রেকর্ড সংখ্যক নতুন যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ২২:৩০
গত বছর বিশ্বব্যাপী রেকর্ড সংখ্যক ৮ দশমিক ২ মিলিয়ন নতুন যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, ১৯৯৫ সালে বিশ্বব্যাপী টিবি শনাক্ত হওয়ার পর থেকে এটিই সর্বোচ্চ সংখ্যা।
গ্লোবাল টিউবারকিউলোসিস রিপোর্ট, ২০২৪ -এর ওপর আলোকপাত করে মঙ্গলবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, অবিরাম চ্যালেঞ্জের সাথে অপর্যাপ্ত তহবিলের কারণে বিশ্বব্যাপী যক্ষ্মার বিরুদ্ধে অগ্রগতি অপ্রতুল। যদিও যক্ষ্মা সংক্রান্ত রোগে মৃত্যুর সংখ্যা ২০২২ সালে ১ দশমিক ৩২ মিলিয়ন থেকে কমে গত বছর ১ দশমিক ২৫ মিলিয়ন হয়েছিল। কিন্তু পরে সংক্রামক এ রোগে ৭ দশমিক ৫ মিলিয়ন থেকে বেড়ে ৮ দশমিক ২ মিলিয়ন হয়েছে। অবশ্য নতুন সব রোগী শনাক্ত করা না হলেও, ডব্লিউএইচও অনুমান করছে যে প্রায় ১০ দশমিক ৮ মিলিয়ন মানুষ আসলে গত বছর এই রোগে আক্রান্ত হয়েছিল।
‘যক্ষ্মায় এখনো অনেক মানুষ মৃত্যুবরণ করছে এবং অনেকে অসুস্থ থাকছে, যদিও প্রতিরোধ, শনাক্তকরণ এবং চিকিৎসা করার সরঞ্জাম আমাদের রয়েছে।’ ডব্লিউএইচও’র প্রধান টেড্রোস আধানম ঘেব্রেইসাস এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।
ডব্লিউএইচও সব দেশকে যক্ষা নির্মূল করতে সরঞ্জামগুলোর ব্যবহার বাড়াতে দৃঢ় পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
২০২২ এবং ২০২৩ -এর মধ্যে যক্ষা শনাক্ত বৃদ্ধি মূলত বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রতিফলন। গত বছর টিবি আক্রান্তের হার ছিল প্রতি ১ লাখে ১৩৪ জন নতুন শনাক্ত। যা ২০২২ -এর তুলনায় ০ দশমিক ২ শতাংশ বৃদ্ধি।
এই রোগ সংক্রমণ বৃদ্ধি ৩০টি দেশের মানুষ অধিক ঝুঁকিতে রয়েছে। বিশ্বব্যাপী টিবি ঝুঁকির মধ্যে ভারত, ইন্দোনেশিয়া, চীন, ফিলিপাইন ও পাকিস্তান উল্লেখযোগ্য। এক চতুর্থাংশেরও বেশি একমাত্র ভারতেই পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যক্ষ্মা আক্রান্তদের মধ্যে ৫৫ শতাংশ পুরুষ, ৩৩ শতাংশ নারী এবং ১২ শতাংশ ছিল শিশু এবং তরুণ কিশোরী। এটি একটি প্রতিরোধযোগ্য এবং নিরাময়যোগ্য রোগ, টিবি ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট হয় এবং প্রায়শই ফুসফুসকে প্রভাবিত করে। বাতাসের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে যখন ফুসফুসের টিবি রোগী কাশি, হাঁচি বা থুতু ফেলে।
ডব্লিউএইচও বলেছে যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নতুন টিবি কেস অপুষ্টি, এইচআইভি সংক্রমণ, অ্যালকোহল ব্যবহার, ডায়াবেটিস ও বিশেষ করে পুরুষদের মধ্যে ধূমপান- এই পাঁচটি প্রধান ঝুঁকির কারণ।
ডব্লিউএইচও’র মতে, যক্ষ্মা রোগের সংক্রমণ কমাতে বিশ্বব্যাপী লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করতে হবে। গত বছর টিবি নির্মূল ও যত্নের জন্য ২২ বিলিয়ন ডলার বৈশ্বিক বার্ষিক তহবিল লক্ষ্যমাত্রার ছিল। তার মধ্যে মাত্র ৫ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার তহবিল রয়েছে। ২০২৩ সালে টিবি সম্ভবত বিশ্বের মৃত্যুর প্রধান কারণ হিসাবে ফিরে এসেছে।
সূত্র : এএফপি