০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৮ মাঘ ১৪৩১, ১ শাবান ১৪৪৬
`

আ’ লীগের বিচারের দাবিতে সারা দেশে ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ

রাজধানীতে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের গণমিছিল : নয়া দিগন্ত -


‘ফ্যাসিস্ট সরকারের গুম, খুন, দুর্নীতিসহ রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড এবং জুলাই গণহত্যার সাথে জড়িতদের বিচারের দাবিতে গণমিছিল’ করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির। গতকাল জুমার নামাজ শেষে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট থেকে গণমিছিলটি শুরু হয়। মিছিল পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেস ক্লাব, মৎস্য ভবন হয়ে শাহবাগে গিয়ে সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। মিছিলে নেতৃত্ব দেন ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম। সমাবেশে নির্বাচনের আগেই পতিত স্বৈরাচারের বিচার নিশ্চিত করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও যারা বাংলাদেশের মানচিত্রকে কলুষিত করেছে, বাকশাল কায়েম করে এ দেশকে ভঙ্গুর দেশে পরিণত করেছিল, জুলাই আন্দোলনে যাদের হাতে নির্বিচারে সাধারণ ছাত্র-জনতা শহীদ হয়েছে, সেই পতিত ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী সরকারের বিচার হতে দেখিনি। আমরা বিচারে দীর্ঘসূত্রিতা লক্ষ করছি। আমরা হুঁশিয়ার করে বলে দিতে চাই, এই বাংলার মাটিতে তাদের বিচার করেই পরবর্তী নির্বাচনের দিকে যেতে হবে। নির্বাচনের আগেই পতিত স্বৈরাচারের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। কিছু রাজনৈতিক দল এই দাবিতে সরব না থেকে চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও দখলদারিত্বে লিপ্ত হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। ছাত্রশিবিরের দফতর সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ বলেন, আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত না করা পর্যন্ত ছাত্রসমাজকে নিয়ে ইসলামী ছাত্রশিবির মাঠে থাকবে। তিনি বলেন, আমরা ভেবেছিলাম অচিরেই আওয়ামী লীগের হত্যাকাণ্ডের বিচার বাংলাদেশে হবে। কিন্তু দেখছি তাদের এখনো গ্রেফতার করা হয়নি। ছাত্রলীগ, যুবলীগের সন্ত্রাসীরা এখনো আমাদের ভাইদের হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করছে। আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কাউকে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। মিছিলে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ছাত্রশিবিরের প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান আজাদ, প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কায়েম, মানবাধিকার সম্পাদক সিফাত আলমসহ ঢাকা মহানগর, বিশ্ববিদ্যালয় শাখাসহ অন্যান্য শাখার সভাপতি, সেক্রেটারি ও অন্যান্য নেতা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে একই দাবিতে গতকাল সারা দেশে গণমিছিল বের করে ছাত্রশিবির।

খুলনা ব্যুরো জানায়, খুলনা মহানগর শাখা নগরীতে গণমিছিল করে। জুমার নামাজ শেষে বাইতুন নূর জামে মসজিদ থেকে মিছির শুরু হয়ে রয়াল মোড়ে শেষ হয়।
পরে রয়াল মোড়ে খুলনা মহানগর সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলনের সভাপতিত্বে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেক্রেটারি রাকিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন সংগঠনের স্কুল কার্যক্রম সম্পাদক নোমান হোসেন নয়ন। সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন- ইসলামী ছাত্রশিবির খুলনা মহানগর শাখার সাবেক সভাপতি মুশারফ আনসারী, আবদুল আওয়াল ও জাহিদুর রহমান নাঈম, সাতক্ষীরা জেলা সভাপতি ইমামুল ইসলাম, সাতক্ষীরা শহর সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন, খুলনা জেলা উত্তর সভাপতি ইউসুফ ফকির ও বাগেরহাট জেলা সভাপতি মোর্শেদ আলম।

