২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

মনিরামপুরে আ’লীগের ২ পক্ষের মধ্যে উত্তপ্ত অবস্থা

মনিরামপুরে আ’লীগের ২ পক্ষের মধ্যে উত্তপ্ত অবস্থা - ছবি : নয়া দিগন্ত

দলীয় কার্যালয়ের মধ্যে থাকা বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাংচুরের ঘটনা নিয়ে মনিরামপুর আওয়ামী লীগের মধ্যে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ ছোড়া হচ্ছে। ঘটনা নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

শনিবার (১ জুন) উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক ফারুক হোসেন দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে বিষয়টি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করেন।

লিখিত বক্তব্যে সম্পাদক ফারুক হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ২৪ মে নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন লাভলুকে মনোহরপুর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে সংবর্ধনা দেয়া হয়। এ অনুষ্ঠান শেষে স্থানীয় বিএনপির নেতৃবৃন্দসহ আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে যান আমজাদ হোসেন লাভলুসহ তার লোকজন। সেখানে সংসদ সদস্য এস এম ইয়াকুব আলী প্যানা টাঙানো দেখে ছিড়ে ফেলানোর নির্দেশ দেয়ার পর বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবিও ভাংচুর ও ছিড়ে ফেলা হয়। খবর পেয়ে পরদিন ২৫ মে ঘটনাস্থলে যান এস এম ইয়াকুব আলী (এমপি) ও সম্পাদক ফারুক হোসেনসহ নেতাকর্মীরা।

মনোহরপুর আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে স্থানীয় নেতাকর্মী, পুলিশ প্রশাসন, গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতিতে তালা খোলা হয়। প্রবেশ করতেই দেখতে পায় ভাংচুর অবস্থায় পড়ে রয়েছে বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রীর ছবি ও সংসদ সদস্যদের প্যানা। তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়।

প্রভাষক ফারুক হোসেন দাবি করেন, স্থানীয় বিএনপি নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান আক্তার ফারুক মিন্টুসহ তার সাঙ্গপাঙ্গরাই ছবি ভাংচুর করে। এ ঘটনায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক আব্দুস সবুর মনিরামপুর থানায় এজাহার করলেও আমলে নেয়নি পুলিশ। একপর্যায় সংসদ সদস্যসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দসহ কেন্দ্রীয় কমিটি এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে অবহিত করেন।

এদিকে, ৩০ মে উপজেলা চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন লাভলু দলীয় কার্যালয়ে বিষয়টি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। সাবেক প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহমুদুল হাসান সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত বক্তব্যে আমজাদ হোসেন লাভলু দাবি করেন, বর্তমান এমপি এসএম ইয়াকুব ও সম্পাদক ফারুক হোসেন এবং স্থানীয় সাবেক চেয়ারম্যান মহিতুজ্জামানের লোকজন এমন ন্যাকরজনক ঘটনা ঘটিয়েছে।

শনিবার প্রভাষক ফারুক হোসেন সংবাদ সম্মেলনে আরো বলেন, মনিরামপুর বিএনপির ভাড়া খাটা শীর্ষ নেতার ইন্ধনে বিএনপির সাধারণ ভোটাররা আমজাদ হোসেন লাভলুর আনারস প্রতীকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করেন। তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর বিএনপিকে সাথে নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। ৮ মে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচন পরবর্তী সময়ে আমজাদ হোসেন লাভলুর লোকজন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হাসেম আলীসহ বেশ কিছু নেতাকর্মীকে মারধর করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। এছাড়া কাশিমনগর ইউপি চেয়ারম্যান তহিদুর রহমানসহ তার পরিবারের সদস্যদের হুমকি দেয়া হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এসব ঘটনায় মনিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের অনেকেই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।

সংসদ সদস্য এস এম ইয়াকুব আলী অভিযোগ করে বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়ে দলের এক শ্রেণির নেতাকর্মী একই দলের লোকজনকে প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখছেন, তাদেরকে মারপিট করাসহ নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। যা আওয়ামী লীগের জন্য শুভকর নয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, হাসেম আলী, গৌর কুমার ঘোষ, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সন্দীপ কুমার ঘোষ, ইউপি চেয়ারম্যান শামসুল হক মন্টু, হাফিজ উদ্দিন, ফারুক হুসাইন, পৌর কাউন্সিলর বাবুল আকতার, মনোহরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কালী পদ মন্ডল, ভোজগাজী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মোড়ল, মনোহরপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মশিউর রহমান ও মহিতুজ্জামান মহিত প্রমুখ।


আরো সংবাদ



premium cement