১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

রাখাইনে থেমে নেই রোহিঙ্গা নির্যাতন

-

মিয়ানমারের রাখাইনে সামরিক বাহিনী ও একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে সঙ্ঘাত জোরালো হয়েছে। ফলে রোহিঙ্গা নির্যাতন এখনো অব্যাহত রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ব্রিটেনভিত্তিক একটি মানবাধিকার গ্রুপ বিশ্বকে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। আলজাজিরা।
রাখাইনের মংডুতে অবস্থিত জাতিসঙ্ঘের খাদ্য গুদামে আগুন ও লুটপাটের ঘটনাও ঘটেছে। এরই মধ্যে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে জাতিসঙ্ঘের সংস্থাটি। এর পরই রোহিঙ্গা গণহত্যার বিষয়ে উদ্বেগ জানালো বার্মিজ রোহিঙ্গা অরগানাইজেশন ইউকে (বিআরওইউকে)।
সম্প্রতি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সামরিক বাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে সঙ্ঘাত তীব্র হয়েছে। রোহিঙ্গা সম্প্রদায়কে মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে মনে করে না সামরিক বাহিনী ও অধিকাংশ বৌদ্ধ বাসিন্দারা। ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের ওপর প্রাণঘাতী হামলা শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এরপর প্রায় আট লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে চালানো গণহত্যার বিষয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। বিআরওইউকে তাদের নতুন রিনপোর্টে জানিয়েছে, জান্তা বাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে সঙ্ঘাত শুরু হওয়ায় নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন রাখাইনে অবশিষ্ট থাকা ছয় লাখ রোহিঙ্গা।
রোহিঙ্গাদের ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে সেনাবাহিনী। খাদ্য, পানি, ওষুধ ও এমনকি নিরাপদ আশ্রয় থেকেও বঞ্চিত করা হচ্ছে রোহিঙ্গাদের। তা ছাড়া রোহিঙ্গাদের বাধ্যতামূলক নিযুক্ত করে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে যুদ্ধে পাঠানো হচ্ছে। বিআরওইউকে তাদের প্রতিবেদনে আরও জানিয়েছে, মূলত সামরিক বাহিনী ও আরাকান আর্মি উভয়ই রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ করছে।

ইরান থেকে গোপনে অস্ত্র সরবরাহ : এ দিকে দ্য ইরাবতী জানায়, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সম্পর্ক বাড়ানোর প্রেক্ষাপটে মিয়ানমার জান্তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী থান সোয়ে তেহরানে ১৯তম এশিয়া কোঅপারেশন ডায়ালগের (এসিডি) মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দিয়েছেন। সেখানে তিনি ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আলি বাকেরি কানির সাথে আলাদা বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা করেছেন। এই বৈঠকের পর মিয়ানমার জান্তাকে ইরান অস্ত্র সরবরাহ করতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সিরিয়া ও ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধ, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনসহ বিভিন্ন সংঘাতময় অঞ্চলে অস্ত্র বিক্রির অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে ইরান। ধারণা করা হয়, ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে ইরান মিয়ানমারের সামরিক জান্তাকে সরবরাহ করে আসছে।
এশিয়া টাইমস জানিয়েছে, ২০২২ সালের জানুয়ারিতে একটি ইরানি প্রতিনিধিদল মিয়ানমার সফর করেছিল; যা সম্ভবত ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের পর দ্বিতীয় বা তৃতীয় ইরানি সফর ছিল। ওই সময় ইরানের কার্গো এয়ারলাইন কেশম ফার্স এয়ার পরিচালিত একটি বোয়িং ৭৪৭ কার্গো প্লেন জানুয়ারি থেকে এপ্রিল ২০২২-এর মধ্যে তিনবার নেইপিদো ও ইয়াঙ্গুনে অবতরণ করেছিল।

মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ২০১৯ সালে কেশম ফার্স এয়ারের বিরুদ্ধে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে তেহরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে অস্ত্র পরিবহনের অভিযোগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। মার্কিন ট্রেজারির অফিস অব ফরেন অ্যাসেটস কন্ট্রোল কেশম ফার্স এয়ারের দু’টি বিমানকে সন্দেহজনক হিসেবে উল্লেখ করেছে, যার মধ্যে একটি, যার নিবন্ধন ‘ইপি-এফএএ’ ছিল। মিয়ানমারে যাওয়া বিমানটি নিষেধাজ্ঞায় থাকা উড়োজাহাজ বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এই ফ্লাইটগুলোর একটি সামরিক ড্রোন ও ইঞ্জিন ধারণ করে ২১ বাক্সের একটি চালান সরবরাহ করেছিল।
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী থেকে পক্ষত্যাগকারীরা নিশ্চিত করেছে যে, সেনাবাহিনী ইরানি ড্রোন ইঞ্জিন ব্যবহার করেছে; যা মান্দালয় অঞ্চলের মাইকটিলা টাউনশিপের মাইকটিলা বিমানঘাঁটিতে স্থাপন করা হয়েছিল।
তেহরান থেকে বিমানের আগমন মিয়ানমার ও তেহরানের মধ্যকার গোপন সামরিক সহযোগিতা নিয়ে গুঞ্জন বাড়িয়েছে। এ অভিযোগ যদি নিশ্চিত হয় তা হলে পর্যবেক্ষকদের মতে, এটি মিয়ানমারের পরিস্থিতি আরো জটিল করে তুলবে এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতায় বিঘœ ঘটাবে। তবে এখন জান্তা ও তেহরান প্রকাশ্যেই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করতে চাইছে। পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞার মুখে রাশিয়া, চীন, ভারত, বেলারুশ ও ইরানের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করেছে মিয়ানমার জান্তা। তারা উত্তর কোরিয়ার সাথেও কূটনৈতিক সম্পর্ক আবার চালু করেছে।

সোমবারের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে থান সোয়ে মিয়ানমারে শান্তি, উন্নয়ন ও গণতন্ত্র নিশ্চিত করার জন্য জান্তার প্রচেষ্টার ব্যাখ্যা দেন বলে জানিয়েছে দেশটির সরকারি সংবাদমাধ্যম। তিনি বর্তমান এসিডি চেয়ার ইরানকে তাদের নেতৃত্বের জন্য প্রশংসা করেছেন এবং থাইল্যান্ডের আসন্ন চেয়ার পদ গ্রহণকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি গত মাসে একটি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত ইরানি প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ানের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। জান্তা মিডিয়া জানিয়েছে, থাই পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিস সাংগিয়ামপংসা, নেপালি পররাষ্ট্রমন্ত্রী নারায়ণ কাজী শ্রেষ্ঠ প্রকাশ এবং কাতারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখির সাথে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বৃদ্ধির বিষয়ে এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রগুলোতে এসিডির মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেন থান সোয়ে। থাইল্যান্ডের উদ্যোগে ২০০২ সালে এসিডি গঠিত হয়। মিয়ানমার এই সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। তেহরানে এসিডির মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে ৩১টি সদস্য দেশ এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement
আমাদের দু’টি বিজয় দিবস বীর মুক্তিযোদ্ধারা চিরদিন স্মরণীয় হয়ে থাকবে : অ্যাডভোকেট জুবায়ের ভারতীয় চলচ্চিত্রে বাংলাদেশকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন! স্বাধীনতা যুদ্ধের সঠিক, প্রকৃত ইতিহাস লেখা হয়নি: বদরুদ্দীন উমর রাজশাহীতে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ২ কর্মী গ্রেফতার জামায়াত নেতা ড. তাহের সম্পর্কে সাংবাদিক ইলিয়াসের মন্তব্যের প্রতিবাদ গাজীপুরে নতুন ট্রেন ও অসমাপ্ত বিআরটি লেনে বিআরটি বাস সার্ভিসের উদ্বোধন বেনজীর ও মতিউরের বিরুদ্ধে দুদকের ৬ মামলা ছিনতাই রোধে রাজধানীতে শেষ রাতে পুলিশি টহল বাড়ানোর নির্দেশ পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্টের সাথে বিএনপি নেতাদের সৌজন্য সাক্ষাৎ জামায়াতের একজন নেতাও মানবতাবিরোধী অপরাধ করেনি: ড. মাসুদ

সকল