২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
সিপিডির সংলাপে বক্তারা

জ্বালানির দাম সমন্বয়ে সরকারের তৈরি সূত্র সংশোধন দরকার

জ্বালানির দাম নির্ধারণ নিয়ে সেমিনারে অতিথিরা : নয়া দিগন্ত -

- জ্বালানি তেলের দাম ১০ থেকে ১৫ টাকা কমানো সম্ভব
- জ্বালানি তেলের দাম গ্রাহকের ক্রয়ক্ষমতায় রাখা প্রয়োজন

জ্বালানি তেলের দাম বাজারভিত্তিক হলে এখনই প্রতি লিটারে ১০ থেকে ১৫ টাকা কমানো সম্ভব বলে মনে করছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সংস্থাটি বলছে, জ্বালানি তেলের দাম নিয়মিত সমন্বয়ে সরকারের তৈরি সূত্র সংশোধন করার প্রয়োজন আছে। এতে জ্বালানি তেলের দাম কমানোর সুযোগ আছে। জ্বালানি খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) মাধ্যমে দাম নির্ধারণের সূত্র তৈরি করা যেতে পারে। প্রতিযোগিতামূলক দাম নির্ধারণ করতে চাইলে গ্রাহকের স্বার্থের বিষয়টি মাথায় রাখা উচিত। জ্বালানি তেলের দাম গ্রাহকের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা প্রয়োজন। পাশাপাশি মুদ্রার অবমূল্যায়নের কারণে মূল্য বাড়লে পরে তা সমন্বয় করা যেতে পারে।
রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল ‘বাজারভিত্তিক জ্বালানি নির্ধারণ : সরকারের নেতৃত্বে পদক্ষেপ ও সম্ভাব্য সংশোধন’ শীর্ষক এক সেমিনারের লিখিত নিবন্ধে সিপিডি এসব তথ্য ও অভিমত জানিয়েছে। প্রতিষ্ঠানের গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জ্যেষ্ঠ গবেষণা সহযোগী হেলেন মাশিয়াত প্রিয়তী ও প্রোগ্রাম অ্যাসোসিয়েট ফয়সাল কাইয়ুম।
প্রবন্ধে সিপিডি বলছে, বাজারভিত্তিক ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে মূল্য নির্ধারণ হলে ডিজেলের দাম প্রতি লিটারে সাড়ে ১০ টাকা, কেরোসিনের দাম ৮.১০ টাকা, পেট্রলের দাম ১১.৩২ টাকা ও ফার্নেস অয়েলের দাম ০.৭১ টাকা কমানো সম্ভব। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনকে (বিইআরসি) জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণ করার দায়িত্ব, কর্তৃত্ব বা মূল্য নির্ধারণ মডেল তৈরি করার আইনিকাঠামো দেয়ার প্রস্তাব দেয় সিপিডি। তারা বলছে, বিইআরসি গণশুনানির মাধ্যমে ভোক্তার মতামত নেবে। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটি দাম নির্ধারণ নীতিমালা দ্রুত বাস্তবায়ন জরুরি।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়ম করপোরেশন (বিপিসি) কোন মডেল বা কোন আইনে জ্বালানির দাম নির্ধারণ করে তা পরিষ্কার নয়। দাম নিয়ে ভোক্তারাও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না। ২০১৫ সাল থেকে তারা ভর্তুকি পায় না, কেননা তারা মুনাফা করে। জ্বালানি তেলের মূল্য বাড়িয়ে ক্ষতি সমন্বয় করে।
বিইআরসির চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ বলেন, জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণের সূত্র তৈরি নিয়ে আমরা কাজ করবো। বিআইরসির মাধ্যমে দাম নির্ধারণে কোনো জটিলতা থাকার কথা নয়।
বিপিসি চেয়ারম্যান আমিন উল আহসান বলেন, সব খরচ আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। শুল্ক, কর সরকারের হাতে। তবে জ্বালানি তেলের আমদানি মূল্য বিপিসি কমাতে পারে। ইতোমধ্যে এটি কমানো শুরু হয়েছে। মজুদের সক্ষমতা বাড়াতে পারলে সরবরাহকারীদের সাথে দর কষাকষি আরো বাড়ানো যাবে।
ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম বলেন, বিইআরসির কাছে না দিয়ে জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণ সরকারের হাত রাখতে জ্বালানি উপদেষ্টার সিদ্ধান্ত হতাশ করেছে। দ্রুত বিধিমালা জারি করে এটি বিইআরসির হাতে দিতে হবে। না হলে এলপিজির মতো এটিও আদালতের মাধ্যমে বাধ্য করা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement