স্বাভাবিক পরিবেশে বাঁচতে হলে গাছ লাগাতে হবে : প্রফেসর ড. আব্দুর রব
হিটস্ট্রোক প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে সেমিনার- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৭ মে ২০২৪, ০১:০২, আপডেট: ০৭ মে ২০২৪, ০১:০২
ডক্টরস ফর ইকোসলিউশনের উদ্যোগে গতকাল রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে ‘হিটস্ট্রোক প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক সেমিনার ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ^বিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ডা: আতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আব্দুর রব। বিশিষ্ট মেডিসিন ও কার্ডিওলজি বিশেষজ্ঞ ডা: মেহেদী হাসান সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। বক্তৃতা করেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) সভাপতি শহিদুল ইসলাম, প্যানেল অব এক্সপার্ট ডা: শোয়েব মোমেন মজুমদার, ডা: নাহিদুজ্জামান সাজ্জাদ প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর ড. আব্দুর রব বলেন, স্বাভাবিক পরিবেশে বাঁচতে হলে প্রত্যেককে কমপক্ষে একটি করে গাছ রোপণ করতে হবে। পৃথিবী ও প্রকৃতি রক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করতে সর্বমহলকে এগিয়ে আসতে হবে। আল্লাহর সৃষ্টির সংরক্ষণে প্রাকৃতিক নিয়ম মানায় সকলকে বদ্ধপরিকর হতে হবে। মানুষ পরিবেশ ও এই পৃথিবীর মূল্যবান অঙ্গ। প্রকৃতি ছাড়া মানুষের জীবন অসম্ভব। তাই প্রকৃতির সাথে মানুষের সম্পর্কের কথাটা জানা খুবই জরুরি। রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার লক্ষ্যে পরিবেশ ধ্বংস করা কখনোই কল্যাণকর হবে না। বৃক্ষ নিধনের ফলে প্রকৃতি নাজুক হয়ে পড়েছে। অন্য দিকে বৈশি^ক পরিবর্তনের ফলে এতে গরম আবহাওয়া আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে পরবর্তী প্রজন্ম আরো ক্ষতির সম্মুখিন হবে। হিটস্ট্রোকে মৃত্যুসহ নানাভাবে মানুষ দুর্বিষহ পরিস্থিতিতে পড়ে যাবে।
তিনি আরো বলেন, অবশ্যই পরিবেশের প্রতি ইনসাফ ও প্রাকৃতিক বিধানকে প্রাধান্য দিতে হবে। জলাশয়গুলোকে নিরাপদ করে তুলতে হবে। যার যেখানে অবস্থান তথা বন্যদেরকে বনে থাকতে দিন প্রাকৃতিক নিয়ম অনুসরণ করুন। রাজধানীসহ সারা দেশে নগরে নগরে সবুজ বনায়ন তৈরি করুন। তবেই সবার জন্য স্বাভাবিক জীবনযাপনের পথ সূচিত হবে।
সেমিনারে অন্য বক্তারা বলেন, গরম আবহাওয়া, জলবায়ুর পরিবর্তন, দূষণ আমাদেরই সচেতন থেকে মোকাবেলা করতে হবে। এ অবস্থায় সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে পরিবেশ রক্ষায় কার্যকর উদ্যোগ ও ভূমিকা পালন করতে হবে। বেশি সময় ধরে উচ্চ তাপমাত্রায় থাকলে হিটস্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর এই পর্যায়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে মস্তিষ্ক, হৃৎপিণ্ড, বুক ও পেশির ক্ষতি হতে পারে। আর মানুষের শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে তৈরি এক ধরনের জটিলতার নাম হিটস্ট্রোক। মানবদেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট। এটি ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটের চেয়ে বেশি হলেই হিটস্ট্রোক হতে পারে। এ সমস্যায় তাৎক্ষণিক চিকিৎসা না পেলে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। হিটস্ট্রোক হলো এমন একটি চিকিৎসাগত জরুরি অবস্থা যার ফলে শরীরের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাতে কপালে চিন্তার ভাঁজ পরাটা অস্বাভাবিক নয়। তবে এই গরমে একটু সতর্কতার সাথে চললেই আমরা বাঁচতে পারি এই সমস্যা থেকে। প্রাথমিকভাবে হিটস্ট্রোকের আগেই যখন হিট ক্র্যাম্প বা হিট এক্সোশন দেখা দেয়, তখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে হিটস্ট্রোক প্রতিরোধ করা সম্ভব।
পোরশায় হিটস্ট্রোকে শ্রমিকের মৃত্যু
পোরশা (নওগাঁ) সংবাদদাতা জানান, নওগাঁর পোরশায় হিটস্ট্রোকে মোজাম্মেল হক জাইতুন (৫০) নামে এক ধানকাটা শ্রমিকের মারা গেছেন। তিনি উপজেলা নিতপুর দিয়াড়াপাড়া গ্রামের মৃত রেহমানের ছেলে। জানা গেছে, সোমবার সকালে মোজাম্মেল স্থানীয় শ্রমিকদের সাথে নিতপুর গানইর পশ্চিম মাঠে বোরো ধান কাটতে যান। সেখানে ধান কাটা অবস্থায় সকাল সাড়ে ১০টায় দিকে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান। নিতপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এনামুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।