২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৫ শাবান ১৪৪৬
`

ধৈর্যের সাথে দায়িত্ব পালনের আহ্বান সেনাপ্রধানের

সাভার সেনানিবাসে ফায়ারিং প্রতিযোগিতায় পুরস্কার বিতরণ করছেন জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান : নয়া দিগন্ত -

নির্বাচিত সরকার দায়িত্ব না নেয়া পর্যন্ত দেশের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় ধৈর্যের সাথে দায়িত্ব পালন করতে সেনাসদস্যদের নির্দেশ দিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। পাশাপাশি কাজের সময় অতিরিক্ত বল প্রয়োগ না করার বিষয়টিও তুলে ধরেন।
গতকাল সোমবার দুপুরে সাভার ক্যান্টনমেন্টে ফায়ারিং প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম দ্রুত কাজ শেষ করে ক্যান্টনমেন্টে ফিরে যাব। কিন্তু কাজটা দীর্ঘদিন ধরে করে যেতে হচ্ছে।’ এ সময় কাজ দীর্ঘায়িত হওয়ায় সেনাদের ধৈর্য ধরে রাখতে ও পেশাদারিত্বের সাথে দেশ ও জাতির জন্য কাজ করার নির্দেশ দেন তিনি।
সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমরা দেশে যতদিন না একটা নির্বাচিত সরকার পাই, ততদিন শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় আমাদের কাজ করে যেতে হবে। দায়িত্ব পালনের সময় উচ্ছৃঙ্খল কাজ করা যাবে না, এটা আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।’
কাজ করতে গিয়ে বল প্রয়োগ করা যাবে না উল্লেখ করে ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, ‘যেটুকু না করলেই নয়, সেটুকু বল প্রয়োগ করে কাজ করতে হবে।’
দীর্ঘ সময় পর তিনি ফায়ারিং রেঞ্জে গুলি চালানোর অনুশীলনে অংশ নেবেন বলে জানান। সেনাপ্রধান উল্লেখ করেন, একজন সেনাসদস্যের পেশাগত উৎকর্ষ অর্জনে ফায়ারিংয়ে দক্ষতা অত্যন্ত জরুরি। এটি মৌলিক প্রশিক্ষণের অবিচ্ছেদ্য অংশ। প্রতি বছর এই প্রতিযোগিতা সেনাসদস্যদের কাক্সিক্ষত মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

বিএনসিসির সমাপনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শনে সেনাপ্রধান
নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, সাভারের বাইপাইলস্থ বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি) অধিদফতরের ট্রেনিং একাডেমিতে বার্ষিক কেন্দ্রীয় ক্যাম্পিং-২০২৫-এর সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান উপস্থিত ছিলেন। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া এই ক্যাম্পে দেশের ৫১টি স্কুল, ২০৬টি কলেজ এবং ২২টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সেনা, নৌ ও বিমান শাখার মোট ৭০৭ জন বিএনসিসি ক্যাডেট অংশগ্রহণ করেন। এবারের কেন্দ্রীয় ক্যাম্পে সুন্দরবন রেজিমেন্ট চ্যাম্পিয়ন এবং মহাস্থান রেজিমেন্ট রানারআপ হওয়ার গৌরব অর্জন করে। এই ক্যাম্পিং আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে।
সেনাবাহিনী প্রধান বিএনসিসিতে কর্মরত সশস্ত্রবাহিনীর অফিসার, বিএনসিসি অফিসার, প্রফেসর আন্ডার অফিসার, টিচার আন্ডার অফিসার ও বিএনসিসি ক্যাডেটদের মধ্যে তার স্বাগত ভাষণ ও দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন। বক্তব্যের শুরুতেই তিনি স্মরণ করেন মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বিএনসিসি ক্যাডেটসহ সব বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং গত জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগকে। সশস্ত্রবাহিনীর পাশাপাশি দেশের নিরাপত্তা এবং শৃঙ্খলা রক্ষা ও দেশের যেকোনো ক্রান্তিলগ্নে বিএনসিসি ক্যাডেটদের অগ্রণী ভূমিকা পালনের ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন। একই সাথে তিনি সামাজিক ও জাতীয় পর্যায়ে বিএনসিসি ক্যাডেটদের অগ্রণী ভূমিকার ভূঁয়সী প্রশংসা করেন এবং এই সংস্থার সব সদস্যকে অভিনন্দন জানান।
কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ; জিওসি, ৯ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার, সাভার এরিয়া; বিএনসিসি অধিদফতরের মহাপরিচালক; সশস্ত্রবাহিনীর উর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তারা; বিএনসিসির অফিসার ও ক্যাডেটরা উপস্থিত ছিলেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement