ইনফ্লুয়েঞ্জা সারাতে নতুন ওষুধ
- ডা: ওয়ানাইজা রহমান
- ১৭ জানুয়ারি ২০১৯, ১২:৪৩
আমরা সবাই বছরে কোনো না কোনো সময় সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হই। এই তো কিছুদিন আগেই যখন প্রচণ্ড গরমে নাভিশ্বাস উঠেছিল, তখন ঘরে ঘরে সবচেয়ে বেশি যে রোগটি ছড়িয়ে ছিল; তা হলো ফ্লু। ফ্লু হলেই আমাদের জ্বর, মাথাব্যথা, গা ম্যাজ ম্যাজ করা, শরীরে ব্যথা, হাঁচি, কাশি আর নাক দিয়ে অনবরত পানি গড়িয়ে পড়তে থাকে। এটা দু-তিন দিনে এমনিতেই সেরে যায়। কোনো অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ সাধারণত এর জন্য দেয়া হয় না। এ জন্যই বুঝি জাতীয় অধ্যাপক ডা: নূরুল ইসলাম একবার তার এক টিভি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘ঠাণ্ডা, সর্দি-কাশি ওষুধ খেলে সারবে এক সপ্তাহে আর ওষুধ না খেলে সারবে সাত দিনে।’
ইনফ্লুয়েঞ্জার জন্য দায়ী হচ্ছে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস। এই ভাইরাসটি নিয়ে বিজ্ঞানীরা অনেক গবেষণা করেছেন, কিভাবে এর প্রতিষেধক বা প্রতিরোধক বের করা যায়। কিন্তু সাফল্য পাননি। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা উদ্ভাবন করেছেন ইনফ্লুয়েঞ্জার নতুন ওষুধ বা অ্যান্টিভাইরাস, যা তাদের দাবি অনুযায়ী ইনফ্লুয়েঞ্জা সারাতে এবং প্রতিরোধ করতে সক্ষম। তাদের এই গবেষণালব্ধ ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে।
তাদের সাম্প্রতিক উদ্ভাবিত এই নতুন অ্যান্টিভাইরাসটির নাম জেনামাভির। এটি সাত বছর বা তার বেশি বয়সীদের ফ্লুর চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা যাবে। শুধু তাই নয়, এটা ফ্লু ছড়াতেও প্রতিরোধ করে। তা ছাড়াও এটা ফ্লুর প্রতিষেধক হিসেবে দীর্ঘমেয়াদি ওষুধ হিসেবেও সেবন করা যায়।
জেনামাভির ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের ডিএনএর ভেতরে থাকা নিউরো অ্যামাইনিডেজ নামক এনজাইমকে অকার্যকর করে দেয়। এই এনজাইমটিই ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের বংশ বিস্তারের জন্য দায়ী। ইতঃপূর্বের পুরনো অ্যান্টিভাইরাল ওষুধগুলো এই এনজাইমটির ওপরে কাজ করতে পারত না। ফলে আগের অ্যান্টিভাইরাল ওষুধগুলো ইনফ্লুয়েঞ্জার বিরুদ্ধে লড়তে অকার্যকর প্রমাণিত হয়েছিল। কিন্তু নতুন জেনামাভির মোটেই সে রকম নয়- এ দাবি ড. পিটার রাইটের (তিনি ভেন্ডারবিন্ট ইউনিভার্সিটি অব মেডিক্যাল সেন্টারের একজন বিজ্ঞানী। জেনামাভির ইতোমধ্যেই ইনফ্লুয়েঞ্জার ওষুধ হিসেবে এফডিএ অনুমোদন পেয়েছে।
লেখিকা : অধ্যাপিকা, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ।