১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০১ মাঘ ১৪৩১, ১৪ রজব ১৪৪৬
`

৮ বছর পর খুলছে সিলেট সুনামগঞ্জের ৯ পাথর কোয়ারি

-


সিলেট সুনামগঞ্জের গেজেটভুক্ত ৯টি কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধের সরকারি নিষেধাজ্ঞা বাতিল করেছে মন্ত্রণালয়। ফলে অফিসিয়াল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে পাথর কোয়ারিতে উত্তোলনের কর্মযজ্ঞ শুরু হচ্ছে আগামী সপ্তাহের মধ্যে। কোয়ারি খুলে দেয়ার খবরে আশপাশের এলাকায় আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পাঁচ লক্ষাধিক শ্রমিক ও লক্ষাধিক ব্যবসায়ীর দিন কাটছিল উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব সাবরিনা আফরিন মোস্তফা স্বাক্ষরিত এক স্মারকপত্রে ২০২০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি পাথর কোয়ারি বন্ধের যে সরকারি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল সোমবার (১৩ জানুয়ারি) তা বাতিল করে সরকারি এক আদেশ জারি করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়, ‘সারা দেশের গেজেটভুক্ত পাথর কোয়ারি, সিলিকাবালু কোয়ারি, নুড়ি পাথর, সাদা মাটি উত্তোলনসহ অন্যান্য সব কোয়ারির ইজারা আপাতত: বন্ধ থাকবে’ মর্মে গৃহীত সিদ্ধান্তটি এতদ্বারা নির্দেশক্রমে বাতিল করা হলো।
সিলেটের জেলা প্রশাসক শের মোহাম্মদ মাহবুব মুরাদ গতকাল দৈনিক নয়া দিগন্তকে জানান, মন্ত্রণালয়ের কোনো আদেশ তারা এখনো পাননি। তবে লোকমুখে তিনি শুনেছেন। আদেশ পেলে প্রক্রিয়া অনুসরণ করে যথাসম্ভব দ্রুত পাথর কোয়ারি খুলে দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সিলেট স্টোন ক্রাসার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক, বিশিষ্ট পাথর ও পর্যটন ব্যবসায়ী ইলিয়াস উদ্দিন লিপু গতকাল দৈনিক নয়া দিগন্তকে জানান, মৌসুমের সময় পেরিয়ে যাচ্ছে। মার্চ পর্যন্ত পাথর কোয়ারিতে কাজ করা যাবে, যা অত্যন্ত কম সময়। প্রশাসন ঢিলেমি না করে তাড়াতাড়ি অফিসিয়ালি কোয়ারি খুলে দেয়ার আয়োজন না করলে টাকা খরচ করেও ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এমনিতেই দীর্ঘদিন কোয়ারি বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীরা এখন পথে বসার মতো অবস্থায়। সবকিছু হারিয়ে তারা নিঃস্ব প্রায়।

জাফলং বল্লাঘাট পাথর ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি আনোয়ার হোসেন আনু বলেন, পাথর কোয়ারির নিষেধাজ্ঞা বাতিল করে সরকারি প্রজ্ঞাপন আমাদের হাতে এসেছে। তবে শুনেছি প্রশাসনের হাতে এখানো পৌঁছেনি। প্রশাসনের উচিত যতো দ্রুত সম্ভব কোয়ারি খুলে দেয়া। কারণ, মৌসুম পার হয়ে যাচ্ছে দ্রুত। কোয়ারি বন্ধ থাকায় গত সাত-আট বছর ধরে শ্রমিক ব্যবসায়ী মিলে ৮-৯ লাখ মানুষ অবর্ণনীয় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। তাড়াতাড়ি পাথর উত্তোলনের সুযোগ পেলে হয়তো এর সামান্য কিছু হলেও পুষিয়ে নেয়া যাবে।

২০১৮ সালে হাইকোর্টে পরিবেশবাদী সংস্থা পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) এক মামলায় এবং পরে সরকারিভাবে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে সিলেটের সবকটি পাথর কোয়ারি বন্ধ করে দেয়া হয়। এরও দুই বছর আগে থেকে স্থানীয় প্রশাসন প্রতিবেশী একটি দেশ থেকে এলসির মাধ্যমে পাথর আমদানি করার জন্য ষড়যন্ত্রমূলকভাবে কোয়ারি বন্ধ করে রাখে বলে অভিযোগ করে আসছেন ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা।
সিলেটের কোয়ারি বন্ধ থাকলে প্রতিবেশী একটি দেশের পাথর আমদানিতে এ দেশের কিছু ব্যবসায়ী ও প্রশাসনের লোকজন নানাভাবে লাভবান হন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক ব্যবসায়ীরা।
সিলেটের ব্যবসা-বাণিজ্যের মূল ভিত্তি ধরা হয় কোয়ারি কেন্দ্রিক ব্যবসাকে। এই ব্যবসায় শত শত ব্যবসায়ী হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেন। কিন্তু কোয়ারি বন্ধ করে দেয়ায় অনেকেই এখন নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন।

সিলেটের ইসলামী ব্যাংকের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ করার শর্তে নয়া দিগন্তকে জানান, আমাদের ব্যাংকের বিশাল বিনিয়োগ কোয়ারির পাথর ব্যবসার খাতে। কিন্তু দীর্ঘদিন কোয়ারি বন্ধ থাকায় অনেক ব্যবসায়ী এখন দেউলিয়া হয়ে পড়েছেন। ব্যাংকও মারাত্মক সঙ্কটে পড়েছে।
কোয়ারি চালু হলে হয়তো ব্যবসায়ীরা আমাদের ঋণ পরিশোধে এগিয়ে আসবেন। আমরা কোয়ারি খোলার খবরে উন্মুখ হয়ে বসে আছি।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement
এনআইডি সেবা হাতে রাখতে প্রধান উপদেষ্টা ও তিন মন্ত্রণালয়কে ইসির চিঠি বিশ্বকাপ খো খো : কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অগ্নি-প্রতিরোধ মহড়া ১৯ জানুয়ারি পাটগ্রামে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ায় মদের বোতল দিল বিএসএফ ফায়ার সার্ভিসের ৬ কর্মকর্তার পদোন্নতি আরো ১৪ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাব তলব কারাজীবনের অবসান, কাল মুক্তি পাচ্ছেন লুৎফুজ্জামান বাবর সীমান্ত ইস্যু এক দিনে সমাধান সম্ভব নয় : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা স্বচ্ছ কাঁচের ঘরে রিমান্ডের সুপারিশ পুলিশ সংস্কার কমিশনের রেস্তোরাঁ খাতে ভ্যাট পুনর্নির্ধারণের সিদ্ধান্ত এনবিআরের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায় ৯০ শতাংশ মানুষ : সংস্কার কমিশন

সকল