মেডিকেল সার্পোট না থাকায় যশোর-ঢাকা রুটে বিমান চলাচল শুরু হয়নি
- যশোর অফিস
- ০৬ জুন ২০২০, ১৯:৫৬, আপডেট: ০৬ জুন ২০২০, ১৯:৫৪
মেডিকেল সার্পোট না থাকায় যশোর-ঢাকা রুটে বিমান চলাচল শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। দীর্ঘ দুই মাস বন্ধ থাকার পর গত ১ জুন সরকার অভ্যন্তরীণ রুটে বিমান চলাচলের অনুমতি দিয়েছে। আর চিকিৎসক বরাদ্দ চেয়ে মাস দুয়েক আগেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি দিয়েছিল বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর সৈয়দপুর বিমানবন্দরে সার্বক্ষণিক একজন চিকিৎসক নিয়োজিত আছেন। ফলে সেখানে বিমান চলাচল শুরু হয়েছে। কিন্ত গত এক সপ্তাহ যশোর সিভিল সার্জেন কোন মেডিকেল সাপোর্ট না দেওয়ায় দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে বিমান চালু সম্ভব হয়নি। খুলনা বিভাগের ১০ জেলার যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
যশোর থেকে ঢাকায় যেতে ট্রেনে সময় লাগে আট ঘন্টা, আর সড়কপথে সময় লাগে (ফেরিঘাটে যানজট না থাকলে) ৬ ঘণ্টা। আর বিমানে ঢাকায় পৌঁছতে সময় লাগে মাত্র ৩০ মিনিট। ফ্লাইট চালু না করায় ভোগান্তি বাড়ছে দক্ষিণ-পঞ্চিম অঞ্চলের যাত্রীদের মধ্যে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও দেশের বৃহৎ স্থল বন্দরের সুফল পেতে দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রুট ঢাকা-যশোর দ্রুত ফ্লাইট দাবি জানিয়েছেন তারা।
বর্তমানে বাংলাদেশে সচল বিমানবন্দর রয়েছে আটটি। এর মধ্যে তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। বাকি যে পাঁচ বিমানবন্দর শুধু অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলাচলের জন্য ব্যবহূত হচ্ছে। সেগুলো হচ্ছে যশোর বিমানবন্দর অন্যতম। দক্ষিক-পশ্চিম জনের মানুষের আকাশ পথে চলাল এক মাত্র রুট এটি। এ বিমান বন্দর দিয়ে প্রতি দিন আট থেকে দশ ফ্লাইট উঠা নামা করে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশনের (আইকাও) বেঁধে দেয়া নিয়ম অনুযায়ী, কভিড-১৯-এর সংক্রমণ পরিস্থিতিতে যাত্রীবাহী বাণিজ্যিক ফ্লাইট উড্ডয়ন-অবতরণ করতে হলে সংশ্লিষ্ট বিমানবন্দরে অবশ্যই চিকিৎসক ও মেডিকেল সহকারীসহ প্রাথমিক চিকিৎসার প্রয়োজনীয় সব উপকরণ থাকতে হবে। কিন্তু এ মুহূর্তে যশোর বিমানবন্দরে চিকিৎসক ও জরুরি মেডিকেল সুবিধা নেই।
জানা গেছে, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহায়তা চেয়ে বেবিচকের পক্ষ থেকে দুই মাস আগেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি দেয়া হয়েছিল। এর ধারাবাহিকতায় কয়েকটি বিমানবন্দরের জন্য সেখানকার সিভিল সার্জন একজন চিকিৎসক দিয়েছেন। সেখানে ফ্লাইট চালু করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এখনো যশোর বিমানবন্দরের জন্য চিকিৎসক দেয়নি সিভিল সার্জন। ফলে যশোর বিমানবন্দরে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চালুর অনুমতি পায়নি বলে জানা গেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশনের (আইকাও) নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অত্যাধুনিক সরঞ্জামসহ একটি স্বাস্থ্যসেবা ইউনিট প্রস্তুত রাখতে হয়। একই সঙ্গে ইউনিটটির নিকটবর্তী বড় কোনো হাসপাতালের সঙ্গে সংযুক্তি থাকতে হয়, যাতে যেকোনো জরুরি অবস্থায় বিমানবন্দরেই প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রোগীকে তাত্ক্ষণিকভাবে হাসপাতালে পাঠানো যায়। আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচলে ব্যবহৃত বিমানবন্দরে আগে থেকেই চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যসেবা ইউনিট রয়েছে।
অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট চলাচলের জন্য ব্যবহৃত বিমানবন্দরের ক্ষেত্রে এ ধরনের কোনো বাধ্যবাধকতা ছিল না এতদিন। তবে কভিড-১৯ পাল্টে দিয়েছে সবকিছু। বর্তমান পরিস্থিতিতে যাত্রীবাহী বাণিজ্যিক ফ্লাইট উড্ডয়ন-অবতরণ করতে হলে বিমানবন্দরে অবশ্যই একজন চিকিৎসক ও মেডিকেল সহকারীসহ প্রাথমিক চিকিৎসার প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা রাখার নিয়ম বেঁধে দিয়েছে আইকাও।
এ বিষয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বলেন, কভিড-১৯-এর প্রাদুর্ভাব রুখতে মার্চের শেষ নাগাদ ফ্লাইট চলাচল বন্ধ করা হয়। যাত্রী সুরক্ষা নিশ্চিত করে পুনরায় ফ্লাইট চালু করার বিষয়ে সে সময় থেকেই আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছিলাম। এর অন্যতম হচ্ছে প্রতিটি বিমানবন্দরে অন্তত একজন করে চিকিৎসক, মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা করা, যা অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরগুলোয় ছিল না।
এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহায়তা চেয়ে বেবিচকের পক্ষ থেকে দুই মাস আগেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি দেয়া হয়েছিল। এর ধারাবাহিকতায় সৈয়দপুর বিমানবন্দরের জন্য সেখানকার সিভিল সার্জন একজন চিকিৎসক দিয়েছেন। এ কারণে সৈয়দপুরে ফ্লাইট চালু করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এখনো অভ্যন্তরীণ যশোরসহ কয়েকটি বিমানবন্দরের জন্য চিকিৎসক পাওয়া যায়নি। ফলে ওই সব বিমানবন্দরে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চালুর অনুমতি দেয়া হয়নি।
বিমানের একজন নিয়মিত যাত্রী বলেন, কভিড-১৯-এর সংক্রমণ চলাকালে বিমানবন্দরে অন্তত একজন চিকিৎসকের উপস্থিতি নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। আমাদের এ জনদুর্ভোগ লাঘবের সরকারে কিছু করা উচিত।
দুর্ভোগের কথা বলে যাত্রী জানান, জরুরি মেডিকেল সুবিধা না থাকায় বিমান চলাচল করছে না। এভাবে চলতে পারে না। প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ ব্যাপারে যশোর বিমানবন্দরের ম্যানেজারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে হয়। তাকে পাওয়া না গেলেও তার ব্যবহৃত ফোন রিসিভ করে নিজের নাম ও পরিচয় না জানিয়ে বলেন, ম্যানেজার সাহেব ঢাকায় আছেন। আট তারিখে আসবেন। কি কারণে ফ্লাইট চলছে না তা ম্যানেজার আসলে জানা যাবে বলে জানা তিনি।
চিকিৎসক বরাদ্দ চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি দিয়েছিল বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এমন চিঠি তিনি ও পেয়েছেন, যশোর সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। তবে ঠিক কবে যিশোর বিমান বন্দরে চকিৎসক দেওয়া হবে তা তিনি নিদিষ্ট করে বলেনি।
তিনি জানান , ডিজি অফিসের নির্দেশ পেলেই সেখানে চিকিৎসক ও জরুরি মেডিকেল সুবিধা দেওয়া হবে। তবে বিমান কর্তৃপক্ষকে চিকিৎস দের যাতায়াত ও জরুরি মেডিকেল সুবিধা দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট স্থান বরাদ্ধ দিতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা