ড. মুহাম্মদ ইউনূস আল-আজহার শিক্ষার্থীদের যেসব বিষয়ে অনুপ্রাণিত করেছেন
- এলামী মো: কাউসার মিসর
- ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:১২
মিসরের রাজধানী কায়রোতে অবস্থিত বিশ্ববিখ্যাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত ১৯ ডিসেম্বর ভাষণ প্রদান করেন। এ সময় তিনি অনুপ্রাণিত করতে কয়েকটি বিষয় তুলে ধরেন। বিষয়গুলো হলো-
১. দারিদ্র্য ও সামাজিক উন্নয়ন : ড. ইউনূস পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে দারিদ্র্যের মোকাবেলা এবং তা কাটিয়ে উঠতে ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থার কার্যকারিতা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সামাজিক উদ্যোক্তা হওয়ার মাধ্যমে দারিদ্র্য দূর করা সম্ভব।
২. ২. মানবাধিকার ও সমতার গুরুত্ব : তিনি মানবাধিকার এবং সব মানুষের জন্য সমতা প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, মানবিক উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন একে-অপরের পরিপূরক।
৩. ৩. গ্রামীণ ব্যাংকের ভূমিকা : তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের মডেল এবং এর মাধ্যমে দরিদ্রদের স্বনির্ভর করে তোলার প্রভাব সম্পর্কে আলোচনা করেন। তার মতে, ক্ষুদ্রঋণ একটি শক্তিশালী হাতিয়ার, যা মানুষের জীবনমান উন্নত করতে সাহায্য করে।
৪. ৪. বিশ্বব্যাপী শিক্ষার গুরুত্ব : তিনি শিক্ষাকে সামাজিক পরিবর্তন এবং উন্নয়নের মূল চালিকা শক্তি হিসেবে তুলে ধরেন। তিনি তরুণদের উদ্যোক্তা হিসেবে সমাজের পরিবর্তন সাধনে উৎসাহিত করেন।
৫. ৫. টেকসই উন্নয়ন : ড. ইউনূস টেকসই উন্নয়নের গুরুত্ব নিয়ে কথা বলেন, যা শুধু অর্থনৈতিক বৃদ্ধি নয়; বরং পরিবেশ, সামাজিক দৃষ্টিকোণ এবং প্রজন্মের ভবিষ্যৎ কল্যাণের দিকেও মনোযোগ দেয়। তিনি বলেন, যদি আমরা প্রাকৃতিক সম্পদ নষ্ট করি এবং পরিবেশের প্রতি যতœ না নিই, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য পৃথিবী বসবাসের অযোগ্য হয়ে যাবে।
৬. ৬. গ্লোবালাইজেশন এবং বৈশ্বিক সহযোগিতা : ড. ইউনূস গ্লোবালাইজেশনের যুগে বৈশ্বিক সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, একক দেশ বা অঞ্চলের মধ্যে সমস্যা সমাধান এখন আর সম্ভব নয়, সুতরাং বৈশ্বিক সহযোগিতা এবং পারস্পরিক সাহায্যই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ।
৭. ৭. বিশ্বের বড় চ্যালেঞ্জগুলো : তিনি বর্তমান বিশ্বে যেসব বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেমন পরিবেশগত সঙ্কট, দারিদ্র্য, স্বাস্থ্যসেবা, এবং শিক্ষার অভাব, এসব সমাধান করতে বিশ্বের সবাইকে একত্রিত হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।
৮. ৮. প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন : ড. ইউনূস বলেছেন, প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবন মানবতার কল্যাণে ব্যবহৃত হলে তা সমাজের সবচেয়ে বড় শক্তি হতে পারে। তিনি প্রযুক্তির ব্যবহারকে এক নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখেন, যা দারিদ্র্য দূরীকরণের জন্য কার্যকর হতে পারে।
৯. ৯. মূল্যবোধের পরিবর্তন : তিনি বিশ্বাস করেন যে, মানব সমাজে শুধু অর্থনৈতিক মূল্য নয়; বরং মানবিক এবং নৈতিক মূল্যও গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘অর্থ কেবল একটি উপকরণ; কিন্তু মানুষের আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে সমাজের জন্য ভালো কিছু করা।’
১০. ১০. উদ্যোক্তা হওয়ার গুরুত্ব : তিনি ছাত্রদের উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য উৎসাহিত করেন এবং বলেন, ‘তোমরা সবাই ভবিষ্যতের নেতা, আর নেতৃত্ব কেবল একটি প্রতিষ্ঠান বা দেশের নয়; বরং পুরো পৃথিবীকে উন্নতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন।’
১১. ১১. সমাজের জন্য কিছু করা : তিনি ছাত্রদের বলেন, শুধু নিজের জন্য নয়, তোমরা যদি সমাজের জন্য কিছু করতে পারো, তাহলে তুমিই প্রকৃত সফল ব্যক্তি।
১২. ১২. বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কেবল চাকরির জন্য নয় : ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কেবল চাকরি পাওয়ার জন্য নয়; বরং তা তোমাদের একটি সমাজের দায়িত্বশীল সদস্য হিসেবে তৈরি করার জন্য।’
১৩. ১৩. সম্ভাবনার প্রতি বিশ্বাস : তিনি ছাত্রদের বলেন, ‘তোমরা যদি নিজের ওপর বিশ্বাস রাখো, তাহলে কিছুই তোমাকে থামাতে পারবে না।’
১৪. ১৪. মানবিক মূল্যবোধ : ‘শুধু বৈজ্ঞানিক বা ব্যবসায়িক শিক্ষা নয়, তোমাদের উচিত মানবিক মূল্যবোধ শেখা, যেন তোমরা সবসময় সততা, নৈতিকতা এবং সহানুভূতির সাথে কাজ করতে পারো।’ ড. ইউনূস তার ভাষণে সবাইকে একত্রিত হয়ে পৃথিবীকে একটি উন্নত ও শান্তিপূর্ণ স্থান হিসেবে গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন এবং সমাজের কল্যাণে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে ছাত্রদের উৎসাহিত করেছেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা