং প্যাকেজ নং কেডি-ডব্লিউ-৫-এর আওতায় খুলনায় নতুন পাঁচটি উপকেন্দ্র নির্মাণের পূর্তকাজে ব্যয় হবে ১১৩ কোটি ৯৯ লাখ ৬১ হাজার ৯৮৮ টাকা।
সমন্বয় ও সংস্কার সচিব জানান, বৈঠকে রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে কানাডা, কাতার, সৌদি আরব ও কাফকো থেকে সার কেনার পাঁচটি পৃথক প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে কানাডার কানাডিয়ান কমার্শিয়াল করপোরেশন থেকে ৪০ হাজার টন এমওপি সার আমদানিতে ব্যয় হবে ১২৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
সৗদি আরবের মা’এডেন থেকে ৪০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানিতে ব্যয় হবে ২২৮ কোটি ৩৬ লাখ টাকা।
কাতারের কাতার কেমিক্যাল অ্যান্ড পেট্রোকেমিক্যাল মার্কেটিং অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (মুনতাজাত) থেকে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার (অপশনাল) ইউরিয়া সার আমদানিতে ব্যয় হবে ৯২ কোটি ২৯ লাখ ১১ হাজার টাকা।
সৌদি আরবের সাবিক এগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার (অপশনাল) ইউরিয়া সার আমদানিতে ব্যয় হবে ৯১ কোটি ১৩ লাখ ৬১ হাজার টাকা। প্রতি টন সারের দাম পড়বে ২৭৬ দশমিক ১৭ মার্কিন ডলার। যা আগে ছিল ২৮৮ দশমিক ৩৩ মার্কিন ডলার।
এ ছাড়া কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) থেকে ৩০ হাজার টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ক্রয়ে ব্যয় হবে ৯৫ কোটি ৫৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
সমন্বয় ও সংস্কার সচিব জানান, বৈঠকে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জন্য স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ১০ হাজার টন মসুর ডাল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে মোট ব্যয় হবে ১০১ কোটি ৯৪ লাখ টাকা।
সমন্বয় ও সংস্কার সচিব জানান, বৈঠকে ঘাড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া ফার্র্টিলাইজার প্রকল্পের হাউজিং কলোনি ও অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ সংক্রান্ত পূর্তকাজের ঠিকাদার নিয়োগের একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, এ ছাড়া বৈঠকে স্থানীয় সরকার বিভাগের চারটি প্রকল্পে এবং রেলওয়ের একটি প্রকল্পে ব্যয় বৃদ্ধিও পৃথক পাঁচটি ভেরিয়েশন প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
রফতানি নীতিমালা খসড়ার নীতিগত অনুমোদন
রফতানি নীতিমালা ২০২৪-২০২৭-এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। একই সাথে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) কর্তৃক রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী আমদানি বা স্থানীয়ভাবে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ক্রয়ের সময়সীমা ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
গতকাল অনুষ্ঠিত বৈঠকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মো: মাহমুদুল হোসাইন খান সাংবাদিকদের জানান, বৈঠকে রফতানিনীতি ২০২৪-২৭-এর নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এটা পরে অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে যাবে।
রফতানি নীতির প্রোপট সম্পর্কে সমন্বয় ও সংস্কার সচিব জানান, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের চ্যালেঞ্জগুলো, কোভিড-১৯, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব, অতিক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সহায়তা দেয়া, রফতানি খাতে নারী উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ বাড়ানো, পরিবেশবান্ধব অর্থনৈতিক কৌশল নেয়া।
তিনি বলেন, রফতানি নিষিদ্ধ পণ্য তালিকা এবং শর্তসাপেক্ষে রফতানি পণ্যতালিকা হালনাগাদ ও এইচএস কোডের হেডিংসহ উল্লেখ করা হয়েছে। রফতানি সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কমিটি ও রফতানি সংক্রান্ত কারিগরি কমিটির গঠন ও কার্যপরিধি সন্নিবেশিত করা হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা