২৯ অক্টোবর ২০২৪, ১৩ কার্তিক ১৪৩১, ২৫ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

হলুদ শুধুই কি মসলা

-

হলুদ একটি বহুলব্যবহৃত মসলা । হলুদ ছাড়া কোনো ব্যঞ্জনই আকর্ষণীয় হয় না। কোনো তরকারিতে হলুদ দেয়া না হলেও যতই সুস্বাদু হোক না কেন, দেখতে বেমানান লাগে। সব ব্যঞ্জনে হলুদ লাগে বলে কপট মানুষকে বুঝাতে হলুদের সাথেই তুলনা করা হয়। আবার চেহারার রঙ উজ্জ্বল করতে হলুদের জুড়ি নেই । ভারতবর্ষ বিশেষত বাংলাদেশের মানুষদের বেশি মসলা খায় বলে বদনাম করা হয়। প্রাচীনকাল থেকেই এ দেশে মসলার উৎপাদন ও ব্যবহার বেশি। আজকাল ডাক্তাররা বলেন মসলা কম খেতে। কিন্তু অনেক মসলা আছে যা আমাদের জন্য উপকারী। এগুলো আমাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। জেনে নেয়ার দরকার কোনটি উপকারী আর কোনটি ক্ষতিকর। আসা যাক হলুদের কথায়। আমাদের খাদ্য রন্ধনে যেমন হলুদের ব্যবহার সেই প্রাচীনকাল থেকে চলে আসছে, তেমনি এই ঔষধি গুণাগুণও অনেক ।
আমাদের সুস্থ থাকার জন্য প্রতিদিন ৩০০০ ঙজঅঈ (ঙীুমবহ জধফরপধষ অনংড়ৎনধহপব ঈধঢ়ধপরঃু) অক্সিজেন আয়ন শোষণ ক্ষমতাসম্পন্ন এন্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা উচিত। আশ্চর্যের বিষয়Ñ আল্লাহ তায়ালা আমাদের বহুলব্যবহৃত এই হলুদের মধ্যে প্রতি ১০০ গ্রামের মধ্যে ১,৫৯,২৭৭ ঙজঅঈ (ঙীুমবহ জধফরপধষ অনংড়ৎনধহপব ঈধঢ়ধপরঃু) অক্সিজেন আয়ন শোষণ ক্ষমতাসম্পন্ন এন্টি অক্সিডেন্ট ঠধষঁব দিয়েছেন । অর্থাৎ প্রতিদিন কেউ মাত্র দুই গ্রাম হলুদ খেলে ৩০০০ ঙজঅঈ এন্টি অক্সিডেন্ট পেয়ে যায় । এমনিভাবে ১০০ গ্রাম লবঙ্গে ৩,১৪,৪৪৬ ঙজঅঈ এবং ১০০ গ্রাম দারুচিনিতে ২,৬৭,৫৩৬ ঙজঅঈ এন্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে। এই বিষয়গুলো দেখলে মহান আল্লাহর সামনে মাথা নত না করে কি পারা যায় ? ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক অনেক ঔষুধে হলুদের ব্যবহার হয়। হলুদ একটি উত্তেজক ভেষজ। মেয়েদের ঋতু চলাকালীন প্রথম তিন-চার দিন কাঁচা হলুদ খাওয়া ঠিক নয়।
ত্বকের রোগে : হলুদ সাধারণত আমাদের ত্বকের রঙের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। তাই ত্বকের বিভিন্ন রোগে হলুদ উপকারী। এই ভেষজটি ব্রণ, ফোড়া ও অ্যালার্জি নিরাময়ের জন্য ব্যবহৃত হয় এবং চামড়ার উজ্জ্বলতার জন্য সমাদৃত। প্রতিদিন এক থেকে তিন চা-চামচ হলুদের রস বা ১-১.৫০ গ্রাম হলুদের গুড়া সেবন করলে ত্বক উজ্জ্বল হয়।
চুলকানি : কারো চুলকানি হলে কাঁচা হলুদ বাটা ও নিম পাতা বাটার সাথে সামান্য সরিষার তেল মিশিয়ে তিন-চার দিন গোসল করলে চুলকাানি ভালো হয়ে যায়। সুস্থ অবস্থায় এটা দিয়ে গোসল করলে চুলকানি হয় না।
হাম : কাঁচা হলুদ রোদে শুকিয়ে গুঁড়া করে সাথে উচ্ছে পাতার রস ও সামান্য মধু মিশিয়ে খেলে হামজ্বর সেরে যায়।
চোখউঠা : অনেক সময় দেখা যায় অনেক মানুষের চোখ উঠেছে। আবার কারো চোখ উঠলে মানুষ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করে। মানুষও তার কাছে ভিড়তে চায় না। কারণ চোখ উঠা ছোঁয়াচে রোগ। কারো চোখ উঠলে কিছু পরিমাণ হলুদ ছেঁচে তার সাথে অল্প পানি মিশিয়ে ওই পানি নিয়ে চোখ ধৌত করতে হবে এবং ওই পানিতে পরিষ্কার কাপড়ের টুকরো ভিজিয়ে চোখ মুছতে হবে। এতে চোখ তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যাবে এবং চোখের লালিমাও কেটে যাবে।
