দুর্যোগে নারীদের সুরক্ষায় সর্বোত্তম পদক্ষেপ নেয়ার তাগিদ নাগরিক সমাজের
- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০১:০৩
ন্যূনতম সচেতনতা ও সংবেদনশীলতার অভাব, সেই সাথে জরুরি সেবা-সহায়তা না পাওয়ায় যে কোনো দুর্যোগে নারীদের সুরক্ষায় বিষয়টি বরাবরই অবহেলিত থাকে। ফলে তারা দীর্ঘ মেয়াদে শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির সম্মুখীন হন। এ কারণে দুর্যোগে যে কোনো ধরনের ত্রাণ ও সেবা কার্যক্রম পরিচালনার সময় নারীদের সুরক্ষা গুরুত্বের সাথে বিবেচনার তাগিদ দিয়েছেন অধিকারভিত্তিক নাগরিক সমাজ প্রতিনিধিরা।
আজ আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস। এ উপলক্ষে গতকাল দিবসটি উদযাপন জাতীয় কমিটি আয়োজিত এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তারা এ কথা বলেন।
বক্তারা আরো বলেন, দুর্যোগে একজন নারীর শারীরিক, আর্থিক এবং মানসিক ক্ষতির বিষয়টি অদৃশ্য করে রাখা হয়। এ কারণে দুর্যোগে ও পরবর্তী সঙ্কটকে চিহ্নিত করে সেসব নিরসনে সরকারি ও বেসরকারিভাবে নারীবান্ধব ও সংবেদনশীল পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।
আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস উদযাপন জাতীয় কমিটির প্রধান শামীমা আক্তারের সভাপতিত্বে এবং ফেরদৌস আরা রুমীর সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন কোস্ট ফাউন্ডেশেনের কর্মসূচি কর্মকর্তা খাদিজাতুল কুবরা। এতে নাগরিক সমাজের পক্ষে আরো বক্তব্য রাখেন কমিটির সদস্য মথুরা ত্রিপুরা (খাগড়াছড়ি), তোফাজ্জল সোহেল (হবিগঞ্জ), সাইদ (বগুড়া), মো: খলিলুর রহমান (ঝালকাঠি), আইনুন নাহার (ময়মনসিংহ), রতœা বর্মন (খুলনা), ফিরোজা বেগম (লালমনিরহাট), জাফরুল আলম (চাঁপাইনবাবগঞ্জ), স্বর্ণা (বিএনএনআরসি), মোস্তফা কামাল আকন্দ প্রমুখ।
মূল বক্তব্যে খাদিজাতুল কুবরা বলেন, এবারের পূর্বাঞ্চলের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ৫১ লাখের বেশি। যে কোনো দুর্যোগে নি¤œ আয়ের কিংবা প্রান্তিক মানুষরা সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাদের মধ্যে শিশু ও নারীরা আরো বেশি দুর্ভোগে পড়ে। এবারের বন্যায় নারীরা গবাদিপশু ও জিনিসপত্র রক্ষার জন্য অনেকে রাতের পর রাত ছাদে এবং নৌকায় কাটায়। শিশুরা ভেজা কাপড়ে থেকে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে নারীদের মাসিক স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। পরিষ্কার পানি এবং স্যানিটারি প্যাডের অভাবে তারা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দিন কাটায়। প্রজনন স্বাস্থ্য সেবা বা চিকিৎসাসেবা অপ্রতুল থাকায় গর্ভবতী নারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়নি। এদিকে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর পরিবেশও ছিল খুবই প্রতিকূল। সীমিত জায়গা, নারীদের পৃথক টয়লেট না থাকায় এবং বিশুদ্ধ পানির অভাবে মানুষের মধ্যে মানসিক চাপ বেড়ে যায়। একই সাথে এটা নারীদের নিরাপত্তা এবং মর্যাদার ওপর ব্যাপক মাত্রায় প্রভাব ফেলে।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে মোস্তফা কামাল আকন্দ বলেন, দেশের ৫০টির বেশি জেলায় উদযাপন করা হচ্ছে আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস। প্রতি বছরের মতো এবারো সারা দেশে র্যালি, সেমিনার, মানববন্ধন, মেলা আয়োজন এবং গ্রামীণ নারীদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য সম্মাননা প্রদানসহ নানা কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করা হচ্ছে।