২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১, ২৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

গণহত্যায় সমর্থনের অভিযোগ, তোপের মুখে ক্যাম্পাস ছাড়লেন ইবি শিক্ষক

গণহত্যায় সমর্থনের অভিযোগ, তোপের মুখে ক্যাম্পাস ছাড়লেন ইবি শিক্ষক - ছবি : নয়া দিগন্ত

জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে গণহত্যায় জড়িতদের সমর্থন ও ছাত্রআন্দোলনের সরাসরি বিরোধিতা করার অভিযোগে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে ক্যাম্পাস ছেড়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল।

শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রবীন্দ্র নজরুল কলা ভবনে নিজ বিভাগে আসেন ড. বিকুল। বিষয়টি জানতে পেরে বিভাগে গিয়ে তাকে ক্যাম্পাস ছাড়তে বলেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাকে উদ্দেশ্য করে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকেন তারা। একপর্যায়ে তিনি শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে ক্যাম্পাস ছাড়তে বাধ্য হন।

জানা যায়, শনিবার সকালে অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পরে তিনি তার বিভাগে গেলে শিক্ষার্থীরা তাকে উদ্দেশ্য করে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিয়ে মিছিল করেন। পরে শিক্ষার্থীরা বিভাগটির সভাপতিসহ কয়েকজন শিক্ষকের সাথে কথা বলে তাকে ক্যাম্পাস থেকে চলে যেতে বলেন। বিভাগটির সভাপতিসহ কয়েকজন শিক্ষক তাকে নিরাপদে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কোটাবিরোধী আন্দোলন শুরুর পর থেকেই ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল আন্দোলনের প্রকাশ্যে বিরোধীতা করে ফেসবুকে পোস্ট দিতে থাকেন। আন্দোলন চলাকালে তিনি ছাত্র উপদেষ্টার দায়িত্বে ছিলেন। এসময় তিনি পুলিশ ও গোয়েন্দা বাহিনীকে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আটক হলে তাদের মুক্ত করতে ছাত্র উপদেষ্টা হিসেবে ভূমিকা নেননি, উল্টো তাকে ফোন দিলে রিসিভ করেন নি। এছাড়া ৪ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনকে নৈরাজ্য দাবি করে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের মিছিলে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন তিনি। এই মিছিল থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত লড়াইয়ের ঘোষণা দেওয়া হয়।

শিক্ষার্থীরা আরো অভিযোগ করেন, আন্দোলনের সাথে সংহতি জানিয়ে কয়েকজন শিক্ষক মিছিলে অংশ নিলে তিনি তাদের উপর হামলার পরিকল্পনা করেন ও প্ররোচনা দেন। সংহতি জানানো শিক্ষকদের তালিকা করে ঢাকায় কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে পাঠানোর কাজেও জড়িত ছিলেন তিনি। আন্দোলনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের অনেককে হুমকি ধামকি ও মাঝপথে কতিপয় শিক্ষার্থীদের একত্রিত করে আন্দোলন স্থগিতের নাটক মঞ্চায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন ড. বিকুল।

এছাড়া ৫ আগস্টে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পরেও আওয়ামী লীগের সমর্থনে এখনো ফেসবুকে সরব আছেন ড. বিকুল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, যাদের হাত থেকে শিক্ষার্থীদের রক্ত এখনো শুকায়নি তাদের সমর্থন করে তিনি এখনো বিভিন্ন ফেসবুক পোস্ট দিচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের সাথে যিনি ফাইনাল খেলা খেলতে চায় তিনি কিভাবে আমাদের শিক্ষক হতে পারেন। শত শত ছাত্রকে নির্বিচারে হত্যাকে যেসব শিক্ষক সমর্থন দিয়েছেন তাদের আমরা কোনোভাবেই শিক্ষক হিসেবে গ্রহণ করতে পারছি না।

এদিকে অভিযুক্ত অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল তার প্রতি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে শিক্ষার্থীরা বের হয়ে যাওয়ার দাবি জানায়। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে আমি বের হয়ে যাই। এ সময় তারা আমার সাথে কোনো খারাপ আচরণ করেনি। তাদের সাথে আমি নিজেও কথা বলেছি। তবে আমার প্রশ্ন, ক্যাম্পাসে এত আওয়ামীপন্থী শিক্ষক আছেন কিন্তু আমার সাথে বার বার এমন কেন করা হচ্ছে?


আরো সংবাদ



premium cement