২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

নাজাতের মাস রমজান

-


হিজরি সনের সর্বাধিক, সম্মানিত, সর্বাধিক মর্যাদাপূর্ণ, সর্বোত্তম ও বরকতময় মাস হলো রমজান মাস। এ মাসের প্রতিটি মুহূর্তে রহমত-বরকত আল্লাহর পক্ষ থেকে তার সৃষ্টির জন্য আসমান থেকে অবিরত ধারায় নামতে থাকে। রহমত, বরকত ও মাগফেরাতের এ মাস। এ মাসে রয়েছে মুমিনদের জন্য সিয়ামের মতো মহানিয়ামতপূর্ণ ইবাদত। এ মাসেই নাজিল হয়েছে মানবতার মুক্তিসনদ আল কুরআন। এ মাসে রয়েছে সেই মহিমান্বিত রজনী, যে রজনী কি না হাজার মাসের থেকেও উত্তম। তা ছাড়া সিয়ামের মধ্যে রয়েছে ইফতার, সাহরি, তারাবিহ প্রভৃতির মতো বরকতপূর্ণ সব বিষয়। অন্য দিকে, সিয়াম পালনের মাধ্যমে আত্মসংযম, আত্মশুদ্ধি, তাকওয়া অর্জন, সহমর্মিতা, ভ্রাতৃত্ববোধ প্রভৃতি অনুশীলন বা সাধনায় আত্মনিয়োগ করার মহাসুযোগ।
রমজান মাস শুরুর আগ থেকেই অর্থাৎ মধ্য শাবান থেকে সমগ্র মুসলিম বিশ্বে সাজসাজ রব পড়ে যায় রমজানকে স্বাগত জানানোর জন্য। মুসলিম দেশগুলোর কর্ণআরো আগ থেকেই সতর্ক হয়ে যান বাজার নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে। যেন রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য অস্বাভাবিক না হয়ে যায়, খাদ্যদ্রব্যের সরবরাহ ঠিক থাকে প্রভৃতি বিষয়ে। আমরা দেখতে পাই সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরনের নমনীয়তা কমনীয়তা বিরাজ করে। সমাজে শান্তির একটি ফল্গুুধারা বইতে থাকে। ‘রোজা’ শব্দটি আরবি ভাষার শব্দ নয়। এটি ফারসি শব্দ। এর শাব্দিক অর্থ উপবাস। এর আরবি প্রতিশব্দ হলো ‘সাওম’। যার আভিধানিক অর্থ বিরত রাখা, বারণ করা বা ফিরিয়ে রাখা। শরিয়তের পরিভাষায়, ‘সুবহে সাদিক থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত নিয়তসহকারে কোনো প্রকার পানাহার এবং যৌনাচার থেকে বিরত থাকার নাম সাওম বা রোজা।’ ‘আরবি বছরের নবম মাস হলো পবিত্র রমজান মাস। ‘রমজান শব্দটি আরবি ‘রমজ’ ধাতু থেকে গৃহীত হয়েছে। ‘রমজ’ শব্দটির একাধিক অর্থ রয়েছে, ক. রমজ অর্থ জ্বলন বা দহন। একজন রোজাদার রোজা রাখার কারণে ক্ষুধার তীব্রতায় পেট জ্বলতে থাকে, তাই বলা হয় রোজাদার দগ্ধ হয়। খ. আরবি ‘আরোমাদাউ’ শব্দের অর্থ উত্তাপের তীব্রতা। আরবি মাসের নাম নির্ধারণকালে যে মাসে সূর্যের তাপ প্রখর ও তীব্র হয়েছিল সে মাসের নামকরণ করা হয়েছে ‘রমজান’। গ. এই মাসের নেক আমলগুলো বান্দার গুনাহখাতা জ্বালিয়ে ভস্ম করে দেয়, তাই এই মাসের নামকরণ করা হয়েছে রমজান। ঘ. যেমনিভাবে সূর্যের তাপে বালুকারাশি উত্তপ্ত হয়ে থাকে, তেমনি এই মাসে সৎ উপদেশ বাণী শ্রবণে ও পারলৌকিক চিন্তা ভাবনায় বান্দার হৃদয় উত্তাপ ও উচ্ছ্বাস গ্রহণ করে থাকে। তাই এই মাসকে রমজান মাস বলা হয়’। (কুরতুবি; উদ্ধৃত: সিয়াম ও রমজান মুহাম্মদ আবু তাহের সিদ্দিকী সম্পাদিত, পৃ. ৯৯) রোজা উম্মতে মুহাম্মাদির ওপর ফরজ করা হয়েছে। অবশ্য পবিত্র কুরআন থেকে জানা যায়, আমাদের পূর্ববর্তী নবীদের উম্মতের ওপরও রোজা ফরজ ছিল। এ বিষয়ে পবিত্র কুরআনের ঘোষণাÑ
‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন করে তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপরও ফরজ করা হয়েছিল। সম্ভবত এর ফলে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারবে।’ (বাকারা: ১৮৩ আয়াত)
ওই আয়াতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে রোজার মূল উদ্দেশ্য হলো ‘তাকওয়া’।
তাকওয়া: ‘তাকওয়া’ শব্দটি আরবি। এর আভিধানিক অর্থ হলো সাবধানী বা সতর্ক হওয়া, ভয় করা, পরহেজ করা, বেঁচে চলা প্রভৃতি। শরিয়তের পরিভাষায় তাকওয়া শব্দের অর্থ হচ্ছে ‘আল্লাহ তা’আলার প্রতি শ্রদ্ধামিশ্রিত ভয়ে এবং রাসূলুল্লাহ সা:-এর সুন্নাহ বা পদ্ধতি অনুসারে কোনো নিষিদ্ধ ও গর্হিত কাজ থেকে বিরত থাকার উদ্দেশ্যে ‘মনের স্বতঃস্ফূর্ত প্রবল ইচ্ছা’। আর যার মধ্যে তাকওয়া গুণ বর্তমান আছে তিনিই হলেন মুত্তাকি।
তাকওয়ার বিষয়ে বলতে গিয়ে আবদুল্লাহ বিন মাসউদ রা: বলেছেন, ‘তাকওয়ার অর্থ হচ্ছেÑ আল্লাহর আদেশের আনুগত্য করা, তার নাফরমানি না করা, আল্লাহকে স্মরণ করা, তাকে ভুলে না যাওয়া এবং আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা ও তার কুফরি না করা।’ (সাপ্তাািহক আদ্দাওয়াহ, ১০-২-১৯৯৪, সৌদি আরব)
আমাদের দেশে তাকওয়ার ব্যাপারে অনেক ভুল বোঝাবুঝি আছে। কিছু লোক আছে যারা ইসলামের ফরজ, ওয়াজিব ও হারাম কাজ সম্পর্কে ভালোভাবে ওয়াকিবহাল নন, তারা বিশেষ কিছু সুন্নত ও নফল কাজ করে নিজেদের মোত্তাকি এবং অন্যদের মোত্তাকি নয় বলে মনে করেন। তারা হাতে তসবিহ, মাথায় টুপি-পাগড়ি, মুখে লম্বা দাঁড়ি, গায়ে লম্বা জামা এবং প্রস্রাব-পায়খানায় ঢিলা ব্যবহার করাকে তাকওয়ার মাপকাঠি মনে করেন। অথচ এগুলো সুন্নত ও মোস্তাহাবের বেশি কিছু নয়।
কিন্তু ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে ইসলামের অগণিত ফরজ-ওয়াজিব রয়েছে যেগুলো তারা পালন করেন না এবং সেগুলোর খবরও রাখেন না। যেমন, পর্দাহীনতা, সুদ, ঘুষ, সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের প্রতিরোধ, দাওয়াতে দ্বীন, দ্বীন প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব প্রভৃতি পালনের ব্যাপারে তারা উদাসীন।
পক্ষান্তরে, যারা এসব কাজ করেন এবং সেজন্য জান-মাল উৎসর্গ করেন তাদের তারা মোত্তাকি বলতে নারাজ। অথচ তারাই সত্যিকারের অর্থে মোত্তাকি।
নিয়ত : রোজার ক্ষেত্রে নিয়ত করা জরুরি। এ নিয়ত হবে সম্পূর্ণভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে। নিয়ত ছাড়া রোজা পালন হবে না। নিয়ত করার উত্তম সময় হলো সূর্যাস্ত থেকে সুবহে সাদিকের আগ পর্যন্ত। যদি ভুলক্রমে নিয়ত না করা হয় তবে দুপুরের আগ পর্যন্ত সময়ে করলেও হবে। অবশ্য রাতে ঘুমাবার পর নিয়ত আদায় হয়ে যাবে, কারণ সাহরি তো রোজা রাখার উদ্দেশ্যেই খাওয়া হয়। তবে মৌখিক নিয়ত করাই ভালো। অনেকেই মনে করেন নিয়ত করার পর কিছু খাওয়া জায়েজ নয়, এমন ধারণা ভুল। নিয়ত করার পরও সুবহে সাদেক পর্যন্ত হালাল জিনিস অবশ্যই খাওয়া জায়েজ।
তারাবি : ‘তারাবি’ অর্থ বিশ্রাম করা। দীর্ঘ কেরাত ও অধিক রাকাত আছে এ নামাজের মধ্যে। এ নামাজের মধ্যে বিশ্রাম নিয়ে আবার পড়তে হয় বলে একে তারাবি বলে। প্রতি চার রাকাত দীর্ঘ নামাজের পর বিশ্রাম নিতে হয়। ইমাম মালেক ছাড়া অন্যান্য ইমামরা সবাই তারাবি নামাজ ২০ রাকাত বলেছেন এবং সে মতো আমল করেছেন, তবে ৮ ও ১২ রাকাতের মতও আছে।
