কৃত্রিম সূর্য নয়, পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী বোমা তৈরির চেষ্টায় চীন!
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২১ নভেম্বর ২০১৮, ০৭:৪২, আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৮, ১০:৪৭
চাঁদ আকাশে পৌঁছে দেয়ার আগেই গবেষণাগারে ‘কৃত্রিম সূর্য’ বানিয়ে ফেলেছে চীন! চীনের সরকারি সংবাদসংস্থা জিনহুয়ার পক্ষ থেকে কিন্তু তেমনটাই দাবি করা হয়েছে। তারা জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহে চীনের দক্ষিণ-পূর্ব দিকের একটি শহরের গবেষণাগারে সফলভাবে কৃত্রিম সূর্য বানানো হয়েছে। কিন্তু সত্যিই কি তেমন কিছু করছে চীন? নাকি এর নেপথ্যে অন্য কোনো পরিকল্পনা রয়েছে তাদের? বিজ্ঞানীদের একাংশের দাবি, ‘কৃত্রিম সূর্য’ প্রকল্পের আড়ালে আসলে হাইড্রোজেন বোমের থেকেও শক্তিশালী একটি বোমা বানানো লক্ষ্য চীনের। কাজেই সরকারিভাবে কিছু না বললেও ভারত সহ সব দেশই সেদিকে কড়া নজর রাখছে।
জিনহুয়া জানিয়েছে, সেদেশের দক্ষিণ-পূর্ব প্রদেশের রাজধানী শহর আনহুইয়ের হেফেইতে একটি গবেষণাগারে এক্সপেরিমেন্টাল অ্যাডভান্স সুপারকন্ডাক্টিং টোকাম্যাক বা ইএএসটি রিঅ্যাক্টরে এই ‘কৃত্রিম সূর্য’ তৈরি করা হয়েছে।
চীনের বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, ওই নিউক্লিয়ার ফিউশন রিঅ্যাক্টারের মধ্যে প্রায় ১০ কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা তৈরি করতে সফল হয়েছেন তাঁরা। সূর্যের একেবারে কেন্দ্রবিন্দুতে যে তাপমাত্রা থাকে, তার থেকে প্রায় ছ’গুণ বেশি এই তাপমাত্রা। যদিও এখনও এই তাপমাত্রা বা শক্তিকে কীভাবে ‘মজুত’ করা যায়, তা এখনো অধরা বিজ্ঞানীদের কাছে। এবিষয়ে চীনা সরকারি সংবাদসংস্থার দাবি, সেই কাজের জন্য আরো গবেষণা প্রয়োজন। বিজ্ঞানীরা এবার সেই কাজই শুরু করবেন। তাদের আরো দাবি, মূলত পৃথিবীতে যে বিপুল পরিমাণ শক্তির চাহিদা (বিদ্যুৎশক্তি) রয়েছে, তা মেটাতেই এই গবেষণা। কারণ, গবেষণাগারে যে বিপুল পরিমাণ তাপমাত্রা তৈরি হয়েছে, তার সাহায্যে ১০ মিলিয়ন ওয়াট বিদ্যুৎশক্তি পাওয়া যেতে পারে। যার সাহায্যে প্রায় দু’লক্ষ বাল্বকে আলোকিত করা সম্ভব হবে।
তবে চীনা বিজ্ঞানীদের দাবিকে উড়িয়ে দিচ্ছেন অনেক বিজ্ঞানী। পরমাণু গবেষণার সঙ্গে জড়িত এক ভারতীয় বিজ্ঞানী বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই চীন এই গবেষণার কাজ চালাচ্ছে বলে জানি। চীন দাবি করছে, গবেষণাগারে যে বিপুল শক্তি উৎপাদিত হবে, তাকে মজুত করে পৃথিবীর বিদ্যুতের চাহিদা মেটানো যাবে। কিন্তু চীনের আসল উদ্দেশ্য হলো, এই বিপুল শক্তিকে একত্রিত করে কীভাবে একটা শক্তিশালী বোমা বানানো যায়।’ কারণ হিসেবে তার যুক্তি, ‘চীন যেভাবে এই তাপমাত্রা উৎপাদন করছে, তাতে কোনো নতুনত্ব নেই। পারমাণবিক বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদনের সাহায্যে গোটা পৃথিবীর বিদ্যুতের চাহিদা মেটানোর কাজ অনেক দিন ধরেই বিভিন্ন দেশে হচ্ছে। শুধু তাই নয়, চীন-আমেরিকা-ভারতসহ একাধিক দেশ মিলে এই কাজের এক বৃহৎ প্রকল্প ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। কিন্তু সেই সব এড়িয়ে নিজেদের উদ্যোগে বিপুল তাপমাত্রা উৎপাদনের পিছনে চীনের নিশ্চয়ই অন্য উদ্দেশ্য রয়েছে।’
তবে চীন নিজের এই প্রকল্পে কতটা সফল হয়েছে, তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। তার মতে, চীনা প্রযুক্তিও অনেক ক্ষেত্রেই চীনা পণ্যের মতোই। তাই সঠিক সময়ে সব জানা যাবে। গোটা বিশ্বই সেদিকে নজর রাখছে।
এদিকে, ভবিষ্যতে প্রায় ২০ কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা তৈরির গবেষণার কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। সেই প্রকল্পে (ইন্টারন্যাশনাল থার্মোনিউক্লিয়ার এক্সপেরিমেন্টাল রি-অ্যাক্টার) অবশ্য চীন ছাড়াও ইউরোপের একাধিক দেশ, আমেরিকা, ভারত, জাপান, রাশিয়া এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মতো বিশ্বের একাধিক শক্তিধর দেশ যুক্ত। ওই শক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনই মূল লক্ষ্য সব দেশের। ২০১৩ সাল থেকে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। ২০২৫ থেকে সেই প্রকল্পে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা