৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ মাঘ ১৪৩১, ১৮ রজব ১৪৪৫
`

ফুটবল খেলা শুরু হয়েছিল যেভাবে

ফুটবল
বাংলাদেশে আমরা যাকে ফুটবল বুঝি, ইংরেজি ভাষাভাষি অধিকাংশ দেশে ফুটবল বলতে তাই বোঝানো হয় - সংগৃহীত

বাংলাদেশে ফুটবল বলতে এক ধরনের খেলা বোঝানো হলেও বিশ্বের নানা দেশে এটি নানা ধরনের খেলা হিসেবে অভিহিত হয়ে থাকে। ফুটবল (Football) নামটিও বিভিন্ন দেশে কিছুটা ভিন্ন বানানে এবং উচ্চারণে প্রচলিত। বাংলাদেশে আমরা যাকে ফুটবল বুঝি, ইংরেজি ভাষাভাষি অধিকাংশ দেশে ফুটবল বলতে তাই বোঝানো হয়। সাধারণভাবে তা অ্যাসোসিয়েশন ফুটবল নামে পরিচিত। কোথায়ও কোথায়ও তা সকার (Soccer) নামে অভিহিত। সম্ভবত এসোসিয়েশনের বিকৃত সংক্ষিপ্তসার হচ্ছে সকার। এ সংক্রান্ত একটি ভাষ্যে বলা হয়, ১৮৮০’র দশকে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ‘er’শেষে যোগ করে শব্দকে সংক্ষিপ্ত করতো। যেমন বলতো breakfast কে brekkers, রাগবি রুলস (rugby rules)কে ‘rugger’।

বলা হয়ে থাকে ‘সকার’ শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন চার্লস রিফোর্ড ব্রাউন। এতোদিন খেলাটি পরিচিত ছিল অ্যাসোসিয়েশন রুলস বা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন রুলস (Football Association Rules) নামে। একদিন তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল তিনি অ্যাসোসিয়েশন রুলস খেলতে ইচ্ছুক কিনা। তিনি জবাব দেন ‘No, Soccer.’ পরবর্তীকালে তিনি ইংল্যান্ডের জাতীয় দলে খেলেন এবং ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস-প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। ফিফার যে ৪৮টি জাতীয় সংস্থার অফিসিয়াল বা প্রাইমারি ভাষা ইংরেজি, তাদের মধ্যে মাত্র ৫টি- কানাডা, মার্শাল আইল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, সামোয়া ও যুক্তরাষ্ট্র- সকার নামে খেলাটি পরিচিত, বাকি দেশগুলোতে ফুটবল হিসেবেই খেলাটি প্রচলিত। ইংরেজি ভাষার শব্দ ফুটবল দিয়ে রাগবি ফুটবল (রাগবি ইউনিয়ন ও রাগবি লিগ), আমেরিকান ফুটবল, অস্ট্রেলিয়ান রুলস ফুটবল, গালিক ফুটবল, কানাডিয়ান ফুটবলও বোঝায়।

সাধারণভাবে মনে করা হয়ে থাকে ফুটবল বা ‘ফুট বল’ শব্দটির উৎপত্তি ঘটেছে কোন বলকে পা দিয়ে লাথি দেয়ার বিষয়টি উল্লেখ করতে গিয়ে। কিন্তু এর বিরোধী ব্যাখ্যাও আছে। তাতে বলা হচ্ছে মধ্যযুগীয় ইউরোপে পা দিয়ে খেলা হতো এমন অনেক খেলা বোঝাতেই ফুটবল শব্দটি ব্যবহৃত হতো। আর এসব খেলায় অংশ নিত সাধারণভাবে কৃষকরা। অভিজাতরা যখন ঘোড়ায় চলে বিভিন্ন ক্রীড়ায় অংশ নিত, তখন দরিদ্র কৃষকরা পায়ের উপর ভর করে খেলতো। এথেকে উপসংহার টানা হচ্ছে, শুধুমাত্র বলকে লাথি মারার খেলাকেই ফুটবল নামে অভিহিত করা হতো না। এমনকি কোন কোন সময় ফুটবল এমন কিছু খেলাকেও বোঝাতো, যেখানে কিক করাই বেআইনি হিসেবে অভিহিত হতো।

ফুটবলকে বলা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে সহজ খেলা। একটি গোলাকার বলকে মাঠি দিয়ে গড়িয়ে হোক আর বাতাসে ভাসিয়ে হোক, হাত দিয়ে না ছুঁয়ে প্রতিপক্ষকে এড়িয়ে গোললাইন অতিক্রম করে দিতে পারলেই হলো। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যে দল যতবেশিবার কাজটি করতে পারবে, তারাই জয়ী হবে। প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে জয়ী হওয়ার জন্য কিক করা, দৌড়ানো, পাস দেওয়া, পাস ধরা সবকাজই করতে হয়।

মানবজাতির প্রাচীন ইতিহাস শুরুর সময় থেকেই সম্ভবত কোনো কিছুকে লাথি দেয়ার প্রচলন ঘটেছে। ফুটবলের মতো কিছু কিছু খেলার বিবরণ অনেক প্রাচীন সাহিত্যেও পাওয়া যায়। তবে ফুটবলের প্রাচীনতম ধরণটি সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে কিছুই জানা যায় না। কোথা থেকে ফুটবলের সূচনা হয়েছে, তা নিয়েও রয়েছে নানা অভিমত। চীন, জাপান, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা, ইটালি, মেক্সিকো এমনকি এক্সিমোদের মধ্যেও কোন না কোন ধরনের ফুটবল খেলার ইতিহাস দেখা যায়।

এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত খৃস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দীতে লিখিত দলিলের ভাষ্য অনুযায়ী হান রাজবংশের সময়ে চীনারা ফুটবল খেলতে বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। চীনা সামরিক বাহিনীর উক্ত পাণ্ডুলিপি অনুযায়ী ‘সু চু’ (tsu chu) নামের একটি খেলা হতো এবং তাকে চামড়ার একটি বলকে ৩০ ফুটের দুটি পোলের মধ্যে টানানো সিল্কের গর্তের মধ্যে পাঠাতে হতো। এটা সত্যিকার অর্থে কোন খেলা ছিল না। বরং বলা যায় সম্রাটের একটি বিনোদন ব্যবস্থা ছিল এটি। আর তা হয়েছিল সম্ভবত প্রায় তিন হাজার বছর আগে।

এশিয়ায় বল লাথি দেয়ার আরেকটি খেলার কথা পাওয়া যায় এবং এটিও সু চু থেকে নেয়া হয়েছিল বলে ধারণা করা যায়, যার নাম ‘কেমারি’। ৬০০ খৃস্টাব্দের দিকে জাপানি রাজদরবারে এই খেলাটির প্রচলন ছিল। কেমারি খেলায় একটি বৃত্তের চারদিকে বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় দাঁড়াত এবং তারা লাথি দিয়ে বলটিকে অন্যের কাছে দিত, তবে বলটিকে মাটিতে পড়তে দিত না। দীর্ঘদিন খেলাটির প্রচলন ছিল এবং ঊনবিংশ শতকের মাঝামাঝি কোন এক সময়ে তা বিলুপ্ত হয়ে যায়। অবশ্য প্রাচীন ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার গরজ থেকে ১৯০৩ সালে খেলাটি আবার প্রচলিত হয় এবং জাপানের কোন কোন স্থানে উৎসবে বা পর্যটকদের আনন্দ দিতে খেলাটি প্রদর্শিত হয়ে থাকে।
গ্রিক এবং রোমানরাও পায়ের ব্যবহারের কিছু কিছু খেলা সম্পর্কে অবগত ছিল। রোমান লেখক সিসেরো একটি ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন, যাতে দেখা যায় লাথি থেকে আসা একটি বল নাপিতের দোকানে ঢুকে পড়ে শেভ করার সময়ে একটি লোককে আঘাত হানলে সে নিহত হয়। তাছাড়া ‘হারপাসতু’ নামের খেলাটি আধুনিক রাগবির মতো বলেও ধারণা করা যেতে পারে।

এছাড়াও বিশ্বজুড়ে প্রাচীন বিভিন্ন আদিবাসী সমাজে বল খেলার বিভিন্ন বর্ণনা দেখা যায়। আমেরিকার রেড ইন্ডিয়ানদেরও মধ্যেও এ ধরনের একটি খেলার বর্ণনা দিয়েছেন ১৬১০ সালে উইলিয়াম স্ট্রাসি। যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলে অত্যন্ত প্রাচীন আধুনিক ফুটবলের আকৃতির পাথরের বল আবিস্কৃতি হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই বল দিয়ে দুই ধরনের খেলা হতো। একটি হলো পা দিয়ে যতদূর সম্ভব দূরে পাঠানো এবং অন্যটি হলো পা দিয়ে যতদূর সম্ভব ঠেলে নিয়ে যাওয়া। অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়াতে আদিবাসীরা ‘ম্যার্ন গ্রক’ নামের একটি খেলা খেলতো। আলাস্কার এক্সিমোরাও ‘একসাকটুক’ নামের একটি খেলা খেলতো বরফ দিয়ে। বরফের মাঠে মাইনাস ৫০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় তারা ফুটবল নিয়ে মাতামাতি করতো। বিশেষ করে অতিথিদের স্বাগত জানানোর সময়ে একসাথে ওয়ার্ম আপ করে নেয়ার জন্য তারা আগতদের প্রতি ম্যাচ খেলার চ্যালেঞ্চ ছুঁড়ে দিত।

তবে মধ্যযুগে ইউরোপ জুড়ে বিশেষ করে ইংল্যান্ডে ‘শ্রভেটাইড’ ফুটবল ম্যাচ দারুণ জনপ্রিয়তা পায়। সম্ভবত রোমান অধিকারে থাকার সময়ে ইংল্যান্ডে খেলাটির প্রচলন ঘটে। তারপর দ্রুত তার রূপান্তর ঘটতে ঘটতে আজকের ফুটবলে পরিণত হয়।

 

ফুটবলের উৎপত্তি বাংলাদেশে!

বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা ফুটবলের উৎপত্তি বাংলাদেশেও হতে পারে। কথাটি বলেছিলেন এএফসি’র (এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন) রেফারিজ ডিপার্টমেন্টের পরিচালক মোহাম্মদ নাজরি বিন আবদুল্লাহ। বাংলাদেশ ক্রীড়ালেখক সমিতি আয়োজিত ফুটবলের আইনকানুন বিষয়ক এক কর্মশালায় (বাফুফে ভবনে ২৮ মার্চ, ২০০৬ অনুষ্ঠিত) আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেছিলেন, ফুটবলের উৎস নিয়ে যখন অনেক বিতর্ক আছে, অনেক দেশই তাদের এলাকায় ফুটবলের সূচনা বলে জানাচ্ছে, তখন বাংলাদেশও একই দাবিটি করতে পারে। আর দাবিটি উড়িয়ে দেয়ার কোনোই উপায় নেই। এপ্রসঙ্গে প্রিন্সিপ্যাল ইব্রাহীম খাঁর একটি রসিক মন্তব্যও প্রাণিধানযোগ্য। তার মতে, যে সভ্যতা যত প্রাচীন তা তত গভীর মাটির নিচে থাকে। অন্যদের সভ্যতার বয়স অল্প বলেই মাটির অল্প নিচেই খুব তাড়াতাড়ি আবিস্কৃত হচ্ছে। আমাদের সভ্যতা সেগুলোর চেয়ে অনেক বেশি প্রাচীন বলে অনেক গভীরে আছে এবং তা খুড়ে এখনো বের করা যায়নি (তিনি অবশ্য ফুটবল প্রসঙ্গে এই মন্তব্য করেননি, সম্ভবত মিসরীয় সভ্যতার আলোচনাক্রমে একথা বলেছিলেন)।

ফুটবলের উৎস নিয়ে গবেষণার অন্ত নেই। কিন্তু সুরাহা হচ্ছে না। কবে, কখন, কোথায় ফুটবলের প্রথম কিকটি নেয়া হয় তা আজ খুঁজে বের করা দুরূহ ব্যাপার। অতীত ইতিহাসের গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে ওই বিমূর্ত মুহূর্তটি। তবে ফুটবল যে একটি অতি প্রাচীন খেলা তা অস্বীকার করার উপায় নেই। বিভিন্ন প্রাচীন জনপদের কাহিনীতে ফুটবলের সাথে মিল আছে এমন খেলার বিবরণী পাওয়া যায়। ফুটবলের সূচনা নিয়ে নানা কিংবদন্তিও প্রচলিত রয়েছে। একটি কাহিনীতে বলা হয়, অষ্টম শতকে এক যুদ্ধের পর বিজয়ী স্যাক্সনরা পরাজিত নিহত যোদ্ধাদের কাটা মাথায় পদাঘাত করতে করতে নাকি ফুটবল খেলার আবির্ভাব হয়েছে। তবে এই কল্পকাহিনীর ভিত্তি মজবুত নয়। আধুনিক ইতিহাসবেত্তারা জানাচ্ছেন যে, দ্বাদশ শতাব্দী পর্যন্ত নৃশংস ফুটবল (বল দিয়েই) খেলা হতো ইংল্যান্ডে। এসব গল্পেরও নির্ভরযোগ্য কোনো ভিত্তি নেই।

