১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫ মাঘ ১৪৩১, ১৮ রজব ১৪৪৬
`
সিআইইউর সমাবর্তনে ফাওজুল কবির খান

বিগত সরকার প্রয়োজনীয় খাত ধ্বংস করেছে

-

জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, সমাবর্তন মানে শেষ নয়, বরং জীবনের নতুন অধ্যায়ের সূচনা মাত্র। তোমাদের মধ্য থেকে অনেকে ‘টপ অ্যাচিভার্স’ হয়েছে। অনেকের পক্ষে সেটি অর্জন সম্ভব হয়নি। উভয়কেই দেশের সমৃদ্ধি আনয়নে কাজ করতে হবে। বিগত সরকার শিক্ষা চিকিৎসাসহ প্রয়োজনীয় খাতগুলো ধ্বংস করেছিল। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নাজুক পর্যায়ে নিয়ে গেছে। বিচারব্যবস্থা প্রায় ধ্বংস করেছে। আশার কথা, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সবখাতে শৃঙ্খলা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে। প্রয়োজনীয় সংস্কার শুরু করেছে। এ সংস্কার কাজে তোমাদের সহযোগিতা করতে হবে। আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে আরো সম্পৃক্ত হতে হবে।

গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম বোট কাবে চিটাগং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির (সিআইইউ) দ্বিতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলরের প্রতিনিধি হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন। এবারের সমাবর্তন বক্তা ছিলেন ইয়ংওয়ান করপোরেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী (সিইও) কিহাক সাং। সমাবর্তনে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বিশ^বিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নুরুন আখতার। এতে আরো বক্তব্য রাখেন সিআইইউর ভিসি অধ্যাপক ড. মীর মোহাম্মদ নুরুল আবচার, ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান লুৎফে এম আইয়ুব, প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি মোহাম্মদ জাকারিয়া খান প্রমুখ ।

উপদেষ্টা বলেন, জীবনকে সফল করতে শুধু ভালো রেজাল্ট যথেষ্ট নয়। এর সাথে প্রয়োজন সৃজনশীলতা ও কঠোর অধ্যবসায়। দেখার বিষয়, দেশ ও জাতির জন্য তোমরা কি করতে পারো। তোমাদের বাবা-মা ও সমাজের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতে করতে কাজ করো। আমি বিশ^াস করি বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ ও প্রগতিশীল করতে সিআইইউর শিক্ষার্থীরা তাদের চলমান ধারা অব্যাহত রাখবে।
ফাওজুল কবির খান গ্র্যাজুয়েটদের বলেন, তোমরা বিপ্লবের অতন্দ্র প্রহরী। বিগত জুলাই আন্দোলনে তোমাদের মধ্য থেকে অনেকে আহত হয়েছে, অনেকে নিহত হয়েছে। অনেকে এখনো চিকিৎসাধীন। তিনি বলেন, অন্তর্র্বর্তী সরকার কোনো ব্যক্তির কাছে দায়বদ্ধ নয়। জুলাইয়ের শহীদ ছাত্র-জনতা ও আহতদের কাছেই শুধু আমাদের জবাবদিহিতা। বিগত সরকার সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে। আমরা বর্তমানে একটি বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে চেষ্টা করছি। আমদের সবাইকে শহীদদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে।

উপদেষ্টা বলেন, আমি মনে করি, আপনাদের প্রতিষ্ঠান পড়ালেখার পাশাপাশি সততা ও মূল্যবোধের শিক্ষা দিয়েছে, যা আপনারা আপনাদের কর্মজীবনে কাজে লাগাবেন। কর্মজীবনে আপনাদের নিজেদের প্রমাণ করতে হবে। অন্যের জন্য কাজ করার মানসিকতা তৈরি করতে হবে।
অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইয়ংওয়ান করপোরেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী (সিইও) কিহাক সাং।
তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের রয়েছে একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ। কঠোর পরিশ্রম, ধৈর্য ও সহনশীলতার মাধ্যমে আপনারা নিজেদের যোগ্য লিডার হিসেবে গড়ে তুলবেন। এটা আপনার বিশ্ব। আপনারা এ বিশ্বকে শাসন করার যে সুযোগ রয়েছে, তা কাজে লাগাবেন।
তিনি আরো বলেন, কোরিয়ায় আমি বাংলাদেশী হিসেবে পরিচিত। আর চট্টগ্রামে চিটাগনিয়ান হিসেবে। চট্টগ্রামবাসীর কারণেই আমাদের সমতা হয়েছে। আমি নিজেকে চট্টগ্রামের মানুষ ভেবে গর্ববোধ করি। কোরিয়া-বাংলাদেশের মধ্যে সেতু হিসেবে কাজ করছে এ অ্যাপারেলস সেক্টর।
এবারের সমাবর্তনে বিভিন্ন অনুষদের মোট দুই হাজার ১৮৯ জন শিক্ষার্থীকে ডিগ্রি প্রদান করা হয়। তন্মধ্যে এক হাজার ৪৫২ জন ব্যবসায় প্রকৌশল, আইন এবং লিবারেল আর্টস অনুষদ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন, অন্য ৭৩৭ জন স্নাতকোত্তর।
অনুষ্ঠানে ১৪ শিক্ষার্থীকে নিজ নিজ প্রোগ্রামে অসামান্য ফলাফলের জন্য ‘টপ অ্যাচিভার্স’ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।

 


আরো সংবাদ



premium cement