তারাবি নামাজকে সালাতুল কেয়াম বলা হয়। অবশ্য তাহাজ্জুদসহ রাতের নফল, সুন্নাত প্রভৃতি নামাজ ও কেয়ামুল লাইলের অন্তর্ভুক্ত।
এ নামাজ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানে ঈমান ও সওয়াবের নিয়তে সালাতুল কেয়াম পড়ে আল্লাহ তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেন। (বোখারি ও মুসলিম)
অন্য এক বর্ণনায় এসেছে রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, ‘আল্লাহ তার অতীত ও ভবিষ্যতের গুনাহগুলো মাফ করে দেন’। (বোখারি ও মুসলিম)
রাসূলুল্লাহ সা: আরো বলেছেন, ‘আল্লাহ তোমাদের ওপর রমজানের রোজা ফরজ করেছেন এবং আমি তোমাদের জন্য রমজানের সালাতুল কেয়ামকে সুন্নাত করেছি। যে রমজান মাসে ঈমান ও সওয়াবের নিয়তে রোজা রাখে ও সালাতুল কেয়াম আদায় করে তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়। নাসাঈর এক বর্ণনায় এসেছে, ‘তারা সদ্য নবজাত শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে যায়।’ (তিরমিজি নাসাঈ, আবু দাউদ, ইবনু মাজা)
সাহরি: ‘সাহরি’ উর্দু ভাষার একটি শব্দ। বাংলা ভাষায় শব্দটি বহুল প্রচলিত। রোজা রাখার জন্য ভোর রাতে যে খাবার খাওয়া হয় আরবি ভাষায় তাকে ‘সুহুর,’ ‘সাহুর’ বা ‘সাহার’ বলে। রোজা রাখার উদ্দেশ্যে সুবহে সাদেকের আগে যে হালাল খাদ্য গ্রহণ করা হয় তার মধ্যে অনেক সওয়াব, কল্যাণ ও বরকত রয়েছে। হজরত আনাস ইবন মালেক রা: থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘তোমরা শেষ রাতের খানা খাও। তাতে বরকত রয়েছে।’ (বোখারি-মুসলিম)
অন্যত্র হজরত ইবনে ওমর রা: থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ও ফেরেশতারা সাহরি গ্রহণকারীর জন্য প্রার্থনা করেন।’ (তাবারানি ও ইবনে হিব্বান)
আহলে কিতাবরাও রোজা রাখে কিন্তু তারা সাহরি খায় না। এ বিষয়টি আমাদের ও তাদের মধ্যে পার্থক্য হিসেবে রাসূলুল্লাহ সা: উল্লেখ করেছেন। আমর ইবনে আস রা: থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা: এরশাদ করেছেন আমাদের এবং আহলে কিতাবের মধ্যে পার্থক্য হলো সাহরি খাওয়া। আর আমাদের তো প্রভাত উদয়ের আগ পর্যন্ত পানাহারের অনুমতি রয়েছে। (মুসলিম)
সাহরি খাওয়ার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য সম্বন্ধে বলতে গিয়ে রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘তোমরা দিনে রোজার জন্য সাহরি খাবারের সাহায্য নাও এবং রাতে নামাজের জন্য দুপুরে নিদ্রাবিহীন বিশ্রাম গ্রহণ কর।’
সাহরি ত্যাগ না করা জন্য রাসূলুল্লাহ সা: জোর দিয়ে বলেছেন, ‘এটা বরকতময়, আল্লাহ তোমাদের তা দান করেছেন, তোমরা তা ত্যাগ করো না।’ (নাসাঈ)
সাহরি খাওয়ার মধ্যে বিশেষ বরকত নিহিত। হজরত সালমান রা: থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘তিন জিনিসে বরকত রয়েছে। সেগুলো হলো, জামাআত, সায়িদ নামক খাবার ও সাহরি।’ (তাবরানি)
সাহরি খাওয়ার ফজিলত সম্বন্ধে বর্ণনা করতে গিয়ে হজরত আবদুল্লাহ বিন আব্বাস রা: বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘খাবার হালাল হলে তিন ব্যক্তির খানায় কোনো হিসাব নেয়া হবে না, ইনশা আল্লাহ।’ ১. রোজাদার; ২. সাহরি বা শেষ রাতের খাবার গ্রহণকারী এবং ৩. আল্লাহর পথের মুজাহিদ বা সৈনিক।’ (বাজজার)