কৃমি : হলুদের কৃমিগ্ন। কাঁচা হলুদের ১৫-২০ ফোঁটা রস সামান্য লবণসহ সকালে খালি পেটে খেলে কৃমির উপদ্রব থেকে রেহাই পাওয়া যায়। অপ্রাপ্ত বয়স্কদের মাত্রা কমাতে হবে।
তোতলামি : অনেক শিশুর কথা বলতে আটকে যায়। সেক্ষেত্রে দুই-তিন গ্রাম হলুদের গুঁড়া এক চা-চামচ ঘিয়ে একটু ভেজে অল্প অল্প করে খেতে হবে। এতে তোতলামি কমে যাবে।
প্রমেহ : প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া সাথে পুঁজের মতো লালা ঝরে। সে ক্ষেত্রে এক চা-চামচ কাঁচা হলুদের রসের সাথে একটু মধু বা চিনি মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
অ্যালার্জি : কারো গরুর গোশত, ইলিশ মাছ, চিংড়ি মাছ, বেগুন ইত্যাদি খেলে শরীর চুলকায়, চাকা চাকা হয়ে ফুলে ওঠে। এ অবস্থায় এক ভাগ নিমপাতার রস, দুই ভাগ হলুদের গুঁড়া ও তিন ভাগ আমলকী গুঁড়া একত্রে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে এক গ্রাম পরিমাণ খেলে উপকার পাওয়া যায়।
ফোড়া : হলুদ আগুনে পোড়ে তার ছাই পানিতে গুলে ফোড়ায় লাগালে ফোড়া তাড়াতাড়ি পাকে ও ফেটে যায়। আবার হলুদের গুঁড়া লাগালে তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়।
মচকানো : শরীরের কোনো অঙ্গ মচকে গেলে পাঁচ ভাগ হলুদ দুই ভাগ চুন ও সামান্য লবণ মিশিয়ে গরম করে লাগালে ব্যথা ও ফোলা দ্রুত কমে যায়।
জোঁক : কাউকে জোঁকে ধরলে, জোঁকের মুখে হলুদের গুঁড়া ছিটা দিলে ছেড়ে দেয় এবং রক্ত পড়াও বন্ধ হয়ে যায়।
জন্ডিস : আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে, হলুদ খেলে জন্ডিস বেড়ে যায়। আসলে কিন্তু তা নয়। ৫-১০ ফোঁটা থেকে এক চা-চামচ (বয়সভেদে কম-বেশি) হলুদের রস একটু চিনি বা মধু মিশিয়ে কয়েক দিন নিয়মিত খেলে উপকার পাওয়া যায়।
রক্ত দূষণ : প্রতিদিন পাঁচ গ্রাম হলুদের গুঁড়া খেলে রক্ত দোষ থাকে না।
লিভারের দোষ : প্রতিদিন সকালে খালিপেটে ১০ গ্রাম কাঁচা হলুদ চিবিয়ে খেলে লিভারের দোষ সেরে যায়। এভাবে দু সপ্তাহ খেতে হবে।
হাত পা ফোলায় : লিভারের দোষে কারো হাত পা ফুলে যায়। টিপলে সেই জায়গাটা গর্ত হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে ১০ গ্রাম কাঁচা হলুদ ঠাণ্ডা পানি দিয়ে খেলে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে।
মূর্ছা : কারো হিস্টিরিয়া বা মূর্ছা গেলে হলুদ পুড়িয়ে তার ধোঁয়া নাকে নিলে উপকার পাওয়া যায়।
কোলেস্টেরল : হলুদে কোলেস্টেরল কমানোর ক্ষমতা রয়েছে যা লিপিড লেয়ারিং ম্যাকানিজমের সব লেবেলে প্রতিক্রিয়া করে খউখ শত্র“ কোলেস্টেরল কমায় এবং ঐউখ বন্ধু কোলেস্টেরল বাড়ায়।


আরো সংবাদ



premium cement
পাচারের অর্থ ফেরাতে কাজ শুরু নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে সব ধরনের সহযোগিতা করবে সৌদি সরকার আওয়ামী লীগসহ ১১টি রাজনৈতিক দল বন্ধে সারজিস-হাসনাতের রিট হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী শতাধিক অপরাধের অভিযোগ সার্কের স্বপ্ন বাস্তবায়নের চেষ্টা করবো ইরান সব অস্ত্র দিয়ে ইসরাইলি হামলার জবাব দেবে ২৮ অক্টোবর মানবতাবিরোধী অপরাধের নিকৃষ্টতম দিন : ডা: শফিক সমালোচনার মধ্যেই চট্টগ্রামে আজ শুরু দ্বিতীয় টেস্ট রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় ভিডিপিতে অস্থিরতা তৈরির পাঁয়তারা চলছে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে সক্ষম আমের বীজ সাদ্দাম-ইনানসহ ছাত্রলীগের ২২০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

সকল