১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা

শরীয়তপুরে সংঘর্ষ : গজারিয়ার বাড়িঘরে হামলা

-


শরীয়তপুরের জাজিরায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদের পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকদের বাড়িঘরে বিজয়ী প্রার্থীর সমর্থকরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শরীয়তপুর প্রতিনিধি জানান, জাজিরা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রকাশ্যে ভোট দেয়ার ভিডিওধারণ করতে যাওয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মুহাম্মদ ইদ্রিস ফরাজির সমর্থকদের হামলায় অপর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আমিনুল ইসলাম রতন, স্থানীয় ৬ সাংবাদিকসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আহত সাংবাদিকদের জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়, আহত সাংবাদিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে জাজিরা উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ৬৫টি ভোটকেন্দ্রের ৪৬২১টি বুথের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মোট পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ইদ্রিস ফরাজী। বেলা ১১টার দিকে উপজেলার সেনেরচর ফরাজী দারুস সুন্নাহ নুরানি হাফিজিয়া কওমিয়া মাদরাসা কেন্দ্রে মোটরসাইকেল প্রতীকের সমর্থকরা প্রকাশ্যে ভোট দিতে চাপ বাধ্য করছিলেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। তাৎক্ষণিক কর্মরত সাংবাদিকরা সেই চিত্র ধারণ করতে চাইলেই অর্ধশতাধিক মোটরসাইকেল প্রার্থীর সমর্থকরা সাংবাদিকসহ উপস্থিত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আমিনুল ইসলাম রতনের ওপর লাঠিসোটা দিয়ে হামলা চালায়। এ সময় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আমিনুল ইসলাম রতন, দৈনিক সংবাদের জাজিরা প্রতিনিধি পলাশ খান, বার্তা বাজারের প্রতিনিধি আশিকুর রহমান হৃদয়, যায়যায়দিনের জাজিরা প্রতিনিধি ইমরান হোসাইন, দৈনিক জবাবদিহির জাজিরা প্রতিনিধি সুজন মাহমুদ, বাংলাদেশ সমাচারের রুহুল আমিন ও কালবেলার জাজিরা প্রতিনিধি আব্দুর রহিমসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে চারজনকে গুরুতর অবস্থায় জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

গজারিয়ায় পরাজিত প্রার্থীর পাঁচ সমর্থকের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর
গজারিয়া ( মুন্সীগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় পরাজিত প্রার্থীর পাঁচ সমর্থকের বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ, পুলিশের উপস্থিতিতে তাদের বাড়িঘরে হামলা হয়েছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, গজারিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনসুর আহমেদ খান জিন্নাহ বিজয়ী এবং আমিরুল ইসলাম পরাজিত হন। গতকাল মনসুর আহমেদ খান জিন্নাহর আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব বুঝে নেয়ার আগের দিন গত মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের পুরাতন চরচাষি গ্রামে পরাজিত প্রার্থী আমিরুল ইসলামের পাঁচ সমর্থকের বাড়িঘরে হামলা হয়। এ সময় আমিরুল ইসলাম সমর্থক আব্দুল মতিনের দু’টি বসতঘর, ফিরোজের একটি বসতঘর ও একটি দোকান, মজিবুর রহমানের একটি বসতঘর ও সোলায়মান বেপারীর একটি বসতঘরে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়। এই ঘটনায় ৮ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর।
বিষয়টি সম্পর্কে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আমিরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি অবগত রয়েছি। তাৎক্ষণিকভাবে আমার নেতা কর্মীরা আমাকে জানিয়েছে। আমি পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছি।

এ বিষয়ে বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থী মনসুর আহমেদ খান জিন্নাহর বক্তব্য জানতে একাধিকবার তার মোবাইলে কল করা হলেও কথা বলা যায়নি।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো: রাজিব খান বলেন, আমরা যতদূর জানি ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কেউ থানাতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ৮ মে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় অনুষ্ঠিত হয় নির্বাচন। নির্বাচনে কাপপিরিচ প্রতীক নিয়ে মনসুর আহমেদ খান জিন্নাহ বিজয়ী এবং আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে আমিরুল ইসলাম পরাজিত হন।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement