১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
আবেদ আলীর জামিন নামঞ্জুর

বেরিয়ে আসছে পিএসসির আরো একাধিক ব্যক্তির নাম

বিসিএস প্রশ্নফাঁস
-

বিসিএস পরীক্ষাসহ গত ১২ বছরে ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী জীবনসহ চার আসামির জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালত এই আদেশ দেন।
এ দিকে প্রশ্নফাঁস চক্রে কেবল ছয়জনই নন, জড়িত হিসেবে পিএসসির আরো পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম সামনে এসেছে। যারা বিভিন্ন সময় ক্যাডার ও নন-ক্যাডার পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত ছিলেন। তাদের মধ্যে মধ্যমপর্যায়ের কর্মকর্তা আছেন। আবার অফিস সহায়ক ও গাড়িচালকও আছেন।
গতকাল জামিন নামঞ্জুর হওয়া অপর তিন আসামি হলেন- পিএসসির অফিস সহায়ক খলিলুর রহমান, ব্যবসায়ী আবু সোলায়মান মো: সোহেল ও লিটন সরকার।
এর আগে গত ৯ জুলাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার জুয়েল চাকমা ১৭ আসামিকে আদালতে হাজির করেন। এর মধ্যে পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী জীবন, অফিস সহায়ক খলিলুর রহমান, অফিস সহায়ক (ডিসপাস) সাজেদুল ইসলাম, ব্যবসায়ী আবু সোলায়মান মো: সোহেল, ব্যবসায়ী সহোদর সাখাওয়াত হোসেন ও সাইম হোসেন এবং লিটন সরকারের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী রেকর্ড করার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। আর ১০ আসামিকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করা হয়।
পরে আবু সোলায়মান মো: সোহেল স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অপর ছয় আসামিকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী রেকর্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়। আর ১০ আসামির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদেরও কারাগারে পাঠানো হয়। এরা হলেন পিএসসির উপপরিচালক মো: আবু জাফর ও মো: জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পরিচালক মো: আলমগীর কবির, সাবেক সেনা সদস্য নোমান সিদ্দিকী, অডিটর প্রিয়নাথ রায়, ব্যবসায়ী মো: জাহিদুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী শাহাদাত হোসেন, ঢাকার ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসে কর্মরত মো: মামুনুর রশীদ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মেডিক্যাল টেকনিশিয়ান মো: নিয়ামুন হাসান।
এ দিকে রেলওয়ের একটি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) ছয় কর্মকর্তা-কর্মচারী গ্রেফতার হয়ে এখন কারাগারে। কেবল এই ছয়জনই নন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জড়িত হিসেবে পিএসসির আরো পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম সামনে এসেছে। যারা বিভিন্ন সময় ক্যাডার ও নন-ক্যাডার পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত ছিলেন। তাদের মধ্যে মধ্যম পর্যায়ের কর্মকর্তা আছেন। আবার অফিস সহায়ক ও গাড়িচালকও আছেন।
এই পাঁচজন হলেন পিএসসির পরিচালক এনামুল বশির, সহকারী পরিচালক আবদুর রউফ, সহকারী পরিচালক নিখিল চন্দ্র রায়, অফিস সহায়ক ডন কুমার ও গাড়িচালক আতাউর রহমান।
পিএসসি সূত্র থেকে জানা গেছে, প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে এই পাঁচজনকেই একসময় চাকরিচ্যুত করেছিল পিএসসি। পরে এনামুল বশির ও আবদুর রউফ প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল ও আদালতের মাধ্যমে চাকরি ফিরে পান। অফিস সহায়ক ডন কুমার ও গাড়িচালক আতাউর রহমান চাকরিচ্যুত হয়েছেন দুই বছর আগে। সহকারী পরিচালক নিখিল চন্দ্র রায় গত বছর অবসরে গেছেন। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কয়েকজনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছিল। পরে আইনি প্রক্রিয়ায় তারা চাকরি ফিরে পান। অবসরে গিয়েও অপকর্মে জড়িত কেউ কেউ।
সূত্র জানায়, পিএসসির পরিচালক এনামুল বশিরের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালে বিআরটিএর মোটরযান পরিদর্শক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগ ওঠে। এই অভিযোগে তাকে ২০১১ সালে চাকরিচ্যুত করা হয়। ওই বছরই তিনি প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল ও আদালতে যান। ২০২১ সালে তিনি চাকরি ফিরে পান। গত বছরের মার্চে তিনি অবসরে যান।
আবদুর রউফের বিরুদ্ধে প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে ২০১০ সালে। তখন তার বিরুদ্ধে মামলা হয়, তাকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। ওই ঘটনায় পিএসসি তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের সত্যতা পাওয়ায় ২০১৩ সালে আবদুর রউফকে চাকরিচ্যুত করা হয়। পরে তিনি প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে যান। আইনিপ্রক্রিয়া শেষে গত বছর চাকরি ফিরে পান। এরপর আবদুর রউফ প্রশাসনিক কর্মকর্তা থেকে পদোন্নতি পেয়ে সহকারী পরিচালক হন।
ডন কুমার ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি পিএসসিতে অফিস সহায়ক পদে যোগ দিয়েই প্রশ্নপত্র ফাঁসেও জড়িয়ে পড়েন। পিএসসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চাকরি দেয়ার কথা বলে পটুয়াখালী সদর উপজেলার ইমরুল ইসলামের কাছ থেকে ছয় লাখ টাকা নেন ডন কুমার। যার কারণে ২০২২ সালেই তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। পরে তিনি প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। তার মামলা এখনো চলমান।
পিএসসির গাড়িচালক আতাউর রহমানের বিরুদ্ধেও প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ রয়েছে। তিনি চাকরি পাইয়ে দেয়ার কথা বলে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার সলিল বরণ দাসের কাছ থেকে ১৪ লাখ টাকা নেন। এ ঘটনায় ২০২২ সালে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
সহকারী পরিচালক নিখিল চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধেও প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ রয়েছে। তিনি গত বছর অবসরে যান। তবে গত শুক্রবার রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী পদে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত হিসেবে তার নাম আসে। তিনি এখন পলাতক।
সূত্র বলছে, পিএসসির ভেতরেই প্রশ্নপত্র ফাঁসের একটি চক্র কাজ করছে। এর মধ্যে কেউ ধরা পড়েছেন, কেউ এখনো আড়ালে রয়ে গেছেন।


আরো সংবাদ



premium cement
কুয়াকাটায় সাবেক মেয়রের দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিএনপির সংবাদ সম্মেলন লক্ষ্মীপুরে যুবলীগের ২ নেতা গ্রেফতার বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টিকে নিবন্ধন দিতে হাইকোর্টের নির্দেশ নাতনিকে অপহরণে বাধা দেয়ায় নানিকে হত্যার অভিযোগ, আহত ২ ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে চীনা প্রেসিডেন্টকে আমন্ত্রণ জয়কে অপহরণ ও হত্যার ষড়যন্ত্রের মামলায় দণ্ডিত বিএনপি নেতা মিজানুরের জামিন সাবেক ৫ এমপির স্ত্রী-সন্তানসহ বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০ পরোয়ানাভুক্ত আসামিদের গ্রেফতারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা জানতে চায় ট্রাইব্যুনাল সুইজারল্যান্ডে থাকা সিরিয়ার হিমায়িত অর্থের পরিমাণ জানালো সুইস সরকার ইসরাইলি হামলায় ২১ জন নিহত : বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা

সকল