শেরপুরের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ৩৫ শতাংশ শিশু স্কুলবিমুখ
- বিশেষ সংবাদদাতা
- ০১ অক্টোবর ২০২৪, ০০:৩৭
শেরপুর জেলায় বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ৩৫.৭৭ শতাংশ শিশু শিক্ষা বা বিদ্যালয় বিমুখ। এরা স্কুলেই যায় না। মাত্র ৩.২৪ শতাংশ হলো সর্বোচ্চ স্নাতক বা তার চেয়ে বেশি শিক্ষাগ্রহণ করেছে বলে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক জরিপে তথ্য বেরিয়ে এসেছে। বিবিএস বলছে, এই জেলায় মোট ১৬টি জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সর্বোচ্চ ৪৪.০২ শতাংশ হলো গারো। এ ছাড়া সবচেয়ে কম ২৭.৬৯ শতাংশ হলো বর্মন। তবে হাজং আছে ৫.৪ শতাংশ। এ জেলায় মোট ২০ হাজার ৮৪০ জন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ বাস করে।
আগারগাঁওস্থ পরিসংখ্যান বুরোর ভবনে গতকাল শেরপুর ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর আর্থসামাজিক অবস্থার জরিপ ২০২৪ এর প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য্য জানান প্রকল্প পরিচালক ও সংস্থার উপ-পরিচালক ফারহানা সুলতানা। বিবিএসের মহাপরিচালক মো: মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের (এসআইডি) সচিব মো: মাহবুব হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মফিদুর রহমান এবং শেরপুর জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) হাফিজা জেসমিন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জরিপের প্রকল্প পরিচালক ফারহানা সুলতানা।
বিবিএস জানায়, শেরপুর জেলায় ২০ হাজার ৮৪০ জন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ বসবাস করছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বসবাস করেন গারো ৪৪ দশমিক ০২ শতাংশ, দ্বিতীয় অবস্থানে বর্মা জনগোষ্ঠীর ২৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ, তৃতীয় অবস্থানে কোচ ১০ দশমিক ২৪ শতাংশ। এ ছাড়া হোডি ৯ দশমিক ১৯ শতাংশ, হাজং ৫ দশমিক ৪০ শতাংশ, ডালু ৩ দশমিক ২৫ শতাংশ এবং অন্যান্য ০ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
প্রকল্প পরিচালক ফারহানা সুলতানা তথ্য তুলে ধরে বলেন, নারী পুরুষের সমতার ক্ষেত্রে প্রতি ১০৪ পুরুষের বিপরীতে নারী রয়েছে ১০০ জন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পার্থক্য কোচদের মধ্যে আর কম ডালু জনগোষ্ঠীর মধ্যে। এ ছাড়া ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জনগোষ্ঠীর মধ্যে ৩৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ স্কুলের বাইরে রয়েছে। গ্র্যাজুয়েট রয়েছে মাত্র ৩ দশমিক ২৪ শতাংশ। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জনগণের মধ্যে সাপ্লাইয়ের পানি পান করেন মাত্র ১ দশমিক ৮৯ শতাংশ। টিউবওয়েলের পানি পান করেন ৮৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ। পাশাপাশি পুকুরসহ যেসব এলাকার পানি পান করা নিরাপদ নয় সেসব উৎস থেকে পানি পান করেন ২ দশমিক ৬৭ শতাংশ মানুষ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শেরপুরের ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর মধ্যে শিক্ষার হার ৬৪ দশমিক ০৮ শতাংশ। এ ছাড়া কর্মসংস্থানের হার ৫১ দশমিক ৮৪ শতাংশ। এর মধ্যে গ্রামে ৫১ দশমিক ৬৩ শতাংশ এবং শহরে ৫৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ। পাশাপাশি বেকারের হারের ক্ষেত্রে শেরপুরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মধ্যে ৩ দশমিক ৮০ শতাংশ। আয়ের উৎসের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি কাজ করে কৃষিতে ৬৫ দশমিক ০২ শতাংশ, সেবা খাতে ২১ দশমিক ৩৮ শতাংশ এবং রেমিট্যান্স আয় করে ১ দশমিক ৪২ শতাংশ। জেলাভিত্তিক ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মধ্যে প্রতিবন্ধীর হার ১ দশমিক ৮৪ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি ডালু জনগোষ্ঠীর মধ্যে, ২ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
মাহবুব হোসেন বলেন, এটি পাইলট প্রকল্পের আওতায় শেরপুর জেলা প্রশাসকের অনুরোধে করা হয়েছে। আগামীতে সারা দেশব্যাপী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষের মধ্যে একটি জরিপ পরিচালনা করা যায় কি না সেটি ভেবে দেখা হবে।
মফিদুর রহমান বলেন, আমরা সারা দেশব্যাপী একটি সংস্কৃতি জরিপ পরিচালনার উদ্যোগ নিয়েছি। ইতোমধ্যেই প্রস্তুতিও চলছে। আশা করছি, ওই জরিপ হলে অনেক বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির চিত্র উঠে আসবে।
মিজানুর রহমান বলেন, আজ কি ফাইন্ডিং প্রকাশ করা হয়েছে। সুতরাং এখানে পুঙ্খানুপুঙ্খ অনেক কিছুই থাকবে না। এরপর মূল প্রতিবেদনে সব কিছুই উঠে আসবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা