২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

সমাজে বৈষম্য দিন দিন বাড়ছে : রেহমান সোবহান

জাতীয় প্রেস ক্লাবে টিইউসি আয়োজিত সেমিনারে বক্তৃতা করছেন রেহমান সোবহান : নয়া দিগন্ত -

অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান এক বাজেট আলোচনায় বলেছেন, সমাজে বৈষম্য অনেকে বেড়েছে। দিন দিন বৈষম্য আরো বাড়ছে। কিছু মানুষ আমাদের এখানে উন্নত বিশ্বের মতো জীবন যাপন করছে। আর লাখ লাখ শ্রমিক বসবাস করছেন তৃতীয় বিশ্বের মানের। বৈষম্যের শিকার এসব মানুষের জন্য বাজেটে বরাদ্দ রাখার জন্য কথা বলার যেমন কেউ নেই, শোনারও কেউ নেই।
রেহমান সোবহান বলেন, অর্থনৈতিক বৈষম্য যত বাড়বে, রাজনৈতিক বৈষম্য ততই বাড়বে। অর্থনৈতিক গণতন্ত্র না থাকলে রাজনৈতিক গণতন্ত্রও থাকবে না। গণতান্ত্রিক পদ্ধতি ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়বে। তিনি আরো বলেন, সরকারের বর্তমান ধারায় দারিদ্র্য হয়তো কমবে, কিন্তু বৈষম্য আরো বাড়বে।
বাজেটে শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষা প্রসঙ্গে রেহমান সোবহান বলেন, শ্রমিকেরা অনেক ভাগে বিভক্ত। কিন্তু মালিকেরা ঐক্যবদ্ধ। উদাহরণ হিসেবে তিনি পোশাকমালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এরা রাজনৈতিকভাবে অনেক শক্তিশালী। তাদের অনেকে এখন এমপি, মন্ত্রী। তাদের কিভাবে মোকাবেলা করবেন শ্রমিকেরা? অর্থমন্ত্রী নিশ্চয়ই তাদের কথাই গুরুত্ব দিয়ে শুনবেন।
বাজেট আলোচনা প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে রেহমান সোবহান বলেন, ‘একজন অর্থমন্ত্রী ছিলেন ১০ বছর। প্রতি বছরই তিনি আলোচনা করেছেন অনেকের সাথে। সবাই ১০ বছর ধরেই একই কথা বলে গেছেন। তিনি শুনেছেন কি না সন্দেহ। প্রথম দুই-তিন বছর আমি কথা বলেছি। পরে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছি। সেখানেও ব্যবসায়ীদের কথা বেশি গুরুত্ব পায়। কারণ তাদের রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তি আছে। এখন প্রায় ৭০ শতাংশ সংসদ সদস্যই ব্যবসায়ী।’ রেহমান সোবহান বলেন, রাজনীতি ও ব্যবসার মধ্যে যে সীমারেখা ছিল, তাও এখন উঠে গেছে।
আজকের আলোচনায় বৈষম্যের ওপর গুরুত্ব দিয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বাজেট শুধু আয়-ব্যয়ের হিসাব নয়, আয়ের পুনর্বণ্টনও। আমাদের প্রবৃদ্ধি বেড়েছে এটা সত্য। কিন্তু আয়বৈষম্যই সবচেয়ে দুশ্চিন্তার কারণ।’ পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, ওপরের দিকের পাঁচ ও নিচের পাঁচের মধ্যে ২০১০ সালে পার্থক্য ছিল ৩২ গুণ। এটা ২০১৬ সালে হয়েছে ১২১ গুণ।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজের ওপর গুরুত্ব দেন মোস্তাফিজ। তিনি সেই কারণে বাজেটে আয়-ব্যয়ের পাশাপাশি আয় পুনর্বণ্টনের ওপর জোর দেন। মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের দেশে প্রত্যক্ষ করের তুলনায় পরোক্ষ কর বেশি। করের চাপ সাধারণ মানুষের ওপর বেশি। করকাঠামো বৈষম্যমূলক।’ প্রত্যক্ষ কর বাড়ানোর ওপর জোর দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক এম এম আকাশ। এই অর্থনীতিবিদ তার প্রবন্ধে বলেন, সাধারণ মানুষের অর্থে যে বাজেট তৈরি হয়, তার ব্যয় থেকে অসৎ ধনীদের ভর্তুকি দেয়া হয়। প্রতি বছর ১০ থেকে ১১ লাখ লোককে সামাজিক নিরাপত্তা ভাতার আওতায় এনে তাদের যে সহায়তা দেয়া হয়, সেটা সমুদ্রে একবিন্দু শিশির দেয়ার মতো।
এম এম আকাশ আরো বলেন, বাজেটে কল্যাণমূলক দিক কম এবং তা বাস্তবায়িত হয় না। যেসব খাতে ধনীদের লাভ, দুর্নীতিবাজ বা ক্ষমতাসীনদের লাভ দেখা যায়, সেগুলোতে বরাদ্দ বেশি এবং ঠিকই তা বাস্তবায়িত হয়।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন টিইউসির সভাপতি শহীদুল্লাহ চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক ওয়াজেদুল ইসলাম।


আরো সংবাদ



premium cement
বছরে ১.৩ ট্রিলিয়ন ডলার জলবায়ু অর্থায়নের দাবি বাংলাদেশ অরবিসের সাথে কাজ করতে আগ্রহী : অধ্যাপক ইউনূস ঢাবি সিন্ডিকেটে এখনো বহাল আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা হাসিনা বাকস্বাধীনতা রুদ্ধ করতে দিগন্ত টেলিভিশনসহ অসংখ্য গণমাধ্যম বন্ধ করেছে : ফখরুল শীত শুরু হচ্ছে তবু কমেনি ডেঙ্গুর প্রকোপ ব্যয়বহুল তদন্তেও শনাক্ত হয়নি লাশটি কার ‘রহস্যজনক’ কারণে নেয়া হয়নি ডিএনএ নমুনা নবনির্মিত ওয়ামি কমপ্লেক্সের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন যুদ্ধবিরতির মার্কিন চেষ্টার মধ্যে লেবাননে ইসরাইলি হামলায় চিকিৎসাকর্মী নিহত অস্বস্তিতে ক্রেতারা : কমিয়ে দিতে হচ্ছে কেনাকাটা গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৪৪ হাজার ছাড়াল আমরা মানুষের সম্মিলিত প্রজ্ঞাকে সম্মান করি

সকল