২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

বস ভীষণ ‘বাজে’! কী করবেন

বসের মানসিকতা বুঝে কর্মকৌশল নির্ধারণ করতে হবে - ছবি : সংগ্রহ

চাকরির ক্ষেত্রে দারুণ গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হচ্ছে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বা 'বস' এর সাথে সম্পর্ক। একটি প্রতিষ্ঠানে যার সরাসরি তত্বাবধানে আপনি কাজ করেন ঐ ব্যক্তির মানসিকতা না বুঝতে পারলে নিশ্চিতভাবে নানামুখী সমস্যার সম্মুখীন হবেন আপনি। কাজেই নিজের পেশাগত উন্নয়নের স্বার্থেই আপনার উর্ধ্বতন কর্মকর্তার মানসিকতা বোঝার চেষ্টা করা আপনার জন্য জরুরি।

পেশাগত জীবনে যে কোনো ধরণের উর্ধ্বতন কর্মকর্তার মন জুগিয়ে ও তাঁর সাথে সমঝোতা করে কীভাবে এগিয়ে চলতে হয় সে বিষয়ে একটি বই লিখেছেন ম্যারি অ্যাবাজে, যেখানে 'বস'দের সাথে সুষ্ঠু ও কৌশলগত যোগাযোগকেই তাঁদের সাথে সুম্পর্কের প্রধান উপাদান হিসেবে চিহ্নিত করেছেন তিনি।

অ্যাবাজে তার বইতে বলেছেন, ‘বসের ব্যবহার পছন্দ না হলেও কিছু করার নেই, কারণ তিনি তাঁর এই ব্যবহার ও কাজ দিয়েই প্রতিষ্ঠানে আজ আপনার বস হয়েছেন।’

তাহলে উপায়? অ্যাবাজে মনে করেন, উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রয়োজনে নিজের কর্মপদ্ধতি, মানসিকতা ও ব্যবহার পরিবর্তন করা জরুরি। তিনি বলেন, ‘অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাকেই কর্মক্ষেত্রে তাঁর অবদান ও সাফল্যের ভিত্তিতে নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রধান হিসেবে নির্বাচিত করা হয়ে থাকে। তাঁরা কতটা সুদক্ষভাবে কর্মীদের পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা করে থাকেন, সাধারণত সে বিষয়টিকে ততটা গুরুত্ব দেয়া হয় না।’

তিনি আরো বলেন, ‘কাজেই আপনার 'বস' কী ধরণের ব্যক্তি, আপনার কাছ থেকে তিনি কী আশা করেন এবং তাঁর সাথে কার্যকর যোগাযোগের জন্য আপনি কী করতে পারেন এই বিষয়ে চিন্তা করা প্রয়োজন। তাহলে আপনি ও আপনার 'বস' দু'জনই প্রতিষ্ঠানকে সর্বোচ্চ সেবা দিতে সক্ষম হবেন’। মোট কথা বসের মানসিকতা অনুযায়ী নিজের কর্মকৌশল ও যোগাযোগ পদ্ধতি নির্ধারণ করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।

কর্মচারীর যুক্তিতে 'সঠিক', কিন্তু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার মতে 'বেঠিক' - অধিকাংশ সময় এরকম দোটানায় জড়িয়েই 'বস'এর সাথে কর্মচারীর দ্বন্দ্ব তৈরী হয়ে থাকে বলে মনে করেন অ্যাবাজে। এসব ক্ষেত্রে আত্মাভিমান কর্মচারীর পেশাগত উন্নয়নের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে বলে মনে করেন অ্যাবাজে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে আবেগের বশবর্তী হয়ে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সাথে দ্বন্দ্বে না জড়িয়ে ঐ সিদ্ধান্ত নেয়ার পেছনে কারণ বোঝার চেষ্টা করা উচিত।

তবে অনেকক্ষেত্রে এসব কৌশলের কোনোটাই কাজ করে না। যুক্তরাষ্ট্রের একটি জরিপ সংস্থা গ্যালপ'এর গবেষণা অনুযায়ী সেদেশে কাজ করা জনসংখ্যার অর্ধেকই জীবনের কোনো না কোনো সময় চাকরি ছেড়েছেন তাদের উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে দ্বন্দ্বে।

ম্যারি অ্যাবাজে বলেন, ‘কয়েক ধরণের 'বস'এর সাথে আপনি কখনোই পেরে উঠবেন না। একধরণের বস হলো যারা নিজেদের সিদ্ধান্তকেই সঠিক মনে করেন, যাদের আত্মঅহঙ্কার প্রবল। আর আরেক ধরণের হলো যারা আপনাকে সবসময় দমিয়ে রাখার চেষ্টা করবে। আপনি যাই করেন না কেন তাঁরা আপনার সমালোচনা করবে। এধরণের 'বস' আপনার নিজস্ব উন্নয়নের জন্য খুব বিপজ্জনক।

অ্যাবাজে'র মতে এ ধরণের কর্মকর্তার অধীনে কাজ না করাই শ্রেয়।

আরো পড়ুন : একই নামের হাজারো শিশু!