সাহরি খাওয়ার সময়ের ব্যাপারে আল্লাহ তা’আলা নিজেই বলেছেন, তোমরা সেই পর্যন্ত পানাহার করো যে পর্যন্ত না রাতের কালো রেখার বুক চিরে সোবহে সাদিক বা প্রভাতের সাদা রেখা পরিষ্কার ফুটে ওঠে এবং রাত পর্যন্ত সিয়াম পালন করো।’ (সূরা বাকারা: ১৮৭ আয়াত)
ইফতার : আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দিনে সাওম পালন করে সূর্যাস্তের পর খাদ্য ও পানীয় গ্রহণের নাম ইফতার। সূর্যাস্তের পরপরই ইফতার করা সুন্নাত। এ ব্যাপারে হজরত আবু হোরায়রা থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, ‘আমার কাছে সে ব্যক্তি অতি প্রিয় যে তাড়াতাড়ি ইফতার করে।’ (তিরমিজি, ইবনে খোজায়মা ও ইবনে হিব্বান)
আবু হোরায়রা রা: থেকে বর্ণিত অন্য একটি হাদিসে রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘দ্বীন ততক্ষণ জয়ী থাকবে যতকাল লোকেরা শিগগিরই ইফতার করবে। কেননা ইহুদি ও নাসারাগণ দেরিতে ইফতার করে।’ (আবু দাউদ, ইবনে মাজা)
সাহল বিন সা’দ রা: থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘যে পর্যন্ত লোকেরা অবিলম্বে ও দ্রুত ইফতার করবে, সে পর্যন্ত তারা কল্যাণের মধ্যে থাকবে। (বোখারি ও মুসলিম)
ইফতার কি দিয়ে করতে হবে সে বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘তোমরা খেজুর দিয়ে ইফতার করো, কেননা তাতে বরকত রয়েছে। যদি খেজুর না থাকে তাহলে পানি দিয়ে ইফতার করো। পানি পাক ও পবিত্র।’
রাসূলুল্লাহ সা: নিজেই ইফতার করতেন কি দিয়েÑ সে বিষয়ে হজরত আনাস রা: বলেছেন, ‘রাসূলুল্লাহ সা: আধা-পাকা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। আধা-পাকা খেজুর না পেলে শুকনা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। যদি তাও না পেতেন, তাহলে কয়েক অঞ্জলি পানি দিয়ে ইফতার করতেন।’
অন্য রোজাদারকে ইফতার করানোতে রয়েছে বেশুমার ফজিলত। জায়েদ বিন খালেদ রা: থেকে বর্ণিতÑ রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করায় তার জন্য রয়েছে ওই রোজাদারের সমান সওয়াব। তবে ওই রোজাদারের সওয়াব থেকে কোনো কিছু ঘাটতি হবে না।’ (আব্বাস ইবনে মাজাহ, নাসাঈ, তিরমিজি)
হজরত সালমান ফার্সি রা: থেকে বর্ণিত অন্য একটি হাদিসে রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘ যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করায়, তার গুনাহ মাফ হয় এবং দোজখ থেকে নিজ গর্দান মুক্ত হয়, তার জন্য রোজাদারের সমান সওয়াব রয়েছে। তবে রোজাদারের পুরস্কার থেকে কোনো কিছু হ্রাস করা হবে না। সাহাবায়ে কেরাম প্রশ্ন করেনÑ ইয়া রাসূলুল্লাহ, রোজাদারকে ইফতার করানো সামর্থ্য আমাদের প্রত্যেকের নেই। উত্তরে রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, আল্লাহ ওই ব্যক্তিকে একই সওয়াব দেবেন যিনি এক চুমুক দুধ, একটু খেজুর কিংবা পানি দিয়ে কাউকে ইফতার করান। যে ব্যক্তি রোজাদারকে পানি পান করায় আল্লাহ তাকে আমার হাউজ থেকে পানি পান করাবেন এবং বেহেশতে প্রবেশ করা পর্যন্ত সে আর কখনো তৃষ্ণার্ত হবে না।’ (ইবনে খোজায়মা)
আমরা ইফতার করার সময় যে দোয়া পড়ি তা হলোÑ ‘হে আল্লাহ! আমি কেবলমাত্র তোমার জন্যই রোজা রেখেছি এবং কেবলমাত্র তোমার প্রদত্ত রিজিক দিয়েই ইফতার করছি।’ (আবূ দাউদ)
লেখক : সাংবাদিক


আরো সংবাদ



premium cement