শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ান
- এহসান বিন মুজাহির
- ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০
দেশের বিভিন্ন স্থানে শীত জেঁকে বসেছে। হিমশীতল কুয়াশার চাদরে ঢেকে যাচ্ছে দেশ। কনকনে ঠাণ্ডায় জনজীবন বিপর্যস্ত। শীতকালে সবচেয়ে সমস্যায় পড়ে দেশের দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষ। দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষের জন্য শীতকাল বড় কষ্টের। শীতকাল এলেই দরিদ্র অসহায় মানুষ শীতে জবুথবু হয়ে যায়। খাবারের চেয়েও তাদের শীত নিবারণ অতীব প্রয়োজন হয়ে পড়ে। শৈত্যপ্রবাহের ব্যাপকতা থেকে রক্ষা পাওয়ার ন্যূনতম ব্যবস্থাপনাও তাদের থাকে না। ফলে অসহায় ও হতদরিদ্রদের কষ্ট কেবল বেড়েই যায়। বৃদ্ধ, শিশু ও ফুটপাথের গরিব মানুষ গরম কাপড়ের অভাবে মারাও যায়। হাড় কাঁপানো শীতের কবল থেকে তাদের উদ্ধার করা এবং সামর্থ্যরে ভিত্তিতে সাহায্য-সহযোগিতার হাত প্রসারিত করা প্রত্যেক মুমিনের ঈমানি দায়িত্ব। এটা অন্যতম একটি ইবাদতও বটে। পবিত্র কুরআন কারিমে এরশাদ হয়েছে, ‘তাদের (বিত্তশালী) ধনসম্পদে অভাবগ্রস্ত ও বঞ্চিতদের অধিকার রয়েছে’ (সূরা জারিয়াত : ১৯)। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কুরআনে অন্যত্র এরশাদ করেন, ‘তারা আল্লাহর সন্তুষ্টি তথা তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়ে দরিদ্র, এতিম ও বন্দীদের খাদ্য দান করে’ (সূরা দাহর : ৮)। হজরত আবু সাঈদ রা: বলেন, হুজুর সা: বলেছেন যে, ‘কোনো মুসলমান অপর মুসলমানকে বস্ত্রহীনতায় বস্ত্র দিলে আল্লাহপাক তাকে জান্নাতের সবুজ বস্ত্র পরাবেন’ (তিরমিজি : ২৮৩৫)। হজরত রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘তোমরা ক্ষুধার্তকে খাদ্য দাও, অসুস্থ ব্যক্তির খোঁজখবর নাও, বস্ত্রহীন লোকদের বস্ত্র দাও এবং বন্দীকে মুক্ত করে দাও’ (বোখারি : ২৪১৭)। রাসূল সা: বলেন, ‘হে বনি আদম! যদি উদ্বৃত্ত অর্থ দান করো, তাহলে ভালো হবে আর আটকে রাখলে ক্ষতি হবে’ (আবু দাউদ : ১৯৬৪)। রাসূল সা: বলেছেন, ‘বান্দাহ যতক্ষণ তার ভাইকে সাহায্য করে, আল্লাহ ততক্ষণ বান্দাহকে সাহায্য করে থাকেন’ (মুসলিম : ২১৪৮)। প্রিয়নবী সা: এরশাদ করেন, ‘যে মুসলমান অপর কোনো মুসলমানকে বস্ত্রহীন অবস্থায় বস্ত্র দান করবে, আল্লাহ তাকে জান্নাতে সবুজ বর্ণের পোশাক পরাবেন, খাদ্য দান করলে তাকে জান্নাতের ফল খাওয়াবেন, পানি পান করালে জান্নাতের শরবত পান করাবেন’ (আবু দাউদ : ১৭৫২)। রাসূল সা: আরো বলেন, ‘যে ব্যক্তি দুনিয়াতে অপরের একটি প্রয়োজন মিটিয়ে দেবে, পরকালে আল্লাহ তার ১০০টি প্রয়োজন পূরণ করে দেবেন এবং বান্দাহর দুঃখ-দুর্দশায় কেউ সহযোগিতার হাত বাড়ালে আল্লাহ তার প্রতি করুণার দৃষ্টি দেন’ (মুসলিম : ২৪১৯)।
মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। সমাজে সেই মানুষেরই একটা অংশ গরিব-দুস্থ। তারা আমাদের সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ। মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার ন্যূনতম মৌলিক অধিকারগুলো তাদেরও ন্যায্যপ্রাপ্য। তাই গরিব-অসহায়, দুস্থের প্রতি আন্তরিক ভালোবাসা প্রদর্শন ও সহানুভূতিশীল হওয়া অত্যাবশ্যক। আসুন, আমরা মানবিক মূল্যবোধ থেকে সবাই মিলে শীতে ফুটপাথে বা খোলা আকাশের নিচে বসবাসকারী অসহায় ছিন্নমূল মানুষের পাশে সামর্থ্যরে ভিত্তিতে সহযোগিতার হাত প্রসারিত করি।
লেখক : মুফতি
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা