জ্ঞান মুমিনের পাথেয়
- মাওলানা জাফর আহমাদ
- ০৩ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০
মানুষ ছাড়া সব সৃষ্ট জীব জন্মগত জ্ঞান নিয়েই দুনিয়ায় আগমন করে অথবা আল্লাহর নির্দেশ মোতাবেক তারা সার্বক্ষণিক পথ চলে। এ জন্য জন্মের পর তাদের আলাদাভাবে কোনো স্কুল-কলেজ, মাদরাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে হয় না। তাদের পথের দিশার জন্য কোনো নবী-রাসূলের আগমনও ঘটেনি বা তাদের জন্য কোনো আসমানি কিতাবও নাজিল হয়নি। আল্লাহর সরাসরি নিয়ন্ত্রণে থেকে এরা তাঁরই দেয়া জ্ঞানে আকাশে ওড়ে, পানিতে সাঁতার কাটে, নিজেদের আবাস তৈরি করে এবং রিজিক সংগ্রহের জন্য বেরিয়ে পড়ে। পৃথিবী নামক বিশাল এ কারখানাটি মহাশক্তিধর সুবিজ্ঞানী আল্লাহ তায়ালার দেয়া কঠিন নিয়মের বন্ধনে আবদ্ধ। আল্লাহর বেঁধে দেয়া নিয়মের ভেতর থেকে প্রতিটি সৃষ্টি ক্রিয়াশীল। ফলে কোথাও বিশৃঙ্খলার লেশমাত্র নেই।
কিন্তু মানুষ এসব কিছুর ব্যতিক্রম। তাদের জ্ঞান আহরণের শক্তি দেয়া হয়েছে। ঈমান ও জীবনের জন্য তাদের জ্ঞানার্জনের সাধনা করতে হয়। এ জ্ঞানসাধনাই সৃষ্টিলোকে মানুষকে শ্রেষ্ঠত্বের আসনে বসিয়েছে। জ্ঞানই মানুষের চালিকাশক্তি। এ জন্য বলা হয় ‘জ্ঞানই শক্তি’। জ্ঞানের শক্তি বলে মানুষ গোটা পৃথিবীর শক্তিশালী সৃষ্টিকেও তাদের নিয়ন্ত্রণে এনে নিজেদের কাজে ব্যবহার করে। জ্ঞানের আলো ছাড়া কোনো ব্যক্তি এক কদমও চলতে পারে না। জ্ঞানহীন ব্যক্তির সুনির্র্দিষ্ট কোনো পথ নেই। অন্ধকারে যেকোনো পথে চলতে চলতে বিপদের অতল গহ্বরে নিমজ্জিত হতে পারে। কারণ আলোর পথ হয় একটি ও সুনির্দিষ্ট আর অন্ধকারের পথ হয় অসংখ্য ও অনির্র্দিষ্ট।
মানবমণ্ডলীকে সর্বপ্রথম নি¤েœাক্ত বিষয়গুলোর জ্ঞানার্জন করতে হবেÑ
কে আমাদের সৃষ্টি করলেন?
তার সঠিক পরিচয় কী?
মানুষের পরিচয় কী?
স্রষ্টার সাথে মানুষের কী সম্পর্ক?
মানুষকে কী উদ্দেশ্যে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে?
মানুষের কর্মপন্থা, কর্মনীতি কী হবে?
দৃশ্যমান এই যে পৃথিবীর জীবন, এটিই কি শেষ, না কি মৃত্যুর পর আবারো নতুন জীবন শুরু হবে। কোনটি ভালো কোনটি ন্যায়, কিসে মানুষের কল্যাণ নিহিত। এখানকার ভালো-মন্দের কোনো পুরস্কার বা শাস্তির ব্যবস্থা আছে কি? নাকি খেল-তামাশার পর মাটির সাথে মিশে যাবো?
এ গুলোর সঠিক উত্তর আমাদের আহরণ করতে হবে এবং এ জন্য আমাদের আল কুরআন ও রাসূল সা:-এর সুন্নাহর দ্বারস্থ হতে হবে। জন্ম থেকে মৃত্যু মানুষের দুনিয়ার জীবন। এটি খুবই সীমিত সময়। মৃত্যুপরবর্তী আরেকটি জীবন শুরু হবে, তার নাম আখিরাত। এটি সীমাহীন বা অন্তহীন এক জীবন। যার শুরু আছে, শেষ নেই। মূলত মানুষের জীবনের দুটি অধ্যায়। দুনিয়া ও আখিরাত। দুটিই একটি অপরটির পরিপূরক। এর একটি ছাড়া অন্যটির সফলতা আশা করা যায় না। মানুষ ইচ্ছা করলেই যেমন দুনিয়ার জীবন থেকে এক লম্ফ দিয়ে আখিরাতে পৌঁছে যেতে পারবে না। আবার সে ইচ্ছা করলেই অনন্তকাল দুনিয়ায় বেঁচেও থাকতে পারবে না। আখিরাতের সফলতা দুনিয়ার সফলতার ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের মোনাজাতের মাধ্যমে এ শিক্ষাই দিয়েছেন ‘হে আমার রব! তুমি আমাকে দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণ দান করো এবং আমাকে দোজখের আজাব থেকে রক্ষা করো’ (সূরা বাকারা-২০১)। সুতরাং দুনিয়ার জীবনকে সফল করার জন্য নির্ভুল জ্ঞান আহরণ করতে হবে।
আল কুরআনের পরিভাষায় জ্ঞানের আরবি শব্দ হলো ‘ইলম’। ইলম বা জ্ঞানের একমাত্র উৎস হলো আল্লাহ রাব্বুল আলামিন। যুগে যুগে সব আম্বিয়ায়ে কেরামগণ আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রাপ্ত জ্ঞানের আলোকে রিসালাতের দায়িত্ব পালন করে গেছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হয়তো তোমরা কোনো জিনিস মন্দ মনে করছ, অথচ তা তোমাদের জন্য ভালো। আবার হয়তো কোনো জিনিসকে পছন্দ করছ, অথচ তা তোমাদের জন্য মন্দ। আসলেই আল্লাহই সঠিক জানেন। তোমরা জানো না’ (সূরা বাকারা-২১৬)। সুতরাং মানুষের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জীবনের সব ক্ষেত্রে কল্যাণ তথা শান্তি, নিরাপত্তা, স্বাচ্ছন্দ, উন্নতি ও প্রগতির জন্য সব মানুষকেই স্রষ্টার জ্ঞানের দ্বারস্থ হওয়ার বিকল্প কিছুই নেই। আল্লাহর দেয়া জ্ঞানকে বাদ দিয়ে যখনই মানুষ বিকল্প জ্ঞানের আলোকে জীবন পরিচালনার উদ্যোগ নিয়েছে, তখন কল্যাণের পরিবর্তে অকল্যাণ ও অশান্তি বারবার পৃথিবীকে নাস্তানাবুদ করেছে। পৃথিবীর দেশে দেশে উদ্ভট জীবন দর্শন তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ হয়ে আছে। তাদের মস্তিষ্কপ্রসূত জ্ঞান বা দর্শন দ্বারা পরিচালিত জীবন বরাবরই প্রকৃতির সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। কারণ প্রকৃতি রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ তো আল্লাহর হাতে। আল্লাহর দেয়া জ্ঞানরাজ্যের বাইরে জ্ঞানচর্চা মানে জনৈক দার্শনিকের দর্শনের কৌতুকপূর্ণ সংজ্ঞার মতোই। তিনি বলেছেন, ‘দর্শন হলোÑ যে অন্ধকার ঘরে কোনো বিড়াল নেই সেখানে কালো বিড়ালের সন্ধান করা।’ সৃষ্টিকর্তার দেয়া জ্ঞানকে বাদ দিয়ে যখনই কোনো চিন্তাবিদ ও দার্শনিক তার উর্বর মস্তিষ্ক দিয়ে একটি দর্শন বা মতবাদ সৃষ্টি করেছে, তখন দেখা গেছে এ মতবাদের প্রতিক্রিয়ায় আরও নতুন নতুন বস্তাপচা মতবাদের সৃষ্টি হয়েছে। আর এসব বিভিন্ন মতবাদের যাঁতাকলে পড়ে পৃথিবীর মানবতা বরাবরই যন্ত্রণা ও দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ আমরা পুঁজিবাদ ও সমাজতন্ত্র দুটি প্রান্তিক মতবাদসহ জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ, দ্বন্দ্ববাদ ও বস্তুবাদের কথা বলতে যেগুলো কারো আঘাতে নয়, নিজে নিজেই আত্মহননের পথ বেছে নিতে হয়েছে। কারণ এর কোনোটিই প্রকৃতি রাজ্যের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ ছিল না। জীবন ও জগৎ এবং পরকাল সম্পর্কে ইসলাম যে দর্শন পেশ করেছে সেটিই অধিকতর সামঞ্জস্যশীল। একমাত্র তা-ই দুনিয়ার শাস্তি ও আখিরাতের মুক্তির পথ। বিকল্প যত পথ ও মত রয়েছে, সবই ভ্রান্ত এবং মানুষের দুর্ভোগই বয়ে আনে।
ইসলামের মোড়কে একটি বিষয় আমাদের জীবন ব্যবস্থাকে দারুণভাবে প্রভাবিত করেছে, সেটি হলোÑ ভ্রান্ত পথে আত্মশুদ্ধির মতবাদ বা দর্শন। পৃথিবীর অন্যান্য ভ্রান্ত মতবাদগুলো ইসলামের জ্ঞানরাজ্যকে যতটুকু না উলট-পালট করেছে, এ ধরনের আত্মশুদ্ধি মানুষের জীবনকে ভ্রান্তির বেড়াজালে আবদ্ধ করে রেখেছে। আত্মশুদ্ধির প্রথম শর্ত হলো আল কুরআনের জ্ঞান। আল কুরআনের হজরত ইবরাহিম আ:-এর দোয়া এখানে বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য, তিনি দোয়া করছেনÑ ‘পরোয়ারদিগার! তুমি সে জাতির প্রতি তাদের মধ্য থেকে এমন একজন নবী পাঠাও যিনি তাদেরকে তোমার বাণী পড়ে শোনাবেন, তাদেরকে কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দেবেন এবং তাদের চরিত্র সংশোধন করবেন। নিশ্চয় তুমি সার্বভৌম ক্ষমতাসম্পন্ন এবং বিজ্ঞ’ (সূরা বাকারা-১২৯)।
হজরত ইবরাহিম আ: ও ইসমাইল আ: বাবা-ছেলে মিলে মহান আল্লাহর কাছে অনাগত ভবিষ্যতের কল্যাণ কামনায় যে দোয়াটি করেছিলেন তার প্রতি গভীর মনযোগ নিবদ্ধ করুন। দোয়াটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এবং অত্যধিক গুরুত্বের দাবি রাখে। মুসলিম জাতির পিতা দোয়াটিতে একটি ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন। প্রথমেই ‘তোমার বাণী পড়ে শোনাবে। দ্বিতীয়, কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দেবে। তৃতীয়, তাজকিয়াতুন নফস বা আত্মশুদ্ধি বা চরিত্র সংশোধন করবে। তাহলে আমরা বলতে পারিÑ আত্মশুদ্ধির জন্য তার আগে আরো দুটি ধাপ পেরিয়ে আসতে হবে। সে দুটি ধাপ হলোÑ এক. কিতাবের শরণাপন্ন হতে হবে। দুই. হিকমত বা প্রজ্ঞাসম্পন্ন হতে হবে। তারও আগে আরেকটি বিষয় খুব ভালো করে মনে রাখতে হবে যে, আত্মশুদ্ধি অবশ্যই রাসূল সা:-এর দেখানো পথে হতে হবে। কারণ উল্লিখিত আয়াতে হজরত ইবরাহিম আ: প্রথমেই বলেছেনÑ ‘তাদের মধ্যে থেকেই এমন একজন নবী পাঠাও।’ এর মাধ্যমে একটি বিষয় সুস্পষ্ট হয় যে, নবীর শিক্ষা ও দেখানো পথেই নিজেকে পরিশুদ্ধ করতে হবে। রাসূলের পথ হলো আসমানি কিতাব। আর আল্লাহর দেয়া এ কিতাবই হলো সব জ্ঞান বা প্রজ্ঞার একমাত্র উৎস। সব আম্বিয়ায়ে কেরাম আল্লাহর দেয়া জ্ঞান, হিকমত ও কিতাব অনুযায়ী মানুষের চরিত্র গঠন করেছেন। আল কুরআনের বিভিন্ন জায়গায় নবীদের নাম ধরে ধরে তাদের প্রথমেই ইলম ও হিকমত শিক্ষা দেয়ার কথা বলা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেনÑ ‘এরও আগে আমি ইবরাহিমকে শুভবুদ্ধি ও সত্যের জ্ঞান দান করেছিলাম এবং আমি তাকে খুব ভালোভাবেই জানতাম’ (সূরা আম্বিয়া-৫১)। ‘আর আমি লুতকে প্রজ্ঞা ও জ্ঞান দান করেছিলাম’ (সূরা আম্বিয়া-৭৪)। ‘আর এ একই নিয়ামত (বুদ্ধিমত্তা, প্রজ্ঞা ও জ্ঞান) নুহকে দান করেছিলাম’ (সূরা আম্বিয়া-৭৬)। ‘আর এ নিয়ামতই (বুদ্ধিমত্তা, প্রজ্ঞা ও জ্ঞান) আমি দাউদ ও সুলাইমানকে দান করেছিলাম’ (সূরা আম্বিয়া-৭৮)। ‘আর এ একই নিয়ামত (বুদ্ধিমত্তা, প্রজ্ঞা ও জ্ঞান) আইয়ুবকেও দান করেছিলাম’ (সূরা আম্বিয়া-৮৩)। আর এ একই নিয়ামত ইসমাইল, ইদ্রিস জুুলকিফল অর্থাৎ জাকারিয়াকে দান করেছিলাম’ (সূরা আম্বিয়া-৮৫)। আর মাছওয়ালাকেও আমি অনুগ্রহভাজন করেছিলাম’ (সূরা আম্বিয়া-৮৭)।
প্রশ্নাকারে প্রথমেই বলা হয়েছিলÑ মানুষকে প্রাথমিকভাবে কী কী বিষয়ের জ্ঞান আহরণ করতে হবে। তারই সংক্ষিপ্ত উত্তর নি¤েœ দেয়া হলোÑ
মানুষকে জানতে হবে যে, আল্লাহ তায়ালা আমাদের সৃষ্টি করেছেন। তাঁর পরিচয় হলোÑ তিনি বিশ্বস্রষ্টা, তিনি সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক, তিনি এক ও একক, তাঁর কোনো অংশীদার নেই। তিনি একমাত্র ইলাহ অর্থাৎ একমাত্র হুকুমদাতা প্রভু বা মনিব, আইনদাতা ও বিধানদাতা, তিনি রাজাধিরাজ। গোটা সৃষ্টিজগতে তাঁরই রাজত্ব চলছে।
জীব হিসেবে মানুষের প্রথম পরিচয় হলো মানুষ ‘নৈতিক জীব’ কারণ মানুষের বিবেক আছে। মানুষকে জ্ঞান-বুদ্ধি দান করা হয়েছে। জ্ঞান সাধনার কারণেই মানুষ শ্রেষ্ঠ জীব ও সেরা সৃষ্টির আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে।
আর মুসলমানদের জাতি হিসেবে একটি স্বতন্ত্র পরিচয় রয়েছে, সেটি হলোÑ এরা মধ্যমপন্থী জাতি। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জাতি হিসেবে মানবজাতির কল্যাণে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য পাঠানো হয়েছে। যারা এ দায়িত্ব পালন করবে না, তাদের মৃত্যু পরবর্তী জীবনে আল্লাহর আদালতের সামনে জবাবদিহির জন্য দাঁড়াতে হবে। সেখানে ভালো-মন্দের পুরস্কার ও শাস্তি ভোগ করতে হবে।
মানুষের সাথে স্রষ্টার সম্পর্ক হলোÑ তিনি মানুষের স্রষ্টা, মানুষ তাঁর সৃষ্টি। তিনি মালিক, মানুষ তাঁর গোলাম। তিনি রাব্বুল আলামিন হিসেবে সর্বদায় মানুষকে লালন-পালন করছেন। তিনি আসমান ও জমিনের রাজা, মানুষ ইচ্ছা-অনিচ্ছায় তাঁরই প্রজা। কারণ তাঁর রাজত্বের বাইরে যাওয়ার সাধ্য কারো নেই।
জ্ঞানের অভাব আমাদের ইজতেহাদের দরজাকেও বন্ধ করে দিয়েছে। জ্ঞান ও ইজতেহাদের অভাবে মুসলিমবিশ্ব পৃথিবীর প্রভূত সম্পদ ও ভৌগোলিক অবস্থানের দিকে থেকে অধিকতর সুবিধাজনক স্থানে থাকা সত্ত্বেও পৃথিবীজুড়ে তারা কর্তৃত্বহীন হয়ে পড়েছে। হীনম্মন্যতা ও অবনতিশীল মানসিকতা তাদের ঘিরে ফেলেছে। তাদের মাথা আর উন্নত হয় না এবং এটি তাদের ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু করে সমাজ, রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক জীবনকেও আক্রান্ত করেছে। সবচেয়ে করুণ দশা হলো আমাদের শাসকদের। তারা অনেকটা মেরুদণ্ডহীন প্রাণীতে পরিণত হয়েছেন। সার্বিকভাবে মুসলিম উম্মাহ মৌলিক জ্ঞান থেকে এমনভাবে ছিটকে পড়েছে, যেভাবে ধনুক থেকে তীর ছুটে যায় কোনো অজানা স্থানে। ফলে আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ পশ্চিমা বিশ্ব যে হারে তাদের কর্র্তৃত্ব সম্প্রসারিত করে চলেছে, ঠিক সেই হারে বা আরো ব্যাপকাকারে বা ইতোমধ্যে পৃথিবীর পশ্চাৎপদ দেশের কাতারে নাম লেখাচ্ছে বা পরিণত হয়েছে। করুণ এ দৈন্যদশা থেকে মুক্তি পেতে হলে মুসলিম উম্মাহকে তাদের হারানো ঐতিহ্যের খুঁজে এখনই বেরিয়ে পড়তে হবে। জ্ঞান-বিজ্ঞানে আবার পৃথিবীকে রাঙিয়ে দিতে হবে। মৌলিক জ্ঞানে সমৃদ্ধ হলে আমাদের ইজতেহাদের বন্ধ দরজাও একটির পর একটি ক্রমান্বয়ে খুলে যাবে। জাতি হিসেবে আমরা আবার শ্রেষ্ঠ জাতিতে পরিণত হবো, ইনশাআল্লাহ।
আরেকটি বিষয় ভালো করে মনে রাখা প্রয়োজন যে, ঈমানের অপর নাম জ্ঞান। যার জ্ঞান নেই তিনি পদে পদে ঈমানকে এমনভাবে বিসর্জন দেন যে, তিনি টেরই পান না। তাই ঈমানকে টিকিয়ে রাখার জন্য উল্লিখিত জ্ঞান ছাড়াও সর্বদায় আল্লাহর অধিকারের সীমা সম্পর্কে জানতে হবে। এ জন্য আল কুরআনের দ্বারস্থ হতে হবে। কারণ আল কুরআনই আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে মানবজাতির জ্ঞান আহরণের সর্বশেষ উৎস। এর বাইরে কোথাও পরিপূর্ণ জ্ঞান খুঁজে পাওয়া যাবে না। যা পাওয়া যাবে তা নিতান্তই আংশিক, অপরিপূর্ণ বা খুবই ক্ষণস্থায়ী। পরিপূর্ণ, পরিপক্ব ও নির্ভুল জ্ঞান আল কুরআনেই রয়েছে। কুরআনকে সহজভাবে জানার জন্য আল হাদিস তথা রাসূল সা:-এর জীবনচরিতের সাহায্য নিতে হবে।
লেখক : প্রবন্ধকার
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা