১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০২ মাঘ ১৪৩১, ১৫ রজব ১৪৪৬
`
চিকিৎসায় কোটি কোটি টাকা খরচ

তনির সব চেষ্টা ব্যর্থ করে স্বামীর বিদায়

তনির সব চেষ্টা ব্যর্থ করে স্বামীর বিদায় -

রুবিয়াত ফাতিমা তনির সব চেষ্টা ব্যর্থ করে বিদায় নিলেন তার স্বামী শাহাদাৎ হোসাইন। প্রায় চার মাস ব্যাংককে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত ৩টায় তিনি ইন্তেকাল করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তনির স্বামী ছিলেন একজন সফল ব্যবসায়ী। কিন্তু স্বামীর সাথে বয়সের ব্যাপক ব্যবধানের কারণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচিত হন তনি। অসুস্থ স্বামীকে সুস্থ করতে ব্যাংককে চিকিৎসায় সর্বাত্মক চেষ্টা করেছেন।
তনির ঘনিষ্ঠরা জানান, তিনি নিজের ব্যবসা, সন্তান ও স্বামী সবকিছু সামলাতে জীবনে কঠিন সময় পার করেছেন। স্বামীর চিকিৎসায় ব্যয় করেছেন কোটি কোটি টাকা। এয়ার অ্যা¤ু^লেন্সে করে স্বামীকে প্রথমে সিঙ্গাপুর নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে নিয়ে যান ব্যাংককে। এভাবে বিগত তিন মাসে স্বামীর কাছে এক দিন ব্যাংকক গেছেন তো তাকে দেখে আবার দেশে ফিরেছেন। কয়েকদিন ব্যবসায় সময় দিয়ে ফের ব্যাংককের ফ্লাইটে চড়েছেন। এভাবে করে রাত-দিন নির্ঘুম কাটিয়েছেন। কষ্ট করেছেন সীমাহীন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত স্বামীকে বাঁচাতে না পেয়ে গতকাল নিজেই ফেসবুকে মৃত্যুর সংবাদ জানিয়েছেন। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেয়া পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘সে আর নাই। ব্যাংকক সময় রাত ৩.০৩ মিনিটে আমাকে সারা জীবনের মতো একা করে চলে গেছে।’ শুধু এখানেই নয়, তার ব্যবসায়িক ফেসবুক পেজেও স্বামীর মৃত্যুর সময়টি উল্লেখ করে তনি লেখেন, ‘আমাদেরকে সারা জীবনের মতো একা করে চলে গেছে। আমি পারিনি তাকে বাঁচিয়ে রাখতে।’ এর আগে গত বছরের অক্টোবরে হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়েন শাহাদাৎ হোসাইন। এর পর থেকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয় তাকে। তখন তনি স্বামীর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘জীবনের সব থেকে কঠিন সময় পার করছি, আমি কোনোভাবেই তাকে হারাতে চাই না। সবকিছু অনিশ্চিত জেনেও আল্লাহর বিশেষ কোনো রহমতের আশায় অনেক কষ্ট করে আজকে সিঙ্গাপুর থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স বাংলাদেশে আনিয়ে তারপর ব্যাংকক নিয়ে আসছি। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। সবাইকে কাঁদিয়ে শাহাদাৎ চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
তনির স্বামী ছিলেন একজন সফল ব্যবসায়ী। যদিও দু’জনের বয়সের ব্যবধান নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কটাক্ষের মুখে পড়েন এই নারী উদ্যোক্তা। এসবের জবাবও দিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে নারী হিসেবে নিজের সাহসী প্রচেষ্টায় সফল উদ্যোক্তা হয়ে অন্যদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন তনি। তার ডিজাইন করা বিভিন্ন ধরনের শাড়ি এখন দেশে-বিদেশে বিক্রি হচ্ছে।
শাহাদাৎ হোসাইন তনির দ্বিতীয় স্বামী। প্রথম স্বামীর সাথে বনিবনা না হওয়ায় বিচ্ছেদের পথে হাঁটেন তিনি। এরপর ভালোবেসে বিয়ে করেন শাহাদাৎকে। প্রথমে পরিবার মেনে না নিলেও পরবর্তী সময়ে সব ঠিক করে নেন তনি। বর্তমানে ফ্যাশন হাউজ ‘সানভিস বাই তনি’-এর স্বত্বাধিকারী তনি। সারা দেশে তার ১২টি শোরুম রয়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement