০৮ অক্টোবর ২০২৪, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১, ৪ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

ইবি শিক্ষকের চাকরিচ্যুতির দাবিতে ফটক অবরোধ

ইবি শিক্ষকের চাকরিচ্যুতির দাবিতে ফটক অবরোধ - ছবি : নয়া দিগন্ত

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, কথা না শুনলে নম্বর কমিয়ে দেয়া ও ছাত্রদের সমকামীতায় উদ্বুদ্ধ করাসহ নানা অভিযোগ উঠেছে।

সোমবার (৭ অক্টোবর) দুপুর ১টার দিকে এসব অভিযোগে তার চাকরিচ্যুতির দাবিতে বিক্ষোভ ও প্রধান ফটক অবরোধ করেছে বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

পরে ভিসি অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহর কাছে লিখিত অভিযোগ করেন তারা।

সহকারী অধ্যাপক হাফিজের চাকরিচ্যুতির দাবিতে দুপুর ২টায় প্রধান ফটক অবরোধ করে দুপুরের সিডিউলের বাস আটকে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। দুপুর আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা এসে ভিসির সাথে শিক্ষার্থীদের আলোচনার আশ্বাস দিলে তারা প্রধান ফটক ছেড়ে দেন। দুপুর ৩টায় ভিসির সাথে বৈঠকে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ২৭টি অভিযোগ এনে তার বহিষ্কারের দাবিতে লিখিত দেন। এ সময় ভিসি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলে আন্দোলন স্থগিত করেন তারা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সহকারী অধ্যাপক হাফিজ ছাত্রীদের বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত ও শ্রেণিকক্ষে সবার সামনে ছাত্রীদের ‘নষ্টা’সহ কুরুচিপূর্ণ ভাষায় গালিগালাজ করেতেন তিনি। এছাড়া তার সাথে ভালো সম্পর্ক না থাকলে পরীক্ষার খাতায় ও ইন্টার্নাল নম্বর কমিয়ে দিতেন। একইসাথে কেউ দাড়ি রাখলে শিবির ট্যাগ দেয়া ও মেয়েরা পর্দা করলে তাদের ব্যাঙ্গ করতেন। তাছাড়া ছাত্রদেরকে সমকামীতার দিকে বিভিন্নভাবে উদ্বুদ্ধ করতেন তিনি।

এছাড়া তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেয়ায় একাধিক শিক্ষার্থীকে হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। বিভিন্ন সময়ে ছাত্রলীগের প্রোগ্রামে শিক্ষার্থীদের জোর করে পাঠানোর অভিযোগও করেন তারা।

আন্দোলনকালে বিভাগের ছাত্রী মৌমিতা তাসনিয়া বলেন, ‘তিনি মেয়েদেরকে বাজারের মেয়ে ও নর্তকী বলে গালি দিতেন। ফেসবুকে আমাদের ছবি দেখে বলতেন, সব তো কাস্টমার ধরার ধান্দা। এছাড়া ক্লাসে বিভিন্ন অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করে কথা বলতেন তিনি।’

আঁখি আলমগীর নামের আরেক ছাত্রী বলেন, ‘তিনি ফেইক আইডি দিয়ে আমার সাথে বিভিন্ন সময় চ্যাটিং করতেন। শ্রেণিকক্ষে আমার পোশাক নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন। এছাড়া আমি পর্দা করতে শুরু করলে তিনি আমাকে ‘হুজুর সেঁজেছে’ বলে কটুক্তি করতেন। পরে আমাকে জীবননাশের হুমকিও দেন ওই শিক্ষক।’

বিভাগের শিক্ষার্থী মিরাজ হাসান বলেন, হাফিজ স্যার আমাকে পরিকল্পিতভাবে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ ও নেশা দ্রব্যের সাথে জড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। পরে আমি রাজি নাহলে তিনি আমার ওপর মারাত্মক ক্ষিপ্ত হয়ে দেখে নেয়ার হুমকি দেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামের সাথে মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি।

বিভাগের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক আতিফা কাফি বলেন, ভিসি স্যার তদন্ত কমিটির আশ্বাস দিয়েছেন। তদন্ত কমিটি পরবর্তী পদক্ষেপ নিবে।

ভিসি অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি করা হবে। তারা সকল অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে দেখবেন। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তীতে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।


আরো সংবাদ



premium cement