বাংলাদেশে হস্তক্ষেপ করতে ট্রাম্প-বাইডেনকে প্রবাসী হিন্দুদের চিঠি
- কূটনৈতিক প্রতিবেদক
- ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩৪
সংখ্যালঘুদের রক্ষায় বাংলাদেশে হস্তক্ষেপ করতে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছে প্রবাসী হিন্দুদের একটি সংগঠন। এ দিকে সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার এবং পরবর্তী ঘটনাবলি নিয়ে গতকাল ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে বৈঠক করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তারা বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর সাম্প্রতিক নির্যাতন বেড়ে যাওয়ার কথিত অভিযোগ নিয়ে আলোচনা করেছেন। বিষয়টি নিয়ে একই দিন ভারতের লোকসভা এবং পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায়ও আলোচনা হয়েছে।
গতকাল ভারতের দ্য হিন্দু পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাইডেন ও ট্রাম্পকে লেখা পৃথক চিঠিতে দ্য ফাউন্ডেশন ফর ইন্ডিয়া অ্যান্ড ইন্ডিয়ান ডায়াসপারা স্টাডিস (এফআইআইডিএস) বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার ক্রমবর্ধমানভাবে লঙ্ঘন এবং হিন্দুদের নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
চিঠিতে এফআইআইডিএস চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে মুক্তি ও সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দেয়া এবং ধর্মনিরপেক্ষতার নীতিগুলো সমুন্নত রাখতে প্রকাশ্যে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করতে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আহ্বান জানানোর জন্য প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে অনুরোধ জানিয়েছে।
অপর চিঠিতে সংগঠনটি চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে মুক্তি, ইসকনের কর্মকাণ্ডকে সচল রাখা এবং অধিকতর সহিংসতা থেকে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দেয়ার জন্য বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে আহ্বান জানানোর জন্য ট্্রাম্পের প্রতি অনুরোধ করা হয়েছে। এতে একই সাথে ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানকে সমুন্নত রাখা এবং গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠায় সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বাংলাদেশকে তাগাদা দেয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
ভারতের অপর গণমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, লোকসভায় কয়েকজন সংসদ সদস্য বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন। তারা জানতে চান, বাংলাদেশে হিন্দু মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা বেড়েছে কি না। ভারত সরকার এই বিষয়টি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে উত্থাপন করেছে কি না।
এসব প্রশ্নের জবাবে ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিং বলেন, বাংলাদেশে গত কয়েক মাসে হিন্দু মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা শোনা গেছে। ভারত সরকার এ ব্যাপারে নিজেদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে তাঁতিবাজারে পূজামণ্ডপে হামলা, সাতক্ষীরার কালী মন্দির থেকে দুর্গাপূজার সময় সোনার মুকুট চুরির ঘটনা। তিনি বলেন, ভারত সরকার হিন্দুসহ সব সংখ্যালঘুর প্রার্থনাস্থলের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। এ ছাড়া সংখ্যালঘুসহ দেশটির সব নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের বলে জানিয়ে দিয়েছে ভারত।
অন্য দিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভায় বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বাংলাদেশ একটি ভিন্ন দেশ। ভারত সরকার এটি দেখবে। এটি আমাদের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে না। আমাদের এটি নিয়ে কথা বলা বা হস্তক্ষেপ করার কথা নয়। আমরা ভেতরে ভেতরে দুঃখ পেলেও কেন্দ্রের নির্ধারিত নীতি অনুসরণ করি। বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে তিনি পশ্চিমবঙ্গে ইসকনের প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলেছেন বলেও জানিয়েছেন।
কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন ঘেরাওয়ের চেষ্টা
ভারতের কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন ঘেরাওয়ের চেষ্টা করেছে দেশটির কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন হিন্দু মহাসভার সদস্যরা। এ সময় বাধা দেয়ায় পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছেন তারা। গতকাল দুপুরে এই ঘটনা ঘটেছে বলে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে।
রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতারের পর থেকে গত কয়েকদিন ধরে তার মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করছে ভারতের হিন্দুত্ববাদী বিভিন্ন সংগঠন। টাইমস অব ইন্ডিয়া বলেছে, হিন্দু মহাসভার সদস্যরা যখন বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনের কাছে পৌঁছে যায়, তখন তাদের বাধা দেয় পুলিশ। ওই সময় হিন্দু মহাসভার কয়েকজন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মহাসভার সদস্যরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে এক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা