১০ জানুয়ারি ২০২৫, ২৬ পৌষ ১৪৩১, ৯ রজব ১৪৪৬
`

পিলখানা হত্যার পুনঃতদন্ত দাবিতে ফের শাহবাগ অবরোধ

বিডিআর বিদ্রোহে চাকরিচ্যুতরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে যেতে চাইলে শাহবাগে বাধা দেয় পুলিশ : নয়া দিগন্ত -

পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার ‘নিরপরাধ জওয়ানদের’ মুক্তি ও পুনঃতদন্তসহ তিন দাবিতে শাহবাগ অবরোধ করেছেন স্বজনরা। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১টায় শহীদ মিনার থেকে পদযাত্রা শুরু করে দেড়টার দিকে তারা শাহবাগে পেঁৗছান। তারা শাহবাগ মোড়ে বসে পড়লে গুরুত্বপূর্ণ ওই চৌরাস্তা হয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে ২ ঘণ্টা শাহবাগ অবরোধের পর শহীদ মিনারে ফিরে আসেন আন্দোলনকারীরা। সড়ক ছাড়লে শাহবাগের আশপাশের এলাকায় যানচলাচল স্বাভাবিক হয়। এদিকে শহীদ মিনারে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আন্দোলনে সবাইকে সংযুক্ত করার জন্য আগামী শুক্র ও শনিবার অনলাইন এবং অফলাইনে জেলায় জেলায় গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালনের আহ্বান করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার। আগামী রোববার প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করা হবে বলে জানান তিনি।
আন্দোলনকারীদের দাবি, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার নীলনকশার অংশ হিসেবেই ২০০৯ সালে পরীক্ষিত সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা করা হয়। একই সাথে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয় বিডিআর সদস্যদের। বিডিআর সদস্যদের বিরুদ্ধে করা বিস্ফোরক মামলায় সবার জামিনের পাশাপাশি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কারাগারে থাকা সদস্যদের মুক্তি দিতে হবে। এছাড়া বিজিবির পূর্বনাম বিডিআর ফিরিয়ে আনা, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের দিনটিকে সেনা হত্যা দিবস ঘোষণা এবং জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রে বিডিআর সদস্যদের দাবিগুলোও অন্তর্ভুক্ত করার কথাও জানান তারা।

গণ অধিকার পরিষদের দফতর সহসমন্বয়ক আরিফ বিল্লাহ বলেন, বিডিআর সদস্যরা ষড়যন্ত্রের শিকার। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কমিটি গঠন করতে চেয়েছিলেন। আমরা গণ অধিকার থেকে কমিশনের দাবি করেছিলাম।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সাইফুল ইসলাম বলেন, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে আমাদের মেরুদণ্ড ভেঙে দেয়া হয়। বাংলাদেশকে ভারতের তাঁবেদারি রাষ্ট্রে পরিণত করতে, আওয়ামী ফ্যাসিবাদ কায়েম করতেই বিডিআর হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। সীমান্তে বিজিবি নয় বাংলাদেশ রাইফেলস ফিরয়ে আনতে হবে। সীমান্তে প্রায় দুই হাজার হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। যুদ্ধকালীন অবস্থা ছাড়া সীমান্তে এমন নজির নাই। এসব হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে।
এদিকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, বিডিআর সদস্যদের দুই দিনের অবস্থান কর্মসূচির পরও আশানুরূপ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি সরকার। তবে আলটিমেটাম দেয়ার পর যোগাযোগ করে দাবি-দাওয়া যৌক্তিক বলে জানানো হয়েছে। আলোচনার জন্য সভা ডেকেছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, বিডিআর হত্যাকাণ্ড মামলার পরবর্তী শুনানি ১৯ জানুয়ারি হবে। এই শুনানির সময়সীমা অনেক বেশি দীর্ঘ। আদালতে আগুন দেয়া বিশাল ষড়যন্ত্রের অংশ। আমরা মনে করছি সরকারের ওপর একটি বিশেষ মহল চাপ প্রয়োগ করছে।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দফতরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। এ ঘটনায় ১৩৯ আসামির মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হয় ১৮৫ জনকে, আরো ২২৮ জনকে দেয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদে সাজা, খালাস পান ২৮৩ জন। খালাস বা সাজাভোগ শেষে এখনো বিস্ফোরক মামলার কারণে ৪৬৮ জনের মুক্তি আটকে আছে।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল