যে কারনে বাংলা শিখেছিলেন পাকির আলী
- রফিকুল হায়দার ফরহাদ
- ১৫ জানুয়ারি ২০২০, ২২:২২
বাংলাদেশ তার সেকেন্ড হোম। ১৯৮০ সালে বাংলাদেশে খেলতে এসে আবাহনী আর পিডব্লুডির জার্সী গায়ে খেলেছেন লম্বা সময়। এরপর কোচিং করিয়েছেন পিডব্লিউডি, আবাহনী, মোহামেডান এবং শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবে। বাংলাদেশে এই বছর থাকার ফলে বাংলা ভাষাও শিখে নেন পাকির আলী। যে কোনো বাংলাদেশীকে পেলে ইংরেজী বাদ দিয়ে বাংলাতেই কথা বলা শুরু করেন। কাজের সূত্রে এদেশে এলে তো কথাই নেই। বাংলা হয়ে যায় এই শ্রীলংকানদের প্রধান ভাসা। বুধবারও বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের মিডিয়া কর্মীদের পেয়ে বাংলাতে দিতে শুরু করেন সাক্ষাতকার। পাকির আলীর মতো অন্য বিদেশীরাও যারা বেশ কয়েক বছর বাংলাদেশ লিগে ফুটবল খেলেছেন তাদের মুখেও পরিস্কার বাংলা ভাষা শোনা যায়। যেমন নাইজেরিয়ার স্ট্রাইকার নিকি ফ্রান্সিসতো ভালোই বাংলা জানেন। তা প্রয়োজনেই। পাকির আলীও নিজের প্রয়োজনে বাংলা শিখেছেন।
সে কারনই উল্লেখ করেন তিনি। জানান, ‘১৯৮০ সালে বাংলাদেশে আসার পর হোটেলে খেতে গিয়ে ভাষা নিয়ে সমস্যায় পড়লাম। আমি বলছি চিকেন। কিন্তু হোটেলের কর্মচারী চিকেন শব্দের অর্থ বুঝছিল না। সে বলছিল, মুরগী কিনা। আমি আবার মুরগী শব্দের মানে জানি না। পরে যথন বললাম এটা‘কক’কিনা তখন সে হ্যাঁ সূচক উত্তর দেয়। পাকির আলী বলেন , এরপরেই আমি সিদ্ধান্ত নিলাম বাংলা ভাষা আমাকে শিখতেই হবে। নিজের প্র্যাতহিক কাজের জন্যই। ব্যাস তখন থেকেই আমার বাংলা বলা শুরু।
দুই বছর ধরে শ্রীলংকা জাতীয় দলের দায়িত্বে। এবারের বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে খেলা এই দ্বীপ রাস্ট্রটির হেড কোচ হিসেবে আসা পাকির আলীর। এরআগে এসেছিলেন ২০১৮ এর সাফে। ১৭ জানুয়ারী তাদের ‘এ’ গ্রুপে প্রথম ম্যাচ ফিলিস্তিনের বিপক্ষে। তাই আজ বাংলাদেশ-ফিলিস্তিন ম্যাচ দেখতে দলবল নিয়ে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে আসা সাবেক এই ডিফেন্ডারের। কিন্তু স্টেডিয়ামে ঢুকেই ভ্রু কুচকালেন এই লংকান। গ্যালারী ভর্তি সেই দর্শক কোথায়? যা তিনি খেলোয়াড়ী জীবনে উপভোগ করেছেন। জানান, দেখুন বাংলাদেশ জাতীয় দল আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলছে। অথচ গ্যালারীতে তেমন দর্শক নেই।’ এরপর ফিরে যান পুরনো সেই স্মৃতিতে। ‘যখন আবাহনীতে খেলতাম, তখন গ্যালারীতে পরিপূর্ন দর্শকদের দেখে বাড়তি উৎসাহ পেতাম। যা আমাদের আরো ভালো খেলতে প্রেরনা যোগাতো। ভালো ম্যাচের জন্য দর্শকও একটা বড় ব্যাপার।
কেন এই দর্শক খরা বাংলাদেশের ফুটবলে। পাকির আলীর মতে, ফুটবল প্রেমীদের মাঠে টানতে হলে আন্তর্জাতিক ম্যাচে ভালো খেলতে হবে। পেতে হবে সাফল্য। এরপর যোগ করেন, ‘দলে থাকতে হবে স্কিল ফুল প্লেয়ার।’ এই স্কিলফুল খেলোয়াড়ের অভাবের জন্য তিনি দায়ী করেন বিদেশী ফুটবলারের আধিক্যকে। উদহারন টানেন, আমাদের শ্রীলংকা দল আন্তর্জাতিক ম্যাচে রেজাল্ট পাচ্ছে না, কারন লোকাল ফরোয়ার্ডরা গোল করতে ব্যর্থ হচ্ছেন আন্তর্জাতিক খেলায়। সর্বশেষ এস এ গেমসই বড় উদহারন।’ যুক্তি দাঁড় করান,‘ শ্রীলংকার লিগে প্রতি দলই দুই জন করে বিদেশী নিচ্ছে। তারা আবার স্ট্রাইকার। ফলে স্থানীয় স্ট্রাইকাররা খেলার সুযোগ পাচ্ছেন না ঘরোয়া লিগে। তারা জাতীয় দলে কিভাবে ভালো করবেন।’ তাকে জানানো হলো, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে তো একেকটি দলে পাঁচ বিদেশী রেজিস্ট্রেশন করানো হয়। তবে খেলছেন চারজন করে।
এবারের বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে দলের টার্গেট সম্পর্কে বলেন, ‘অবশ্যই আমাদের লক্ষ্য সেমিফাইনালে খেলা।’ সাফ অঞ্চলের দেশ গুলোর মধ্যে র্যাংকিংয়ে সবচেয়ে বাজে অবস্থা শ্রীলংকার। ২০৫ এ আছে। তার মতে, আমরা এবার বিশ্বকাপ বাছাই খেলছি উত্তর কোরিয়া; দক্ষিণ কোরিয়া এবং তুর্কমেনিস্তানের মতো দলের বিপক্ষে। এদের বিপক্ষে হারতেই হচ্ছে। তাই র্যাংকিংয়ে এই দশা।
তবে তার আশাবাদ, ভবিষ্যতে ভালো করবে শ্রীলংকা ফুটবল দল। ‘ নতুন নতুন উঠতি খেলোয়াড় যোগাড় করা হচ্ছে। যদিও এবারের জাতীয় দলে আমি সিনিয়র খেলোয়াড়দের সুযোগ দিয়েছি। নতুনদের আরো সময় দিতে হবে। সে সাথে পাইপ লাইনে বয়সভিত্তিক ফুটবলার থাকতে হবে। সে চেষ্টাও করা হচ্ছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা