২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৫ শাবান ১৪৪৬
`

আ’লীগ সরকারের আমলে ছিল গুম খুনের রাজনীতি : মির্জা ফখরুল

-

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ছিল গুম-খুনের রাজনীতি। স্বৈরাচার হাসিনা সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে বন্দী করে করে রেখেছিল। তাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। বেগম জিয়া গণতন্ত্রের জন্য ফ্যাসিস্ট সরকারের সাথে আপস করেননি। আওয়ামী লীগ সরকার শাপলা চত্বরে নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল। মিথ্যা ও পরিকল্পিত মামলা দিয়ে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামায়াত নেতাদের ফাঁসি দিয়েছিল। তারা নির্বাচনী ব্যবস্থা ও গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে হাসিনা আমাদের প্রার্থীদের গ্রেফতার করে দিনের ভোট রাতে করে। ১৯৭৫ সালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাকশালকে সংস্কার করে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। হাসিনা ভারতে বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করছে। স্বৈরাচারের দোসরা যেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সে দিকে বিএনপি নেতাকর্মীদের লক্ষ রাখতে হবে। দ্রব্যমূল্য বেড়ে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। এই সরকারকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি শান্ত রাখতে হবে।
গতকাল ঢাকার ধামরাই পৌরসভার যাত্রাবাড়ী খেলার মাঠে ঢাকা জেলা বিএনপির সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। জেলা বিএনপি সভাপতি খন্দকার আবু আশফাকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরীর সঞ্চালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাাখেন ঢাকা বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইদুল আলম বাবুল, সহসাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটু, নজরুল ইসলাম আজাদ, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা: সালাউদ্দিন বাবু, কেন্দ্রীয় মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদিকা সুলতানা আহাম্মেদ, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ধামরাই উপজেলা সভাপতি আলহাজ তমিজ উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক শামছুল ইসলাম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক নাজমুল হাসান অভি, জেলা যুবদলের সভাপতি ইয়াছিন ফেরদৌস মুরাদ।
এ সময় ঢাকা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার ইরফান আমান অমি, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম রাশেদ, কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু, সাভার উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কফিল উদ্দিন, সাভার থানা বিএনপির সভাপতি মনির হোসেন মিন্টু, সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব খান ও ঢাকা জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু হানিফ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা চালু করেছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। তারেক রহমানের ৩১ দফা সংস্কার বাস্তবায়ন হলে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। সংগঠনকে শক্তিশালী করতে মানুষকে ভালোবেসে কাছে আনতে হবে। বিএনপিতে কোনো চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসের ঠাঁই নেই। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের কেউ যেন বিএনপিতে স্থান না পায় সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি বলেন, ধামরাইয়ের মাটি বিএনপির ঘাঁটি। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ছিলেন বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক। শহীদ জিয়া সংবাদপত্রকে স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। বিএনপি আন্দোলনের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে সব সময় বদ্ধপরিকর।

নির্বাচিত সরকার ছাড়া স্থিতিশীলতা সম্ভব নয়
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সংবাদদাতা জানান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে বিএনপি নেতাকর্মীরা সবচেয়ে বেশি হত্যার শিকার হয়েছেন। পঙ্গুত্ববরণ করে এখনো হাসপাতালে কাঁতরাচ্ছেন। কিন্তু নতুন বয়ানে বিএনপির অবদানকে বাদ দেয়া হচ্ছে। কিছু ছাত্রনেতার কথাবার্তায় মনে হয় তারা আন্দোলনটাকে হাইজ্যাক করেছে। আমরা বলছি এ আন্দোলনের সফলতা বাংলাদেশের মানুষের সফলতা।
বর্তমান সরকারের কাছে নিজের কোনো প্রত্যাশা নেই বলে জানিয়ে তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্য, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে জনগণের সমর্থিত, জনগণের কাছে দায়বদ্ধ, জনগণের কাছে জবাবদিহির মূল্য আছে এমন রাজনৈতিক সরকার দরকার। নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্রের বাহক। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে আপনারা দেখবেন সবকিছু ক্রমান্বয়ে সহিষ্ণু অবস্থায় ফিরে আসবে।
গতকাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জাতীয় বীর আব্দুল কুদ্দুস মাখন পৌর মুক্তমঞ্চে জেলা বিএনপি আয়োজিত ৩১ দফা বাস্তবায়ন দাবির সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বেলা ২টায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেলা ১১টা থেকেই দলীয় নেতাকর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেন।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান। সদস্যসচিব সিরাজুল ইসলামের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, অর্থনীতিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহমুব শ্যামল, কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মোহাম্মদ সেলিম ভূঁইয়া, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী মোস্তাক মিয়া, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি, সদস্য কবীর আহমেদ ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সায়েদুল হক সাঈদ, অ্যাডভোকেট মো: তকদির হোসেন জসীম, কেন্দ্রীয় কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশ, নবীনগরের সাবেক এমপি প্রার্থী কাজী নাজমুল হোসেন তাপস, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক খোকন প্রমুখ।

 


আরো সংবাদ



premium cement