০২ অক্টোবর ২০২৪, ১৭ আশ্বিন ১৪৩১, ২৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

কুষ্টিয়ায় ছাদ থেকে ফেলে দিয়ে কলেজছাত্রকে হত্যা

- ছবি : নয়া দিগন্ত

কুষ্টিয়া শহরের কোটপাড়া এলাকার একটি মেসের ছাদ থেকে হাত-পা বেঁধে ফেলে দিয়ে এক কলেজছাত্রকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।

গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহরের কোর্টপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ওই কলেজ ছাত্রের নাম রুবেল হোসেন (২২)। তিনি কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে এবং কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনষ্টিটিউটের ছাত্র।

এ ঘটনায় এলাকাবাসী ওই ছাত্রের রুমমেট হৃদয় ও রাইসুল নামের দুই শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করে।

এ ঘটনায় ওই ছাত্রাবাসের ছাত্র আনিসুর রহমান জানান, চারতলা বাড়ির তিনতলায় তিনটি রুমে আমরা নয়জন থাকতাম। রুবেলের রুমে তিনজন থাকতো। রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে নিজ কক্ষ থেকে চিৎকারের শব্দ শুনে নিচে নেমে এসে দেখি রুবেল হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় পড়ে আছে। তখন স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসি। অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে। পরে রাজশাহী নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

আনিস আরো জানায়, বিকেল থেকে রুবেলকে চিন্তিত থাকতে দেখেছি। সন্ধ্যার পরে একসাথে ছাত্রাবাসের খরচের হিসাব করেছি। তবে এ ঘটনা কিভাবে, কারা ঘটিয়েছে সেটা জানি না।

স্থানীয় সাংবাদিক অধ্যাপক শিহাবউদ্দিন জানান, ‘আমার বাড়ির পাশের এই বাড়িটির মালিক জাহিদ হোসেন লিটু। বাড়িটিতে কয়েকটি মেসে ছাত্ররা অবস্থান করে। ঘটনার খবর শুনেই আমরা ঘটনাস্থলে পৌছে আহত শিক্ষার্থী আনিসকে হাসপাতালে পাঠিয়ে আনিসের রুমমেট হৃদয় ও রাইসুলকে আটক করে জিজ্ঞাসবাদ করি কিন্তু তাতে কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি। পরে পুলিশের হাতে তাদের সোপর্দ করা হয়।

কামরুল হাসান শুভ নামে একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ধারণা করছি হাত-পা ও মুখ বেঁধে মারধর করে ছাদ থেকে ফেলে দেয়া হয়েছে তাকে। তার দুই হাত ও দুই পা সাদা রশি এবং মুখ লাল কাপড় দিয়ে বাঁধা ছিল। ঘটনার পর পুলিশের সাথে ভবনের তিনতলায় গেলে ওই রুমের বারান্দায় একই রঙের রশি টানানো থাকতে দেখেছি।’

তিনি দাবি করেন, এটা একটা হত্যাকাণ্ড।

মাহিম নামের স্থানীয় এক যুবক জানান, ঘটনার পরই আমরা ছাত্রাবাসের ছেলেদের কাছে ঘটনা কী জিজ্ঞাসা করি। তারা কেউ কিছু জানে না বলছে। তবে চারতলা ভবনের ছাদ বন্ধ থাকে। বাড়ির মালিক ছাড়া ছাদের চাবি ছাত্রাবাসের এক ছেলের কাছে থাকে জানতে পেরেছি। পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে কিছু জানতে পারবে। ভবনের নিচ থেকে রশি দিয়ে হাত-পা ও কাপড় দিয়ে মুখ বাঁধা অবস্থায় পড়ে থাকা অবস্থায় রুবেলকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে গতকাল দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে মারা যান।

কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক মিঠুন চক্রবর্তী জানান, ‘আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাত ১১টার দিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল রুবেলকে। মাথায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।’

কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবু রাসেল বলেন, ‘বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে, দুপুরে নিহতের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে গ্রামের বাড়িতে নেয়া হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement