শরণখোলায় আগুনে পুড়েছে ২০ দোকান, আহত ১৬
- শরণখোলা (বাগেরহাট) সংবাদদাতা
- ২৮ জুন ২০২৪, ১৮:৫৯
বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলা সদর রায়েন্দা পাঁচরাস্তা মোড়ের ভয়াবহ আগুনে ১১টি দোকান সম্পূর্ণ ভষ্মীভূত হয়েছে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নয়টি দোকান। এতে আহত হয়েছে ১৬ জন।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) রাত আনুমানিক ১০টার দিকে এই অগ্নিকাণ্ড হয়।
মোট ২০টি দোকানের মালামাল ও অবকাঠামো মিলিয়ে কমপক্ষে ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এমনটাই দাবি করেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসয়ী ও বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটি নেতারা।
জানা যায়, খবর পেয়ে শরণখোলা ও মোরেলগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ও স্থানীয় শত শত মানুষ আগুন নেভাতে ছুটে আসেন। তাদের প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। রাত সাড়ে ১১টার দিকে বৃষ্টি শুরু হলে আগুন সম্পূর্ণ নিভে যায়।
পোড়া এবং ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে মুদি দোকান, মিষ্টির দোকান, ওষুধের ফার্মেসি, ইলেক্ট্রনিক্সসহ বিভিন্ন পণ্যের দোকান ছিল। আগুন নেভাতে গিয়ে আহত হয়েছেন অন্তত ১৬ জন। এদের মধ্যে গুরুতর আহত চারজন শরণখোলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
এদিকে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে উপজেলা প্রশাসন থেকে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে ফায়ার সার্ভিসের ধারণা বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে এই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।
মেসার্স রহমান স্টোরের মালিক আব্দুর রহমান জানান, তার মুদি দোকানসহ দুটি গুদাম সম্পূর্ণ পুড়ে প্রায় ৮০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
মেসার্স ইব্রাহিম স্টোরের মালিক মো: ইব্রাহিম ফকির জানান, তার মুদি দোকানের ৮৫ লাখ টাকার মালামাল পুড়ে গেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও ঘর মালিকরা জানান, লাখ লাখ টাকা ব্যাংক ও বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন। আগুনে তাদের সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। তারা নতুন করে ব্যবসা শুরু করতে পারবেন কিনা সে নিশ্চয়তাও নেই। তারা এই ঋণ কিভাবে শোধ করবেন তাও জানা নেই তাদের। তারা যাতে আবার ঘুরে দাড়াতে পারেন সেজন্য সরকারের কাছে আর্থিক সহায়তার দাবি জানিয়েছেন।
রায়েন্দা বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান বাবুল তালুকদার জানান, আগুনে ১১টি দোকান ও মালামাল সম্পূর্ণ ছাই হয়ে গেছে। নয়টি দোকান আংশিক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও ঘর মালিকদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে।
শরণখোলা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আফতাবি আলম জানান, কাছাকাছি পানির উৎস না থাকায় তাদের মারাত্মক সঙ্কটে পড়তে হয়। যে কারণে আগুন নেভাতে সময় লেগেছে। ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট তেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।
শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুদীপ্ত কুমার সিংহ বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে জেলা প্রশাসকের দফতরে পাঠানো হবে। সেখান থেকে যে বরাদ্দ আসবে তা ক্ষতিগ্রস্তরে বিতরণ করা হবে।
তিনি বলেন, অগ্নিকাণ্ডের সঠিক কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করেত উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবব্রত সরকারকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিন দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে তাদের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
শরণখোলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো: রায়হান উদ্দিন আকন শান্ত বলেন, আগুনে একেকজন ব্যবসায়ীর যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা অপুরণীয়। বিপদে সবাইকে ধৈর্ষধারণ করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্তদের উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগীতার চেষ্টা করা হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা