ড. ইউনূসের মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ হাইকোর্টের
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৫ জুলাই ২০২৪, ০২:১৭
শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সাথে আগামী এক বছরের মধ্যে এ মামলার বিচারকাজ সম্পন্ন করতে বলেছেন।
বুধবার বিচারপতি মো: নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ উভয় পক্ষের শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
আদেশের পর আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ড. ইউনূস আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করব। ড. ইউনূসের ভাগ্য এতটাই খারাপ, অবহেলিত যে তিন দিন শুনানি করে মামলাটিতে রুল পর্যন্ত ইস্যু না করে আজকে খারিজ করে দিয়েছেন।
অপর দিকে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, মামলা বাতিল চেয়ে ড. ইউনূসের আবেদন হাইকোর্ট সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন। আদালত বলেছেন, মামলাটি এক বছরের মধ্যে যেন শেষ করে দেয়া হয়। আদালত আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন যেহেতু অপরাধের প্রাথমিক সত্যতা আছে।
এর আগে আদালতে শুনানিতে ড. ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে বিভিন্ন যুক্তি উপস্থাপন করেন। তিনি এ মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ কেন বাতিল করা হবে না মর্মে রুল জারির আবেদন করে বলেন, একটি রুল ইস্যু হলে এখানে যেসব আইনগত প্রশ্ন উত্থাপন হয়েছে সে বিষয়ে শুনানি করে একটি সিদ্ধান্তে আসা যাবে। রুল ছাড়া এটা করা ঠিক হবে না। আমরা আইনগত বিষয়ে যুক্তি তুলে ধরেছি। এখানে অনেকগুলো আইনগত প্রশ্ন রয়েছে। ৪৩৭ কোটি টাকা ১৫৬ জন কর্মচারীকে দেয়া হয়েছে চেকের মাধ্যমে। যে টাকা তাদের দেয়া হয়েছে। আমার অধীনে নেই, সেখানে আমার দুর্নীতি হবে কী করে? ৫৬১ ধারায় আইনি বিষয় নিয়ে আমরা এসেছি। রুল জারি করার জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।
অপর দিকে রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ ও দুদকের পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ড. ইউনূসের আবেদন খারিজ করার পক্ষে বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরেন।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত (দুদক) মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে ড. ইউনূসের আবেদন খারিজ করে আদেশ দেন।
এ দিকে আগামী ৫ আগস্ট ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক সৈয়দ আরাফাত হোসেনের আদালতে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য রয়েছে।
এর আগে গত ১১ জুলাই এ মামলার শুনানি শেষে ২১ জুলাই আদেশের জন্য রাখেন হাইকোর্ট।
গত ১২ জুন ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করার আদেশ দেন আদালত। একই সাথে আগামী ১৫ জুলাই তাদের বিরুদ্ধে এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক সৈয়দ আরাফাত হোসেনের আদালত এ আদেশ দেন।
গ্রামীণ টেলিকমের কর্মীদের লভ্যাংশের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা এই মামলায় গত ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ আছাদুজ্জামানের আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। গত ২৯ জানুয়ারি দুদকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কমিশন বৈঠকে ড. ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন দেয়া হয়।
চার্জশিটভুক্ত ১৪ আসামি হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস, ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল ইসলাম, পরিচালক ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল হাসান, পরিচালক পারভীন মাহমুদ, নাজনীন সুলতানা, মো: শাহজাহান, নূরজাহান বেগম ও পরিচালক এস এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী, অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী, অ্যাডভোকেট জাফরুল হাসান শরীফ, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো: কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান, শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের দফতর সম্পাদক কামরুল হাসান ও প্রতিনিধি মো: মাইনুল ইসলাম।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা