১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৮ মাঘ ১৪৩১, ১১ শাবান ১৪৪৬
`
গ্রন্থমেলায় প্রাণের উৎসব

নবীন লেখকদের বইয়ের ক্রেতা নেই

-

অমর একুশে বইমেলায় নবীন লেখকদের বইয়ের ক্রেতা মিলছে না। বাংলা একাডেমির দেয়া তথ্য মতে প্রতিদিন মেলায় যে পরিমাণ নতুন বই প্রকাশিত হয় তার বেশির ভাগই কবিতার বই, যার প্রায় ৯৯ শতাংশই নতুন লেখক। অপর দিকে বিক্রেতারা জানান, নতুন লেখকদের যে পরিমাণ বই প্রতিদিন প্রকাশ পাচ্ছে তাতে বই বাড়লেও পাঠক নেই। ফলে প্রতিদিন সারি সারি বই অবিক্রীত থাকছে।
প্রকাশকরা জানান, প্রতিদিন যত মানুষ মেলায় আসছেন তাদের বেশির ভাগই দর্শনার্থী। তবে যারা বই কিনতে আসেন তারা এসেই পুরনো নামকরা লেখকদের বই চান। কিন্তু বর্তমান সময়ে পুরনো লেখকদের নতুন বই সঙ্কট রয়েছে। কারণ তাদের মধ্যে অনেকেই বেঁচে নেই। আর যারা আছেন তারা এখন আর বই লেখার মতো বয়সে নেই। ফলে নামকরা লেখকদের পাঠক থাকলেও বই সঙ্কট রয়েছে।
এর মধ্যেও মেলায় নতুন বই আসা অব্যাহত আছে। গতকালও প্রকাশ পেয়েছে ৮৪টি বই, যার বেশির ভাগই কবিতার এবং নবীন লেখকদের। কর্মদিবস থাকায় দশম দিনে মেলা শুরু হয় বেলা ৩টায় এবং চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। লেখক বলছি মঞ্চে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন কুদরত-ই-হুদা ও হিজল জোবায়ের। বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘ড. মনিরুজ্জামানের সময়রেখা : ভাষাবিজ্ঞানের ত্রিকালদর্শী পরিব্রাজক’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মাশরুর ইমতিয়াজ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সালমা নাসরীন ও মামুন অর রশীদ। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক মনসুর মুসা।
এতে প্রাবন্ধিক বলেন, ড. মনিরুজ্জামান ভাষাবিজ্ঞানের দুরূহ পথে কেবল সরলরৈখিকভাবেই পরিভ্রমণ করেননি বরং নজর দিয়েছেন অতীতের ভাষিক নিরীক্ষায় এবং ভবিষ্যতের ভাষা-গবেষণার সুলুক সন্ধানে। প্রতিভার মৌলিকত্বে তিনি তার স্বকীয় অবস্থান নিশ্চিত করেছেন। ভাষাবিজ্ঞান বিষয়ে গভীর পাণ্ডিত্য এবং উপভাষা গবেষণায় অসামান্য অবদানের কারণে ভাষাবিজ্ঞানের জগতে যেমন তার অবিস্মরণীয় খ্যাতি রয়েছে, তেমনি সুসাহিত্যিক ও সাহিত্য-বিশ্লেষক হিসেবেও বাংলা সাহিত্যজগতে তার নাম সুবিদিত। তিনি বাংলাদেশে অনুসৃত ভাষাবিজ্ঞানের যাবতীয় ধারাগুলোর বিন্যাস করেছেন, একইসাথে তার রচনায় তুলনামূলক ভাষাতত্ত্বের বিকাশমানতার ধারা প্রতিভাত হয়েছে।
আলোচকদ্বয় বলেন, ড. মনিরুজ্জামান ছিলেন আধুনিক চিন্তাধারার অধিকারী বিজ্ঞানমনস্ক একজন মানুষ। গবেষণার মাধ্যমে তিনি বাংলা উপভাষার উচ্চারণগত, ব্যাকরণগত ও শব্দগত বৈচিত্র্য তুলে ধরেছেন। ভাষা গবেষণায় তিনি আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতির প্রয়োগ ঘটিয়েছেন। তিনি উপভাষার অভ্যন্তরীণ রূপটি আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন এবং উপভাষাকে উদার দৃষ্টিতে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক মুনসুর মুসা বলেন, ড. মনিরুজ্জামান শৈশব থেকেই বিভিন্ন উপভাষার সংস্পর্শে এসেছিলেন এবং একজন গবেষক হিসেবে ভাষাবিজ্ঞানের বিভিন্ন দিক নিয়ে গবেষণা করেছেন। তার মূল্যবান গবেষণা ভবিষ্যতের গবেষকদের জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা জোগাবে।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গতকাল ছিল মো: আনোয়ার হোসেনের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘আরশিনগর বাউল সংঘ’, সানজিদা আহমেদ লাবণ্যের পরিচালনায় নৃত্যসংগঠন ‘নৃত্য সংসদ, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়’ এবং মজিবুর রহমান বিরোহীর পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘বিরোহী শিল্পীগোষ্ঠী’-এর পরিবেশনা। সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী আব্দুল লতিফ শাহ, বাউল সুভাষ বিশ^াস, আবুল কালাম আজাদ, সাধিকা সৃজনী তানিয়া, এলাহী মাসুদ, কাজী দেলোয়ার হোসেন, এ টি এম গোলাম মোস্তফা, পিয়াল হাসান ও শামিমা সুলতানা। যন্ত্রানুসঙ্গে ছিলেন প্রিয়ব্রত চৌধুরী (তবলা), শাহীনুর রহমান (কী-বোর্ড), মো: ফায়জুর রহমান (বাঁশি), সুমন কুমার শীল (দোতারা) ও হাসান মিয়া (বাংলা ঢোল)।