তবে এরকম অন্যদিকে এমন প্রমাণাদিও মেলে যে, যিশুখ্রিস্টের প্রাথমিক রূপ, যা পরিচিত ছিল সু-চু হিসাবে তা আড়াই হাজার বছর আগে নিয়মিত খেলা হতো চীনে। সুমানে ‘পা দিয়ে বলে লাথি মারা’ আর চু মানে ‘চামড়ার তৈরি বল।’ চৈনিক রাজাদের জন্মদিন পালনে সু-চু ছিল একটি বিশেষ আয়োজন।

রাজকীয় উদ্যানে দুটি দলের মধ্যে এই খেলা হতো। গোলপোস্ট বানানো হতো প্রায় ৯ মিটার উচ্চতার দুটি বাঁশ মাটিতে পুঁতে। এতে টানটান করে বাধা হতো একটি সিল্কের জালের মাঝখানে বৃত্তকার ছিদ্রপথে বল পার করানোকে গণ্য হতো গোল হিসাবে। এসব খেলায় চীনা সম্রাটরা নিজেরাও অংশ নিতেন। ৩২ খ্রিস্টপূর্বাব্দে চীনের শাসক চেঙ তি ছিলেন একজন নামকরা খেলোয়াড়। যদিও সভাসদেরা সাধারণের সাথে মিশে গিয়ে তার এই খেলতে নেমে যাওয়াকে অনুমোদন করতেন না। ওই সময়ের চীনা সাহিত্যেও এই খেলার প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। লি ইউ (৫০-১৩০) খ্রিস্টপূর্বাব্দ) নামে একজন কবি ফুটবল নিয়ে কবিতাও লিখেছেন। এ থেকে প্রোগৈতিহাসিক চীনে ফুটবল অস্তিত্ব প্রমাণিত হয়। লিইউ’র কবিতার কিছু অংশের বঙ্গানুবাদ করলে দাঁড়ায়- ‘বলটি গোলাকার, মাঠ চৌকো/ যেন আকাশ ও ধরণিতল/উড়ে আসে বল সূর্যের মতো/যখন দ্বৈরথে নামে দুটি দল।’

প্রাচীনকালে ‘সিনি’ নামে যুগোস্লাভিয়াতেও ফুটবল খেলা হতো বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। কেবল এই অঞ্চলেই নয়, খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকে পুরো রোমান সাম্রাজ্যেই ফুটবল একটি জনপ্রিয় খেলা ছিল বলে নৃতত্ত্ববিদরা উল্লেখ করেছেন। জাপানিরা সপ্তম শতকে এক ধরনের ফুটবল খেলত যার নাম ছিল ‘কেমারি’। এতে চীনা রীতি ও ঐতিহ্যের প্রভাব ছিল সুস্পষ্ট। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এ খেলা হতো ১৪ বর্গ মিটার আকৃতির একটি জায়গায়, যার উত্তর-পূর্ব কোণে একটি পাইন, দক্ষিণ-পূর্ব কোণে একটি উইলো এবং দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে একটি ম্যাপল ট্রি থাকত। খেলোয়াড় থাকত আটজন।

আলাস্কার এক্সিমোরাও ‘একসাকটুক’ নামের একটি খেলা খেলত বরফ দিয়ে। বরফের মাঠে মাইনাস ৫০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় তারা ফুটবল নিয়ে মাতামাতি করত। বিশেষ করে অতিথিদের স্বাগত জানানোর সময়ে একসাথে ওয়ার্ম আপ করে নেয়ার জন্য তারা আগতদের প্রতি ম্যাচ খেলার চ্যালেঞ্চ ছুঁড়ে দিত। আমেরিকার রেড ইন্ডিয়ানদেরও মধ্যেও এ ধরনের একটি খেলার বর্ণনা দিয়েছেন ১৬১০ সালে উইলিয়াম স্ট্রাসি। যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলে অত্যন্ত প্রাচীন আধুনিক ফুটবলের আকৃতির পাথরের বল আবিস্কৃতি হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে এই বল দিয়ে দুই ধরনের খেলা হতো। একটি হলো পা দিয়ে যতদূর সম্ভব দূরে পাঠানো এবং অন্যটি হলো পা দিয়ে যতদূর সম্ভব ঠেলে নিয়ে যাওয়া। অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়াতে আদিবাসীরা ‘ম্যার্ন গ্রক’ নামের একটি খেলা খেলত।

এটা জোর দিয়ে বলা যায় যে এই খেলার উত্তরণ ঘটেছে মানব সভ্যতার ইতিহাসের সাথে তাল মিলিয়ে। এটা বিস্ময়কর কিছু নয়, ধীরে ধীরে খেলাটি দুরপ্রাচ্য থেকে পাশ্চত্যে ছড়িয়ে পড়ে। মেসিডোনিয়াম এই খেলার প্রচলন ঘটানোর কৃতিত্ব মহাবীর আলেকজান্ডারের। পরবর্তীতে গল সাম্রাজ্যের অধীস্বর হন জুলিয়াস সিজার। গ্যালো-রোমান সভ্যতার পাশাপাশি এই খেলারও বিকাশ ঘটে। ঘটনাক্রমে ভবিষ্যত ফুটবলের শিকড়ও গজাতে থাকে এভাবে।

প্রাচীন গ্রিস ও রোমের বিভিন্ন অঞ্চলে যে ফুটবল খেলা হতো তার সাথে আজকের রাগবি ফুটবলের মিল পাওয়া যায়। সুদূর মেক্সিকোতেও ফুটবল খেলার কথা শোনা যায়। মেক্সিকো ফুটবলে গোল হতো দেয়ালের উঁচুতে বাঁধা বলয়ের ভেতর দিয়ে বল পাঠাতে পারল। খ্রিস্টপূর্ব দশম শতকে জাপানে চামড়ায় মোড়া বাঁশের গোলক বল নিয়ে খেলার তথ্য পাওয়া যায়। দূরপ্রাচ্যের গোলপোস্ট ছিল মোটা পর্দার মাঝখানে একটা গোলাকার ছিদ্র। তবে ফুটবল সম্ভবত সবচেয়ে জনপ্রিয় ছিল রোমানদের মধ্যে। রোমানরা ফুটবলকে বলত ‘হারপাসটাম’। সম্ভবত রোমানরাই ফুটবলকে ইউরোপে নিয়ে আসে এবং তার প্রসার ও জনপ্রিয়তা প্রদান করে। মধ্যযুগে ইউরোপের ইটালিতে ফুটবল ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। ইটালির বিভিন্ন শহরে ফুটবল ম্যাচ হতে থাকে। তবে মাঠের কোন নির্দিষ্ট পরিসীমা ছিল না। প্রায় আধা মাইল বিস্তৃত থাকতো ফুটবল মাঠ। আর এতে অংশ নিতো কয়েক শ' খেলোয়াড়। এই খেলা সেখানে ‘মিলিস’ নামে খ্যাত ছিল। কোনো নিয়ম-কানুন না থাকায় এই গণখেলাটি ছিল বিপজ্জনক। সমাজের অভিজাতরা এবং কখনও কখনও চার্চের উঁচুদরের কর্মকর্তারা এতে অংশ নিতেন। পরবর্তীকালে নিজ নিজ সময়ে পোপের মধ্যে ক্লিমেন্ড সপ্তম, লিওন দশম ও আরবাইন সপ্তম এই ধারার ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন ছিলেন বলে জানা যায়। এপিসকিরোস ও হারপেস্তামের এমন কিছু নিয়ম ছিল যা থেকে সু-চু ও কেমারির সঙ্গে সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়।

একটি প্রবাদ রয়েছে যে ১০৬৬ সালে হাস্টিংয়ের যুদ্ধে বিজয়ী উইলিয়ামের অনুসারীদের মাধ্যমে ইংল্যান্ডে ফুটবলের প্রচলন ঘটে। অনেক ইতিহাসবিদ বলে গেছেন যে একদল উন্মত্ত লোক বিশেষ মঙ্গলবার দিনে (মাথার ওপর ছাই ছড়ানোর বিশেষ খ্রিষ্টীয় পর্বের আগের দিনে) এ খেলার মেতে ওঠত। দিনের মধ্যভাগে বাজার এলাকায় একেক দলে ৫০০ জন করে এ খেলায় নামত এবং তা চলত সূর্যাস্ত পর্যন্ত। এমন পর্যাপ্ত প্রমাণও পাওয়া যায় যে সে সময়কার এসব খেলায় তীব্র উত্তেজনার পরিণতিতে প্রাণহানি এবং সম্পদের অপচয়ও ঘটত। আহত হওয়ার ঘটনা ছিল মামুলি। সম্ভবত এ কারণেই এর বিরুদ্ধে রাজদণ্ডকে কঠোরভাবে ব্যবহার করতে হয়েছিল। প্রথম বিরূপ মনোভাব প্রকাশ করেন রাজা দ্বিতীয় এ্যাডওয়ার্ড।

১৩১৪ সালে এক রাজাজ্ঞার মাধ্যমে জানানো হয়, ‘একটি বড় আকারের বল নিয়ে নগরে যে কোলাহল হয়, যে অপকাণ্ড ঘটে তা ঈশ্বরের নিয়মবিরুদ্ধ। তাই রাজার নির্দেশে লন্ডন শহরে এই প্রকার খেলা ভবিষ্যতে নিষিদ্ধ করা হলো।’ এরপরও ফুটবলের ওপর একইভাবে নিষেধাজ্ঞার খড়ক ঝুলিয়ে রাখেন রাজা তৃতীয় এ্যাডওয়ার্ড (১৩৪৯), দ্বিতীয় রিচার্ড (১৩৮৯), চতুর্থ হেনরি (১৪০১), এবং স্কটিশ রাজা প্রথম জেমস (১৪৫৭) ও দ্বিতীয় জেমস (১৪৯১)। রাজা রিচার্ডের জারি করা ডিক্রিতে ফুটবলের বিকল্প হিসাবে আর্চারিকে উৎসাহিত করার কথা বলা হয়েছিল। এত কিছু সত্ত্বেও টিওডর (রাজা সপ্তম হেনরি থেকে রানী এলিজাবেথের আমল পর্যন্ত) ইংল্যান্ডে (১৪৮৫-১৬০৩) কোন নিয়মনীতি ছাড়াই স্থানীয় লোকালয়ে নৃশংস ফুটবল অব্যাহত থাকে। ১৫৭২ সালে রানী এলিজাবেথ এক ফরমানের বলে এটি নিষিদ্ধ করার চেষ্টা চালান। এ সময় ‘এনাটমি অব এবিউজেস, নামে ফুটবলের বিরুদ্ধে একটি বই লেখেন ফিলিপ স্টাবেজ। এতে তিনি তীব্র শব্দবানে ফুটবলের সমালোচনা করেন।

স্টাবেজ তার গ্রন্থে ফুটবল সম্পর্কে লেখেন ‘এটা এমন এক খেলা যা হিংসা, বিদ্বেষ, ঘৃণা, শত্রুতা, অসন্তোষ কি না ঘটায়। কখনও কখনও মারপিট, ঝগড়া-বিবাদ, খুন-জখম ইত্যাদিতে রক্তস্রোত বয়ে যাওয়া হচ্ছে এর নৈমিত্তিক চিত্র। এক কথায় স্টাবেজ ফুটবলের বিরুদ্ধে নিন্দা করার উপযুক্ত কোনো শব্দের ব্যবহারই বাদ দেননি। কিন্তু সৌভাগ্যই বলতে হবে যে, এসব বিধিনিষেধে তেমন কাজ হয়নি। ফুটবলের প্রসার ঘটেছে সেই দ্বন্দমুখর মেজাজেই। রাস্তায় মারপিটও কোনো অংশে কমে যায়নি। বছরে পর বছর ধরে খেলাটিকে অবদমিত করার জন্য রাজদণ্ডের ব্যবহার বরাবরই ব্যর্থ হয়। সম্ভবত ধীরে ধীরে যুদ্ধ ক্ষেত্রে তীর-ধনুকের ব্যবহার কমতে থাকার ব্যর্থতার একটি কারণ। ইংরেজ পরিবারের পক্ষ থেকে প্রথম ফুটবলকে অনুমোদন করেন দ্বিতীয় চার্লস। তিনি রাজকীয় আবাস কর্মীদের দল ও ডিউক অব আলবেমার্লের ভৃত্যদের নিয়ে গড়া দলের মধ্যে অনুষ্ঠিত একটি খেলাও উপভোগ করেন।

মধ্যযুগে ফুটবল যখন বিপজ্জনক খেলায় রূপ নেয় তখন রাজারা বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েন। কেননা ফুটবল খেলতো তরুণ ও যোদ্ধারা। যদি যুবকেরা ফুটবল খেলতে গিয়ে আহত হয়ে পড়ে তবে তাদের সেনাদলে যথেষ্ট সংখ্যক সৈন্য পাওয়া যাবে না। এ কারণে রাজন্যগণ ফুটবল খেলা বন্ধের পাঁয়তারা করতে লাগলেন। কিন্তু জনগণ তাতে ক্ষান্ত হলো না। বরং ক্রমে ফুটবলের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকল।

