১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

সেন্সরে আটকে গেল চলচ্চিত্র ‘অমীমাংসিত’

-

সিনেমার টিজার দেখে আলোচিত সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের সাথে মিল খুঁজে পান কেউ কেউ; আর সেন্সর বোর্ড বলছে, এ ‘ধরনের কাহিনী বাস্তবে ঘটেছে এবং ঘটনা সংশ্লিষ্ট মামলা উচ্চ আদালতে বিচারাধীন।
নৃশংস খুনের বাস্তব ঘটনার সাথে মিল থাকার অভিযোগ তুলে পরিচালক রায়হান রাফীর ‘অমীমাংসিত’ সিনেমাটি আটকে দিয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড।
সিনেমার খুঁটিনাটি যাচাই করে বোর্ড বলছে, এতে নৃশংস খুনের দৃশ্য রয়েছে। কাহিনী, চিত্রনাট্য ও সংলাপের বিষয়বস্তুর সাথে বাস্তবতার মিল রয়েছে। যে কারণে তা জনসাধারণের মধ্যে ‘প্রদর্শন উপযোগী নয়’।
বুধবার ‘অমীমাংসিত’ সিনেমার প্রযোজক শহিদুল আলম সাচ্চুকে দেয়া সেন্সর বোর্ডের উপপরিচালক মো: মঈনুদ্দীন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি সিনেমাটির টিজার সামনে এলে দর্শকদের কেউ কেউ বলছিলেন, সিনেমাটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে বানিয়েছেন রাফী। কেউ আবার আলোচিত সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের সাথে এর মিল খুঁজে পান। যদিও সিনেমা সংশ্লিষ্ট কেউ কিংবা সেন্সর বোর্ডও সরাসরি সাগর-রুনির নাম বলেননি। এর আগে নাম প্রকাশ না করার শর্তে সেন্সর বোর্ডের এক সদস্য বলেন, ‘এ সিনেমার গল্পের সাথে সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের মিল রয়েছে। সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড এখন আদালতে বিচারাধীন। এজন্যই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আপত্তি করা হয়েছে।”

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে ভাড়া বাসায় খুন হন বেসরকারি টিভি চ্যানেল মাছরাঙার বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং তার স্ত্রী এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আজো সেই হত্যা রহস্যের মীমাংসা করতে পারেনি।
সেন্সর বোর্ডের চিঠিতে বলা হয়, গত ৩ মার্চ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিনেমাটি পর দিন ৪ মার্চ সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা পরীক্ষা করেন। এরপর সেটি অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের জন্য ২২ এপ্রিল বোর্ড সদস্যরা আবারো পরীক্ষা করেন। আবার যাচাই শেষে বোর্ড সভায় চলচ্চিত্রটির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
‘ওই সভায় সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা মত দেন, ‘দি কোড ফর সেন্সরশিপ অব ফিল্মস ইন বাংলাদেশ, ১৯৮৫ এর ১ এর প্রথম, পঞ্চম ও সপ্তম দফায় বর্ণিত উপাদানগুলো বিদ্যমান থাকায় ‘অমীমাংসিত’ চলচ্চিত্রটি জনসাধারণের মধ্যে প্রদর্শন উপযোগী নয়।” ফলে ‘দি বাংলাদেশ সেন্সরশিপ অব ফিল্মস রুলস, ১৯৭৭’ এর বিধি ১৬ (৫) অনুযায়ী চলচ্চিত্রটির সেন্সরপত্রের আবেদন বাতিল বা সেন্সরপত্র দিতে অস্বীকারের কথা জানায় সেন্সরবোর্ড।
তবে সিনেমাটির সাথে সংশ্লিষ্টরা চাইলে আপিল করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন সেন্সর বোর্ডের উপপরিচালক মো: মঈনুদ্দীন। তিনি বলেন, ‘এ পত্র প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে সরকার বরাবর আপিল আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। সিনেমা সংশ্লিষ্টরা চাইলে আপিল করতে পারবেন।’
গত ২৯ ফেব্রুয়ারি ওটিটি প্ল্যাটফর্ম আইস্ক্রিনে ‘অমীমাংসিত’ মুক্তির ঘোষণা ছিল। কিন্তু সেন্সর বোর্ডের আপত্তির কারণে পেছানো হয় তারিখ। এরপর ঈদের বিশেষ চমক হিসেবে মুক্তির কথা জানানো হয়। সেটিও পরে হয়নি।

 


আরো সংবাদ



premium cement