রংপুর ব্যুরো জানায়, রংপুর মহানগরে গণমিছিল হয়েছে। জুমার নামাজের পরে কাচারি বাজার থেকে গণমিছিলিটি শুরু হয়। মিছিলটি সুরভী উদ্যান মোড়, পুলিশ লাইনস মোড়, টাউন হল, সিটি করপোরেশন, কৈলাশরঞ্জন মোড় সুপার মার্কেট মোড়, পায়রা চত্বর, জাহাজ কোম্পানি মোড়, প্রেস ক্লাব চত্বর, জীবন বীমা মোড়, দাবানল মোড়, গ্র্যান্ড হোটেল মোড় হয়ে শাপলা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় শিবিরের হাজার হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন গণমিছিল। তাদের হাতে ছিল জাতীয় পতাকা।
পরে সেখানে সমাবেশ করে তারা। এ সময় বক্তব্য রাখেন- মহানগর শিবির সভাপতি নুরুল হুদা ও সেক্রেটারি আনিসুর রহমান।

বগুড়া অফিস জানায়, বগুড়া শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির। মিছিলটি কলোনি জামিল মাদরাসার সামনে থেকে শুরু হয়ে বড়গোলা হয়ে শহরের জিরো পয়েন্ট সাতমাথায় মুক্তমঞ্চে সমাবেশে মিলিত হয়। বিক্ষোভ মিছিল শেষে ইসলামী ছাত্রশিবির বগুড়া জেলা শাখা আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় গবেষণা সম্পাদক গোলাম জাকারিয়া। বক্তব্য রাখেন- কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও বগুড়া শহর শিবিরের সভাপতি রেজোয়ানুল ইসলাম, বগুড়া জেলা পূর্বের সভাপতি জোবায়ের হোসেন, বগুড়া জেলা পশ্চিমের সভাপতি সাইয়্যেদ কুতুব সাব্বির, বগুড়া শহর শাখার সেক্রেটারি হাবিবুল্লাহ, পশ্চিম জেলা সেক্রেটারি হাফেজ আল-ইমরান ও পূর্ব জেলা সেক্রেটারি শাহরিয়ার হাসান বিপ্লব।

নীলফামারী প্রতিনিধি জানান, নীলফামারীতে গণমিছিল ও সমাবেশ করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির। শহরের ডাইলপট্টী থেকে মিছিল বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে চৌরঙ্গী মোড়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির নীলফামারী জেলা শাখার সভাপতি তাজমুল হাসান সাগরের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটির আইনবিষয়ক সম্পাদক আরমান হোসেন পাটোয়ারী ও ইসলামী ছাত্রশিবির নীলফামারী শহর শাখার সভাপতি শফিকুল ইসলাম।
সিলেট ব্যুরো জানায়, জুলাই গণহত্যায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে সিলেট নগরীতে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সিলেট মহানগর বিশাল গণমিছিল বের করে। শুক্রবার বাদ জুমা নগরীর ঐতিহাসিক কোর্ট পয়েন্ট থেকে গণমিছিল শুরু হয়ে চৌহাট্টা পয়েন্টে সমাবেশের মাধ্যমে উক্ত কর্মসূচি শেষ হয়।
কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগর সভাপতি শাহীন আহমদের সভাপতিত্বে ও মহানগর সেক্রেটারি শহিদুল ইসলাম সাজুর সঞ্চালনায় গণমিছিল-পরবর্তী সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ সম্পাদক শরীফ মাহমুদ।
সমাবেশে অন্যদের মধ্য উপস্থিত ছিলেন এবং বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও শাবিপ্রবি সভাপতি তারেক মনোয়ার, সিলেট জেলা পূর্বের সভাপতি মারুফ আহমদ, সিলেট জেলা পশ্চিম সভাপতি মনিরুজ্জামান পিয়াসসহ মহানগর নেতৃবৃন্দ।

 


আরো সংবাদ



premium cement

সকল