আজ মঙ্গলবার ১১তম দিনে মেলা শুরু হবে বেলা ৩টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘জীবন ও সাহিত্য : শাহেদ আলী’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন শিবলী আজাদ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন নাজিব ওয়াদুদ ও মোস্তাক আহমাদ দীন। সভাপতিত্ব করবেন চঞ্চল কুমার বোস।
মেলায় এসেছে লেখক পিনাকী ভট্টাচার্যের বই ‘ফুলকুমারী’। বইটির প্রকাশক ঐতিহ্য। এটি আত্মজীবনী। ‘নিশি ট্রেনের ভূত’, লেখক আনিসুল হক, প্রকাশক প্রথমা প্রকাশন। ইলহাম পাবলিকেসন্স নিয়ে এসেছে ‘সন্তানের ঈমান পরিচর্যা’। এর লেখক মুফতি সানাউল্লাহ মাহমুদ ও অনুবাদক মুফতি ফখরুল ইসলাম। বিষয় : ঈমান ও আকিদা, সন্তান প্রতিপালন। আগুন ও রক্তের বীজ-এর লেখক সাংবাদিক কাফি কামাল। প্রকাশক সাহস।
তসলিমার বই বিক্রি নিয়ে উত্তেজনা, স্টল বন্ধ
অমর একুশে বইমেলার একটি স্টলে বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরীনের বই বিক্রি ও ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেয়ায় শতাব্দী ভব নামের এক লেখককে বইমেলা থেকে বের করে দিয়েছে উত্তেজিত জনতা। ‘সব্যসাচী’ নামের ওই স্টলে ভাঙচুরও চালানো হয়। পরে শিক্ষার্থীদের উত্তেজনার মুখে স্টলটি সাময়িক বন্ধ করে দেয় পুলিশ। গতকাল সন্ধ্যায় মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশের সব্যসাচী স্টলের সামনে এমন ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একদল শিক্ষার্থী সব্যসাচী স্টলে তসলিমা নাসরীনের বই বিক্রি করা দেখে সেখানে ভিড় জমান। শতাব্দী ভব নামের ওই লেখক তখন সেখানেই বসেছিলেন। শিক্ষার্থীরা তসলিমা নাসরীনের বই বিক্রি কেন করছেন জানতে চাইলে তাদের ‘জঙ্গি’ আখ্যা দেন ওই লেখক। ফলে শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হন। একপর্যায়ে শতাব্দী ভব ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিলে উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা তাকে মারতে উদ্যত হলে পুলিশ বাধা দেয় এবং তাকে নিয়ে চলে যায়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, আমরা এখানে এসে দেখতে পেয়েছি সব্যসাচী স্টলে প্রকাশ্যে তসলিমা নাসরীনের বই বিক্রি করা হচ্ছে। আমরা কারণ জানতে চাইলে ওই লোক আমাদের জঙ্গি বলে ও জয় বাংলা স্লোগান দেয়। ওই লেখক জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে আমাদের গায়ে হাত তুলেছেন। তিনি অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেছেন। আমরা এর বিচার চাই।


আরো সংবাদ



premium cement
মেক্সিকো উপসাগরের নাম পরিবর্তন করে ‘আমেরিকা উপসাগর’ করল গুগল যশোরে মাইকে ঘোষণা দিয়ে বিএনপি নেতাদের ওপর আ’লীগের হামলা ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করে অধ্যাদেশ জারি স্ত্রীসহ সাবেক ওসি মাজহারুলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দুর্নীতির দায়ে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক গভর্নরকে ট্রাম্পের ক্ষমা সিরাজদিখানে নিখোঁজের ১১ দিন পর লাশ উদ্ধার, আটক ৪ কোনো অন্যায়ের কাছে যুবক তরুণেরা মাথা নত করবে না : ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ ডিসেম্বরকে ধরে নিয়েই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি পাবনায় ট্রলির ধাক্কায় সিএনজির ২ যাত্রী নিহত সংস্কার কমিশনগুলোর প্রস্তাবনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে রাষ্ট্রকাঠামো পুনর্গঠন করা হবে : আসিফ মাহমুদ লক্ষ্মীপুরে আগুনে ২০ দোকান পুড়ে ছাই

সকল