অ্যালিস খুব বিখ্যাত কোন সঙ্গীত বা সিনেমা তারকা নন। খেলাধুলাতেও তার তেমন কোনো অবদান নেই। তারপরেও লাইবেরিয়ায় এক হাজারের বেশি কন্যাশিশুর নাম রাখা হয়েছে তার নামেই। পেশায় একজন মিডওয়াইফ, অর্থাৎ সন্তান জন্মদান গর্ভবতী মাকে সহায়তা করাই তার পেশা।


তার হাতেই মায়ের গর্ভ থেকে পৃথিবীতে এসেছে অসংখ্য শিশু। যাদের একটা বড় অংশই আবার হয়েছে দেশটিতে যুদ্ধ চলার সময়। বিবিসি সংবাদদাতাকে তিনি বলছেন, ‘প্রথমবার যখন কোনো বাচ্চার ডেলিভারি করলাম তখন সেটি হয়েছিলো যুদ্ধের সময় বন্দুকের নলের মাথায়।’

সেটা ১৯৯০ সালের ঘটনা। এক নারী চিৎকার করছিলেন। একজন যোদ্ধা এসে বললো, ‘তুমি যদি ডেলিভারি করাতে যাও এবং এই নারীর কিছু হলে আমি দুজনকেই গুলি করে মারবো।’ ‘বাচ্চাটি ডেলিভারি করে তাকে মুড়িয়ে মায়ের বুকে দিলাম যাতে বুকের দুধ খাওয়াতে পারে। এটাই আমার প্রথম কোন বাচ্চাকে ডেলিভারি করানোর অভিজ্ঞতা।’

মিডওয়াইফ হিসেবে কাজ শুরুর সময় থেকে অ্যালিস জানতেন হয়তো কিছু বাচ্চার নাম রাখা হবে তার নামেই।

‘কিন্তু তাই বলে এতোটা হবে সেটা ভাবতে পারিনি। এটা আমাকে দারুণ আনন্দ দেয়। এটা আমাকে অনুভব করায় যে আমি তাদের একটি অংশ।’

তিনি জানান, তার হাত দিয়ে জন্ম নেয়া কন্যাশিশুদের অনেকের যেমন নাম রাখা হয়েছে অ্যালিস (Allice) তেমনি ছেলে শিশুদের অনেকের নাম রাখা হয়েছে এলিস (Ellis)।

আবার মেয়েদের মধ্যে যাদের নাম অ্যালিস রাখা হয়েছে পরে তারাও অনেকে মা হয়েছেন। মজার বিষয় হলো তাদেরও অনেকের নাম রাখা হয়েছে এই নারীর নামের সাথে মিল রেখে। এদের সবাইকে নিজের সন্তানের মতোই ভালোবাসে অ্যালিস।

‘আমি আমার সন্তানদের জন্য গর্বিত। কারণ তারা আসলেই চমৎকার। যখনই কমিউনিটিতে কোথাও যাই সবাই ডাকতে থাকে। কেউ আন্টি, কেউ দাদী বা নানী বলে ডাকে। আমার দারুণ লাগে।’

অ্যালিস বলেন, তিনি যখন মারা যাবেন তখন কবরে গিয়েও তিনি দারুণ আনন্দে থাকবেন।

অ্যালিস


অনেক কঠিন সময়েও গর্ভবতী নারীদের নিয়ে কাজ করেছেন তিনি।

এমনকি যখন ইবোলা ভাইরাস মহামারী আকার ধারণ করলো তখনও।

‘এটা ছিলো ভয়ংকর। এমনকি আমার নিজের সন্তানকেও একটি ছোট ঘরে নিয়ে রেখেছিলাম। এমনকি আমার ভাই এসে বললো অ্যালিস তুমি এখন অনেক ঝুঁকিতে আছো। কারণ তুমি ইবোলা নিয়ে কাজ করছো।’

তিনি বলেন, তিনি খুব যে সাহসী তা নন, কিন্তু ওই সময় ঈশ্বরই তাকে শক্তি যুগিয়েছিলো। ‘মিডওয়াইফ হিসেবে আমি অন্যদের সহায়তা করার প্রশিক্ষণ পেয়েছি। তাই চুপ করে থাকাটা আমার কাজ নয়। মৃত্যু পর্যন্তই আমাকে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে।’

অ্যালিস বলেন, মিডওয়াইফের কাজ খুব সহজ নয়। ভালো মিডওয়াইফ হওয়াটাও সহজ কাজ নয়। শনি ও রোববার আমার ছুটির দিন। কিন্তু সেই ছুটিও আমার কখনো নেয়া হয় না।

‘আমি কৃতজ্ঞ ঈশ্বরের কাছে তাদের কাছে দাঁড়ানোর সুযোগ আমি পেয়েছি।’

সূত্র : ‍বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement