জীবন বদলানোর টিপস : পেশা (তিন)
- মুফতি ড. ইসমাইল মেনক
- ০৩ মে ২০২০, ০০:০০
[জিম্বাবুয়ের মুফতি ড. ইসমাইল মেনক এ সময়ের অন্যতম প্রসিদ্ধ ইসলামী স্কলার। তিনি মদিনায় ইসলামের উপর উচ্চতর পড়াশোনা এবং অলডারগেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সোশ্যাল গাইডেন্সের ওপর ডক্টরেট করেছেন। টুইটারে কোভিড-১৯ এর লকডাউনের সময় অনুশীলনের জন্য গিফট করা দু’টি বইয়ে জীবনাচরণের বিভিন্ন মৌলিক বিষয়ে তিনি সহজ সরল কিছু টিপস দিয়েছেন। লকডাউন গিফটের জীবন বদলানোর চতুর্থ আলোচনা হলোÑ ক্যারিয়ার বা পেশা। এই পরিচ্ছেদের শেষ অংশটি আজ। অনুবাদ করেছেন মাসুমুর রহমান খলিলী।]
অন্যের কী আছে তার দিকে তাকাবেন না এবং মনে করবেন না যে সর্বশক্তিমান আপনাকে ভুলে গিয়েছেন। তিনি ভোলেননি। অন্যের সাথে প্রতিযোগিতা করবেন না। আপনি আপনার মতো করে কৃপা পাচ্ছেন।
জরুরি বিষয়গুলোর দিকে মনোযোগ দেয়ার সময় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সমস্যা নিয়ে নিজেকে ব্যস্ত করবেন না। সময় নষ্ট করবেন না। কারণ আপনাকে দীর্ঘ ক্লান্তিকর পথ পাড়ি দিতে হবে গন্তব্যে পৌঁছতে।
পাহাড় যতই খাড়া হোক না কেন, আরোহণে আপনি মনভাঙ্গা হবেন না। আপনি কখনোই একা নন। প্রতিটি পদক্ষেপে সর্বশক্তিমান আপনার সাথে আছেন ।
আপনি যদি সফল হতে চান এবং সামনে এগিয়ে যেতে চান তবে সত্যটি গ্রহণ করুন। যারা সত্য বলে তাদের দোষ দেয়া হলে এর পরিণতি ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে।
পরীক্ষার সময় আমরা প্রায়ই নিজেকে সর্বশক্তিমানের নিকটবর্তী হতে দেখি। সুতরাং তিনি যখন আমাদের জন্য সেগুলো সমাধান করেন তখন কেন আমরা তাঁর কাছ থেকে নিজেকে দূরে রাখব?
আপনি যদি কারও সাফল্য বা জনপ্রিয়তায় বিরক্ত হন, তখন ধরে নিন আপনার হৃদয়কে যাচাই বাছাই করার সময় এসেছে। এটি পরিশুদ্ধ করতে শুরু করুন। অনুভূতিকে দ্রুত উত্তেজিত হতে দেবেন না।
আপনি যখন ভাবেন যে, হাল ছেড়ে দেয়া এবং আশা হারাবার যৌক্তিক কারণ আছে, তখন আপনার চোখ দিয়ে নয় বরং হৃদয় দিয়ে গভীরভাবে দেখুন। সর্বশক্তিমান অবশ্যই আপনাকে পথ প্রদর্শন করবেন।
দিনের শেষে, আপনার কাজটি কত লোক পছন্দ করল সেটি বিবেচ্য নয়। কতটা সততা, কতটা হৃদয় ও প্রাণ দিয়ে আপনি এটি করেছেন তাই মূল্য বিবেচ্য।
বাধা নিয়ে উদ্বিগ্ন হবেন না। তিনি কোনো কারণে এটি সেখানে রেখেছেন। এটি কেবল আপনার পথ অবরুদ্ধ করা নাও করতে পারে। বরং বাধা আপনাকে আরও ভালো পথ খুঁজে পেতে সহায়তা করতে পারে।
প্রতিটি পরীক্ষা একটি লুকানো আশীর্বাদ সাথে নিয়ে আসে। পরীক্ষায় এতটা পেরেশান হবেন না যে আপনি এতে ভালো কিছু মিস করছেন। এটি দেখতে আপনার হৃদয়কে উন্মুক্ত করুন।
এই জীবনে গর্ব, অহঙ্কার এবং ঔদ্ধত্যের কোনো স্থান নেই। আমাদের সবারই একই পরিণতি রয়েছে। আমাদের সবাইকে সর্বশক্তিমানের কাছে ফিরে যেতে হবে। কাউকে এখান থেকে রেহাই দেয়া হয় না।
পৃথিবীর বাস্তবতা হলো এ বিশ্ব বিদ্বেষী লোকে পূর্ণ হয়ে গেছে। তাদের কোনোভাবে আপনাকে আটকে রাখতে দেবেন না। তাদের মানসিকতা হিংসা এবং তুলনায় আটকা পড়ে আছে। তাদের উপেক্ষা করুন।
আপনার কৃপা পাওয়ার জন্য অন্য লোকেরা আপনাকে ঘৃণা করবে। এটা প্রত্যাশিত। এ ধরনের ঘৃণায় কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাবেন না। তবে তাদের আরো বেশি দেয়ার জন্য সর্বশক্তিমানের কাছে প্রার্থনা করুন।
অর্থ থেকে আপনার ফোকাসটি আপনার আত্মাকে সমৃদ্ধ করার দিকে সরিয়ে নিন। এভাবেই আপনি সত্যিকারের ধনী এবং প্রচুর আশীর্বাদ লাভ করবেন। সর্বশক্তিমানই সবকিছু দেবেন।
অত্যন্ত তিক্ত কিছু লোক হলেন তারা যারা অন্যদের হিংসা করেন। মহা লোকদের জীবন কিভাবে চলছে তার দিকে মনোনিবেশ বন্ধ করে নিজের প্রতি মনোনিবেশ করুন।
কথায় চতুর ব্যক্তি থেকে সাবধান থাকুন। এ ধরনের লোক ক্ষমতাধরদের সাথে কারসাজি করতে তা ব্যবহার করেন । এমন জ্ঞানী ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হোন যারা পড়ে যায় না।
কেউ কেউ ধনী হয়ে ওঠেন এবং তাদের যা আছে তার জন্য সর্বশক্তিমানকে ধন্যবাদ দিতে ভুলে যান। সন্তুষ্ট থাকতে শিখুন। আপনি ধনী লোকদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকবেন।
যখন মনে হবে আপনার পৃথিবী শেষ হতে চলেছে তখনও আপনি হাল ছেড়ে দেবেন না। এর পরিবর্তে তাকান এবং হাসুন কারণ আপনি জানেন সেই সর্বশক্তিমানই আবার আপনার বিশ্বাস পরীক্ষা করছেন।
কখনো কারো দিকে নীচ হয়ে তাকাবেন না। আপনার কাছে তিনি নিকৃষ্ট হতে পারেন তবে তিনি সর্বশক্তিমানের সবচেয়ে কাছেরও হতে পারেন । সুতরাং লোকদের সাথে সম্মানের সাথে আচরণ করুন।
প্রকৃত জ্ঞানের অধিকারীরা নম্র হন। এ ধরনের ব্যক্তি অহঙ্কারী এবং ঔদ্ধত্যপূর্ণ হন না। তিনি বাইরের হইচইকে পরোয়া করেন না। তার থাকে প্রশান্ত আত্মবিশ্বাস।
কষ্টের মধ্যে পড়লে মন খারাপ হওয়াই স্বাভাবিক। তবে নিজেকে এক সাথে ধরে রাখার চেষ্টা করুন। সর্বশক্তিমান আপনাকে হতাশ করবেন না। আপনার প্রচেষ্টা নষ্ট হবে না।
আপনার স্বাস্থ্যকে কখনই নিশ্চিত বিষয় মনে করবেন না। চোখের পলকে সব কিছু বদলে যেতে পারে। সর্বশক্তিমান সব ধরনের ভোগান্তি ও অসুস্থতা থেকে নিরাময় দান করুন।
যখনই আপনি নিজের জীবন নিয়ে অসন্তুষ্ট হন তখন মনে রাখবেন যে অন্য অনেকে আপনার মতো জীবন যাপনের স্বপ্ন দেখছে। তাই সর্বদা সর্বশক্তিমানকে ধন্যবাদ দিন এবং বিনীত থাকুন।
আপনি বিশ্বের জন্য সুখের অনুসন্ধান করতে পারেন তবে সর্বশক্তিমান যা আপনাকে দিয়েছেন তা দিয়ে সন্তুষ্ট হওয়া থেকে শুরু না করলে আপনি তা পাবেন না। তাঁকে ধন্যবাদ দিন।
আপনার সম্পদ, পরিবার এবং নিজের সব কিছুই আপনার কাছে ঋণ দেয়া রয়েছে। এমন একদিন আসবে যেদিন এ ঋণ পরিশোধ করতে হবে। সেই দিনের জন্য প্রস্তুতি নিন। সবহারা হবেন না।
এরপর কাল : জীবন বদলানোর টিপস : ক্ষমা
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা