জাহাজে ৭ খুন : ছেলে সজিবুলের শোকে মারা গেলেন বাবা
- জালাল উদ্দিন হাককানী, মহম্মদপুর (মাগুরা)
- ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮:৩৬
চাঁদপুরের হরিণা ফেরিঘাটের কাছে সারবোঝাই এমভি আল বাকেরা জাহাজে খুন হওয়া ছেলে সজিবুল ইসলামের শোকে মারা গেছেন বাবা দাউদ মুন্সী।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান।
দাউদ মুন্সীর পরিবার এখন এক শোকের সাগরে ভাসছে।
দাউদ মুন্সী মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার পলাশবাড়িয়া গ্রামের একজন সাধারণ কৃষক। তিনি তার ছেলে সজিবুলকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখেছিলেন। সজিবুল জাহাজে কাজের মাধ্যমে পরিবারে সুখের সঞ্চার করবে বলে আশা করেছিলেন। তবে সেই স্বপ্ন পূরণের আগেই সজিবুলের নির্মম মৃত্যু তার বাবার হৃদয় ভেঙে দেয়।
পরিবারের সদস্যরা জানান, ছেলের নৃশংস হত্যা মেনে নিতে পারছিলেন না দাউদ মুন্সী। তিন দিন ধরে ছেলের কথা মনে করে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন। প্রতিটি মুহূর্তেই তিনি বলতেন, ‘ছেলে পরীক্ষা দেছে, ভালো বেতনে চাকরি করবে। আমার সজিব আমার মুখে হাসি ফুটাতে চেয়েছিল, কিন্তু তার হাসিই কেড়ে নিয়ে গেল।’
পরিবারের স্বজন হাসিব জানান, বুধবার রাতে আমার ফুফা দাউদ মুন্সী পরিবারের সদস্যদের সাথে ছেলের স্মৃতিচারণ করছিলেন। তিনি বারবার বলছিলেন, ‘আমার সজিব কো, আমার সজিবরে আইনে দে’ একথা বলার কিছুক্ষণের মধ্যেই তার বুকে ব্যথা শুরু হয়। তাকে প্রথমে মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে ফরিদপুর রেফার্ড করে চিকিৎসক। সেখানে তার মৃত্যু হয়।
দাউদ মুন্সীর স্ত্রী বিলাপ করে বলেন, ‘আমার সব শেষ হয়ে গেছে। একদিকে আমার ছেলে চলে গেল, অন্যদিকে আমার স্বামী।’
সজিবুলের স্ত্রী প্রিয়া বলেন, ‘আমার স্বামী আমার মুখে হাসি ফুটাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এখন দেখছি, আমাদের পরিবারে কেউই আর হাসবে না।’
সজিবুলের পরিবার তার নৃশংস হত্যার বিচার দাবি করছে। দাউদ মুন্সীর মৃত্যুতে এলাকার মানুষ আরো ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। সবাই চাচ্ছেন, প্রকৃত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।
প্রতিবেশীরা বলেন, ‘এটি শুধু একটি পরিবারের ক্ষতি নয়, এটি পুরো গ্রামকে মর্মাহত করেছে। জাহাজে ওই হত্যার শিকার মহম্মদপুরের আরো দু’জন রয়েছে। আমরা সবার হত্যার বিচার চাই।’
শোকাহত এ পরিবারের পাশে দাঁড়াতে এলাকাবাসী এবং স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সজিবুলের স্বজনরা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা