২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

আশ্রয়কেন্দ্র টার্গেট করে হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল

-


গাজার উপত্যকার আল-শাতি শরণার্থী শিবিরের কাফর কাসিম স্কুলে ইসরাইলি বোমা হামলায় অন্তত সাতজন নিহত এবং বহু ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে। স্কুলটিতে শত শত বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি আশ্রয়ে রয়েছে। গতকাল রোববার সেখানে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। ফিলিস্তিনি চিকিৎসকরা এই তথ্য জানিয়েছেন। এটিই প্রথম নয় যে ইসরাইল বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের স্কুলের আবাসস্থলকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। গাজার মিডিয়া অফিসের মতে, ইসরাইল এখন পর্যন্ত ১৮১টি বাস্তুচ্যুত ও আশ্রয় কেন্দ্রে বোমা হামলা চালিয়েছে।
এর আগে শনিবার ফিলিস্তিনের গাজা সিটির এক স্কুলে ইসরাইলি হামলায় অন্তত ২২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় বিচ ক্যাম্পের কাফর কাসেম স্কুলে হামলা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে হামাস পরিচালিত গণপূর্ত ও বাসস্থান মন্ত্রণালয়ের পরিচালক মাজেদ সালেহও রয়েছেন। ইসরাইলের সামরিক বাহিনী বলেছে, হামাস যোদ্ধাদের লক্ষ্যবস্তু করে হামলা করেছে তারা। এ সময় বেসামরিক নাগরিকদের ঝুঁকি সীমিত করতে বিমান নজরদারিসহ অন্যান্য পদক্ষেপও নিয়েছে। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের বিরুদ্ধে ইসরাইলের অভিযোগ, সামরিক উদ্দেশ্যে হাসপাতাল ও অন্যান্য বেসামরিক ভবন ব্যবহার করছে তারা। তবে এমন অভিযোগ বারবার অস্বীকার করেছে হামাস।

ইসরাইলি বর্বরতায় নিহত আরো শতাধিক ফিলিস্তিনি
গাজায় ইসরাইলি বর্বর হামলায় আরো শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। শেষ ৭২ ঘণ্টায় এই প্রাণহানি হয়েছে। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা প্রায় ৪১ হাজার ৪০০ জনে পৌঁছেছে। এ ছাড়া গত বছরের অক্টোবর থেকে চলা এই হামলায় আহত হয়েছেন আরো ৯৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকা জুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরাইল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। এ ছাড়া ইসরাইলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
ইসরাইলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসঙ্ঘের মতে, ইসরাইলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সঙ্কটের মধ্যে গাজার সবাই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন। এ ছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরাইল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।

ইসরাইলি বুলডোজারে হামলা হামাসের :
অন্যদিকে হামাসের সামরিক শাখা আল কাসসাম ব্রিগেড বলেছে, তাদের যোদ্ধারা ইসরাইলি সেনাবাহিনীর একটি ডি৯ সামরিক বুলডোজারকে এন্টি-আর্মার শেল দিয়ে আঘাত করেছে। গতকাল রোববার গাজা উপত্যকায় কাসসাম ব্রিগেডের দাবি করা দুটি হামলার মধ্যে এটিই প্রথম। দলটি বলেছে যে এটি দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহরের পূর্বে আশ-শাওকা এলাকায় হয়েছে। এতে আরো বলা হয় যে তাদের যোদ্ধারা একই এলাকায় একটি বিস্ফোরক ডিভাইস দিয়ে ইসরাইলি সৈন্যদের আঘাত করেছে। শনিবার দলটি পূর্ব রাফাহ অঞ্চলের একটি পাড়ায় আরেকটি বুলডোজার আঘাত করার দাবি করেছে এবং বলেছে যে হামাস যোদ্ধারা দুটি বাড়িতে আঘাত করেছে যেখানে ইসরাইলি সৈন্যরা লুকিয়েছিল। হামাস বলেছে যে বাড়িগুলোতে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধে বৈশ্বিক পদক্ষেপের আহ্বান থুনবার্গের
ফিলিস্তিনে ইসরাইলের ‘গণহত্যা’র নিন্দা জানিয়ে এ ক্ষেত্রে বৈশ্বিক পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সুইডিশ জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। শনিবার স্টকহোমে হাজার হাজার বিক্ষোভকারীদের সাথে অংশ নিয়ে তিনি এ আহ্বান জানান। স্টকহোমের এ সমাবেশে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ অংশ নেয়। সেই সমাবেশে থুনবার্গ বলেছেন, ফিলিস্তিনে ইসরাইলের ‘গণহত্যা’ অত্যন্ত ‘ভয়ঙ্কর’।
২১ বছর বয়সী জলবায়ু কর্মী তুরস্কের সংবাদ সংস্থা আনাদোলুকে জানান, তিনি বুঝতে পারেন না, ফিলিস্তিনে যা ঘটছে তা দেখেও মানুষ কিভাবে নির্বিকার থাকতে পারে এবং নির্বিঘ্নে তাদের জীবনযাপন চালাতে পারে! গ্রেটা থুনবার্গ বলেন, গণহত্যার সময় নীরব থাকা মানে এর সহযোগী হওয়া। সেই সাথে তিনি ইসরাইল, ইসরাইলি কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে বয়কট করার এবং এগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের গুরুত্ব তুলে ধরেন। স্টকহোমে বিক্ষোভটি বিভিন্ন এনজিওর আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়। যেখান থেকে গাজা উপত্যকায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং মানবিক সহায়তার জন্য অবাধ প্রবেশাধিকার দাবি করা হয়। বিক্ষোভকারীরা ‘গাজায় শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে’ এবং ‘গণহত্যা বন্ধ করুন’ লেখা বিভিন্ন ব্যানার বহন করছিলেন এবং ‘ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা’ বলেও স্লোগান দেন।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement
শ্রীপুরে আরো ৩ শহীদ পরিবারকে জামায়াতের অর্থ সহায়তা গাজার আল-শিফা হাসপাতাল ইসরাইলি ধ্বংসযজ্ঞের প্রতীক কুলাউড়ায় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কিশোরীকে ধর্ষণ, যুবক গ্রেফতার ছাত্রলীগের পদ নিয়ে যে ব্যাখ্যা দিলেন শিবিরের ঢাবি সেক্রেটারি ইবির ১৪তম ভিসি হলেন অধ্যাপক ড. নকীব পাকুন্দিয়ায় বাস-অটোরিকশা মুখোমুখি সংঘর্ষে আহত ৪ ভারতে গুরুতর অপরাধে যুক্ত নাবালকদের ‘সাজা’ নিয়ে কেন বারবার বিতর্ক পিরোজপুরে হত্যার দেড় মাস পর কবর থেকে লাশ উত্তোলন জবি শিক্ষক মিল্টন বিশ্বাসের পদত্যাগ এবং স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ সেনাবাহিনীর নারী সদস্যদের হিজাব পরিধানের বাধা কাটল চৌগাছায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে এক কৃষকের মৃত্যু

সকল