গাইবান্ধার দুর্ঘটনায় নিহত ৪ জনের পরিবারকে জামায়াতের আর্থিক সহায়তা

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম বলেছেন, সব ধরনের মৃত্যুর ফায়সালা করেন মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন। তাই আল্লাহর ফায়সালা আমাদের মেনে নিতে হবে এবং যতটা সম্ভব স্বাভাবিক থাকতে হবে। শোকাহত হয়ে ভারসাম্য হারানো যাবে না। যেকোনো দুর্ঘটনায় মৃত্যু অত্যন্ত বেদনাদায়ক। বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কারণে সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে। এসব দুর্ঘটনায় অনেক পরিবারে দুঃখ-দুর্দশা নেমে আসে। আর আমাদেরকে ভালো মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে ও নেক আমল করতে হবে। মা, বাবা, স্ত্রী ও মেয়ে হিসেবে নিহতদের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হবে।

গতকাল সোমবার গাইবান্ধা জেলা জামায়াতের উদ্যোগে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নাকাইহাটে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের চারটি পরিবারকে আর্থিক সহায়তা ও সমবেদনা জ্ঞাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন সাবেক জেলা আমির ও বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা: আব্দুর রহিম সরকার, গাইবান্ধা জেলা আমির ও গাইবান্ধা সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মো: আব্দুল করিম, জেলা নায়েবে আমির ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাজেদুর রহমান, জেলা রাজনৈতিক সেক্রেটারি ও পলাশবাড়ী উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, জেলা সহকারী সেক্রেটারি সৈয়দ আব্দুস সালেক, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য মো: ফয়সাল কবির রানা, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নায়েবে আমির আবুল কালাম আজাদ, পলাশবাড়ী কর্মরিষদ সদস্য মাওলানা একরামুল হক ও জামায়াত নেতা গোলাম মোস্তফা, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা মশিউর রহমান প্রমুখ।
মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, জামায়াতে ইসলামী এমন দল যারা ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ কায়েম করে মানুষের হক মানুষকে ফিরিয়ে দিতে চায়। অসৎ কর্ম ও দুর্নীতির কারণে সমাজে মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ হয়। তাই সৎ পথে চলতে হবে। মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে। দুর্নীতিবাজ ও সমাজবিরোধীদের প্রত্যাখ্যান করতে হবে। সকল প্রাকৃতিক দুর্যোগে জামায়াত ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সাহায্যে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। ইতোপূর্বে গাইবান্ধার বিভিন্ন জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত এমনকি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পরিবারেও জামায়াতের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। আর্থিক সহায়তা কোনো কৃতিত্ব নয় বরং এটা আমাদের দায়িত্ব। এটা জনগণের অধিকার।

শেষে জামায়াত আমির ডা: শফিকুর রহমানের পক্ষ থেকে সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম নিহত চারজনের প্রত্যেক পরিবারকে পঞ্চাশ হাজার টাকা করে মোট দুই লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। নিহতরা হলেন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নাকাই ইউনিয়নের কুমার গাড়ি গ্রামের মো: মজিবর রহমানের ছেলে ইজি বাইক চালক মো: আশরাফুল ইসলাম (৩৫), পলাশবাড়ী উপজেলার হরিনাথুর ইউনিয়নের হরিনাবাড়ীর ভোলামিয়ার ছেলে মো: মোত্তালিব প্রধান (৫০), গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নাকাই ইউনিয়নের কুমার গাড়ি গ্রামের পিতা আজিজুল হকের ছেলে মো: বেলাল (৫০), একই গ্রামের আব্দুস সাত্তার মিয়ার ছেলে মো: সবুজ মিয়া (৩৮)।
উল্লেখ্য, নিহতরা বাজার করার উদ্দেশ্যে গত ২১ মার্চ পার্শ্ববর্তী নাকাইহাট বাজারে যান এবং বাজার করে ফেরার পথে বড়পুল এলাকায় পৌঁছলে পেছন দিক থেকে আসা মাটির হাঁড়ি ভর্তি একটি নসিমন ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই ইজিবাইকের চালক আশরাফুল ইসলাম মারা যান এবং অন্যরা গুরুতর আহত হন। আহতদের রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেয়া হলে তারা সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।