২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
পুলিশের কথিত বন্দুকযুদ্ধ

সাবেক এমপি টগরসহ ৯ জনের নামে মামলা

এমপি টগর ও সাবেক পুলিশ সুপার আব্দুর রহিমসহ ৯ জনের নামে মামলা - ছবি : নয়া দিগন্ত

চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় পুলিশের কথিত বন্দুকযুদ্ধে বিল্লাল হোসেন (৪৫) নামের একজনকে হত্যার অভিযোগে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সাবেক মেম্বার অব পার্লামেন্ট (এমপি) আলী আজগর টগর ও সাবেক পুলিশ সুপার আব্দুর রহিমসহ ৯ জনের নামে মামলা হয়েছে।

সোমবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে বিল্লাল হোসেনের বোন শালপোনা পারভীন (৪০) চুয়াডাঙ্গা আমলী আদালত দর্শনায় মামলাটি করেন।

আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো: রিপন আলী মামলাটি গ্রহণ করে তদন্তের জন্য সিআইডির কাছে পাঠিয়েছেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন সাবেক কাউন্সিলর ও দর্শনা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জয়নুল আবেদিন নফর, দর্শনা তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ এসআই মিজানুর রহমান মিজান, দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও দর্শনা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলী মনসুর বাবু, দর্শনা দক্ষিণ চাঁদপুরের আওয়ামী লীগ নেতা আলীহিম, দামুড়হুদা থানার সাবেক ওসি আহসান হাবিব, কনস্টেবল সাজিদুর রহমান ও এএসআই দেবাশীষ।

সন্ধ্যায় মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাদীপক্ষের আইনজীবী মাসুদ পারভেজ রাসেল।

মাসুদ পারভেজ রাসেল বলেন, আদালত বাদীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ করে মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কাছে পাঠিয়েছেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ‘গত ২০১৩ সালে চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা পৌর এলাকার দক্ষিণ চাঁদপুরের গ্রামের মো: বিল্লাল হোসেনের কাছে দলীয় দাপট দেখিয়ে চুয়াডাঙ্গা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী আজগার টগর, আওয়ামীলীগ নেতা জয়নাল আবেদীন নফর, আলী মনসুর বাবু ও আলীহিম পুলিশের ক্রসফায়ারে ভয় দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা চাঁদা দাবি করেন। বিল্লাল হোসেন চাঁদা দিতে রাজি না বলে দর্শনা তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশের ইনচার্জ এস এম মিজানকে জানান। এ সময় দর্শনা তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এস এম মিজানুর রহমান মিজান এমপি আলী আজগর টগর ও তার ভাই আলী মনসুর বাবু, আওয়ামী লীগ নেতা জয়নাল আবেদিন নফর ও আলীহিমকে জানালে পুলিশ এস আই মিজান, সাবেক চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আব্দুল রহিম শাহ, দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবীব, কনস্টেবল সাজিদুর রহমান, এএসআই দেবাশীষ তারা বিল্লাল হোসেনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। গত ১১ আগস্ট ২০১৩ রাতে অবৈধভাবে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে ওই দিন দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে বিল্লাল হোসেনকে বাড়ি থেকে অপহরণ করেন এবং তাকে দর্শনা দক্ষিণ চাঁদপুর উজলপুর রাস্তার হরচরার মাঠে নামক স্থান নিয়ে যান। এ সময় আসামিরা বিল্লালকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও একাধিক গুলি করি হত্যা করেন। পরে পুলিশের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত বিল্লাল হোসেন এমন নাটক সাজান তারা।’

এ ঘটনায় আদালতের আইনের আশ্রয় নেয়ার কথা শুনলে আসামিরা বিল্লালের বোন শালপনা পারভিন এবং তার পরিবারকে অপহরণ ও খুনের হুমকি দেন। দেশে স্বৈরাশাসক পতনের পর ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় বিল্লাল হোসেনের বোন এ হত্যা মামলা দায়ের করেন।

চুয়াডাঙ্গার সহকারী পুলিশ সুপার (সিআইডি) সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের হাতে কোনো কাগজপত্র আদালত থেকে এখনো আসেনি। কাগজ হাতে পেলে তদন্ত কাজ শুরু করব।’


আরো সংবাদ



premium cement