সপ্তদশ শতকের গোঁড়ার দিকে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদেরকে ফুটবল খেলার অনুমতি দেয়া হয়। ১৮৪৮ সালে অ্যাসোসিয়েশন ফুটবল বা সকারের গোড়াপত্তন হয়। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ জন ছাত্র আন্তঃস্কুল প্রতিযোগিতা ও স্কুলে পড়ে না এমন ফুটবল উৎসাহীদের জন্যে ফুটবল খেলার ব্যবস্থা করতে উদ্যোগী হয়। তারা প্রথম ফুটবলের একটি আইন প্রণয়ন করে। এই আইনে হাত ব্যবহার অনেক সীমিত করে দেয়া হয়। গোলপোস্ট তিনটি পোস্ট দ্বারা সীমাবদ্ধ করা হয়। আরো অনেক আইন এ সময়ে তৈরি হয়। ১৮৫০ সালে প্রথম ফুটবল ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয় ইংল্যান্ডের শেফিল্ডে। ১৮৬০ সালে রাগবি এবং সকারকে পৃথক পৃথক খেলা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। আলাদা খেলা হিসেবে এদের বিকাশ ঘটতে থাকে। তবে ১৮৭১ সালে খেলাটিতে হাত ব্যবহার নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয় এবং তার জের ধরে দুটি সংগঠনের সৃষ্টি হয়। হাতের ব্যবহারের পক্ষের লোকেরা গঠন করে রাগবি ইউনিয়ন এবং শুধুমাত্র পা দিয়ে খেলার পক্ষে লোকেরা এসোসিয়েশনের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে থাকে।

ধীরে ধীরে ফুটবলের জন্য নিয়ম-কানুনের প্রচলন হতে থাকে। রেকর্ড থেকে জানা যায়, সেই ১৬৩৩ সালে এবারদিনে অনুষ্ঠিত একটি ম্যাচে গোলরক্ষক এবং ম্যান টু ম্যান মার্কিংয়ের ব্যবস্থা ছিল। ১৭৭১ সালেই ফুটবলের ১৭টি নিয়ম চূড়ান্ত করা হয়। বর্তমানেও কিছুটা পরিবর্তিত হয়ে উক্ত ১৭টি নিয়ম বলবৎ রয়েছে। সম্ভবত এই নিয়ম অনুযায়ী খেলার কারণেই ফুটবল এতো জনপ্রিয়। বিশ্বের প্রথম ফুটবল ক্লাব হিসেবে এডিনবার্গের জন হোপ ফুটবল ক্লাব গঠিত হয় ১৮২৪ সালে। এরপর আরো ক্লাব গঠিত হতে থাকে। ফলে একটি অ্যাসোসিয়েশনের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হতে থাকে।

১৮৬৩ সালের ২৬ অক্টোবর ১১টি ফুটবল ক্লাব লন্ডনের হলবর্নের ফ্রি মেসনস ট্যার্ভানে এক বৈঠকে মিলিত হয় একটি ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন গঠন করার উদ্দেশ্যে। এটিই বিশ্বে প্রথম ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন। একারণে একে বলা হয় ‘দি ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন।’ এই সংগঠনটিই ফুটবল খেলার জন্য নিয়ম-কানুন চূড়ান্ত করে।

১৮৬৬ সালে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন ও শেফিল্ড ক্লাবের মধ্যে চুক্তি হওয়ার পর আরো কিছু নতুন আইন যুক্ত করা হয়। ১৮৬৯ সালে গোল কিক, ১৮৭২ সালে কর্নার কিক ও ১৮৭৪ সালে রেফারি নিযুক্ত করা হয়। ১৮৭২ সালে প্রথম আন্তর্জাতিক ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। গ্লাসগোয় ইংল্যান্ড প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। তবে তখনো স্কটল্যান্ডে কোনো ফুটবল মাঠ ছিল না। তাই একটি ক্রিকেট মাঠে ম্যাচটি হয়েছিল। প্রায় চার হাজার দর্শকের উপস্থিতিতে ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়। আর প্রথম আন্তমহাদেশীয় ফুটবল ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয় ১৮৮৬ সালে গ্রিনল্যান্ডে, ইংলিশ অভিযাত্রী জন ডেভিস ও তার ক্রুরা খেলেন গডথাবের স্থানীয় লোকদের বিরুদ্ধে।

অচিরেই খেলার সহজ নিয়মকানুন ও সাধারণ উপকরণে খেলতে পারার সুবিধা দেখে হাজার হাজার মানুষ ফুটবল খেলতে শুরু করে। ইংল্যান্ডে শিল্প বিপ্লব ঘটার সময়ে ফুটবলের ব্যাপক প্রসার ঘটে। সে সময়ে ইংল্যান্ডের অর্থনীতিতে ঘটতে থাকে যুগান্তকারী ঘটনা। কৃষির উপর নির্ভরশীলতা কমতে থাকে। আবিষ্কৃত হতে থাকে কয়লা ও লোহার নতুন নতুন ব্যবহার কৌশল। কৃষি থেকে শিল্পপ্রধান জাতিতে রূপান্তর এবং রেল যোগাযোগের সুবিধা গড়ে ওঠার ফলে একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে জগণের মধ্যে যাতায়াত বেড়ে যায়। এটাও ফুটবল উন্নয়নের একটি বড় কারণ। ব্রিটিশ বণিক, সৈনিক এবং ধর্মযাজকরা এক পর্যায়ে বিশ্বের চারপ্রান্তে ফুটবলকে ছড়িয়ে দিতে থাকেন। কয়েক বছরের মধ্যে ফুটবল একটি আন্তর্জাতিক খেলায় পরিণত হয়। আর এর কৃতিত্ব সেই ইংরেজদের, যারা যখন যেখানে গেছেন সেখানেই রোপণ করেছেন ফুটবলের বীজ।

ফুটবলের উৎস যেখানেই হোক না কেন, ইংল্যান্ডকে আধুনিক ফুটবলের জনক বলা যেতে পারে। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের বিস্তৃতির সাথে সাথে ফুটবলকেও সারাবিশ্বে ছড়িযে দেয় ইংরেজরা। ব্রিটিশ যোদ্ধা, নাবিক, বণিক, ধর্মযাজক সবাই ফুটবলের প্রসারে অবদান রাখেন। স্কটিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন গঠিত হয় ১৮৭৩ সালে। এর পরপরই প্রতিষ্ঠা লাভ করে ওয়েলস (১৮৭৬) ও আয়ারল্যান্ডের (১৮৮০) অ্যাসোসিয়েশন। তারপর একে একে ডেনমার্ক ও হল্যান্ড (১৮৮৯), আর্জেন্টিনা (১৮৯৩), বেলজিয়াম, চিলি ও সুইজারল্যান্ড (১৮৯৫), ইটালি (১৮৯৮), জার্মানি (১৯০০), কেস্লোভাকিয়া (১৯০১) এবং ব্রাজিল ও নরওয়েতে (১৯০২) গড়ে উঠে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন। ফুটবল যত দূর প্রান্তে ছড়াতে থাকে ততই অনুভূত হতে থাকে একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন গড়ে তোলার গুরুত্ব।ঊনবিংশ শতাব্দীর গোড়াতেই সারাবিশ্বে নাটকীয়ভাবে ফুটবল অত্যন্ত জনপ্রিয় খেলায় পরিণত হয়। বিভিন্ন দেশ ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা শুরু করে দেয়।

১৯০৪ সালের ২১ ফ্রান্সের প্যারিসে সাতটি ইউরোপীয়ান দেশের বৈঠকে ফেডারেশন ইন্টারন্যাশনাল দ্য ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (ফিফা) গঠিত হয়। যা ফুটবলের উন্নয়নকারী এবং নিয়ন্ত্রক। ফিফার তত্ত্বাবধানে ১৯৩০ সালে প্রথম বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজন করা হয় উরুগুয়েতে। প্রথম বিশ্বকাপ ফুটবলের আসর বসে। ১৩টি দেশ প্রথম বিশ্বকাপে অংশ নেয়। ফাইনালে উরুগুয়ে ৪-২ গোলে আর্জেন্টিনাকে পরাজিত করে প্রথম বিশ্বকাপ ট্রফি জয় করে।


আরো সংবাদ



premium cement
পতনের পুঁজিবাজার, মুনাফা তুলতে খারাপ শেয়ারে আগ্রহ বিনিয়োগকারীদের যুক্তরাষ্ট্রে বিমান দুর্ঘটনা : নিহত ৬৭, উদ্ধারকাজ-তদন্ত চলছে রাজধানী পরিবহনের ১২টি বাস আটক করল জাবি শিক্ষার্থীরা মুন্সীগঞ্জে বালু উত্তোলন নিয়ে দ্বন্দ্ব : গোলাগুলিতে নিহত ২ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার পর্দা নামছে আজ নীলফামারী আইনজীবী সমিতির নতুন সভাপতি ফারুক, সেক্রেটারি মাসুদ ফেনী জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটি অনুমোদন ক্যাম্প ছাড়ার হুমকি সাবিনাদের সিলেটে দাবি পূরণের আশ্বাসে পরিবহন ধর্মঘট স্থগিত সুইডেনে কোরআন পোড়ানো ব্যক্তিকে হত্যা, গ্রেফতার ৫ ক্ষতিকর উপাদান থাকায় ক্যান ফিরিয়ে নিলো কোকাকোলা

সকল