২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

সুন্দরবনে আগুন : তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দাখিল

- ছবি : ইউএনবি

সুন্দরবনে আগুনের ঘটনায় গঠন করা তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করেছে। প্রতিবেদনে আগুন লাগার কারণ হিসেবে ছয়টি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে।

কমিটির প্রধান সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক রানা দেব বৃহস্পতিবার বিভাগীয় বন কর্মকতার (ডিএফও) কাছে এই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।

এছাড়া প্রতিবেদনে সুন্দরবনের ৭ দশমিক ৯৮ একর বনভূমি পুড়ে যাওয়া এবং ১১ লাখ ৫৮ হাজার ২৫০ টাকা ক্ষতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে আগুন লাগার কারণ হিসেবে যে বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে, ভোলা নদী প্রায় ভরাট হওয়ার কারণে নদীর সঙ্গে ছোট-বড় খালগুলোর মধ্যে দিয়ে বনে জোয়ারে পানি প্রবেশ করতে পারছে না। নদী ও সংযোগ খালগুলো সচল না থাকাটাও আগুনের কারণ হতে পারে।

ভোলা নদীর গভীরতা কম ও সংযোগ খালগুলো সচল না থাকায় একদিকে বনভূমি পানিতে নিমজ্জিত হচ্ছে না, অন্য দিকে বনের পার্শ্ববর্তী মানুষ ও গবাদি পশু অতি সহজে সুন্দরবনে প্রবেশ করছে।

এদিকে শুকনা পাতা বনভূমিতে পড়ে থেকে শুকনা লেয়ার সৃষ্টি করে। এবছর তীব্রতাপদাহ চলছে যা ৭৫ বছরের রের্কড ভঙ্গ করেছে এবং বৃষ্টিপাত না হওয়ায় শুকনা ডাল ও পাতায় ঘর্ষণের ফলে উৎপন্ন স্থির তড়িৎ উৎপাদনের মাধ্যমে এই আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।

বনের মূর্তির খালে এই সময়ে প্রচুর টেংরা জাতীয় মাছ পাওয়া যায়। মাছ আহরণ করতে বনের লতিফের ছিলা দিয়ে পায়ে হেঁটে মানুষ যাতায়াত করছে। ফলে অজ্ঞানতাবসত বা ইচ্ছাকৃত ফেলে দেওয়া সিগারেটের অবশিষ্ট অংশ থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটতে পারে।

অবৈধ মৌয়াল অথবা বাওয়ালীদের বনে প্রবেশ করে মধু সংগ্রহ করার সময় ধোঁয়া তৈরির কুণ্ডলীর অবশিষ্ট অংশ বা বিড়ি-সিগারেট থেকে আগুন লাগতে পারে।

আগুনের সূত্রপাত হিসেবে ঘটনাস্থলে একটি মৌচাকের মধুসংগ্রহের কাজে ব্যবহৃত লোফার কিছু অংশ অবশিষ্ট দেখা যায়। এখান থেকে আগুনের সূত্রপাত হওয়ার আশঙ্কা বেশি বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম বলেন, তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটির সদস্যরা তদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার তার কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। ওই প্রতিবেদন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, তদন্ত কমিটি সুন্দরবনে আগুন লাগার কারণ সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারেনি। আগুন লাগার ছয়টি কারণ উল্লেখ করেছে প্রতিবেদনে।

কমিটির প্রধান খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, কমিটির সদস্যদের নিয়ে তিনি এরই মধ্যে সুন্দরবনে লাগা আগুনের এলাকা পরিদর্শন করেছেন। সেখান থেকে নানা ধরনের তথ্য-উপাত্ত তারা সংগ্রহ করেছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে আগুনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হিসাবে যা উল্লেখ করা হয়েছে তার মধ্য রয়েছে, বলা তিন হাজার ৪০০ কুইন্টাল যার মূল্যে ছয় লাখ ১২ হাজার টাকা। গেওয়া ২২৫ কুইন্টাল যার মূল্যে ৪৭ হাজার ২৫০ টাকা।

সুন্দরী ১০০ কুইন্টাল যার মূল্যে ৩৯ হাজার টাকা এবং জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের আনুমানিক ক্ষতি ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা। সূত্র : ইউএনবি


আরো সংবাদ



premium cement